ভাইবোনের মধ্যে কি যৌন সম্পর্ক ঘটতে পারে? এই প্রশ্ন করেই চাকরি খোয়ালেন পাকিস্তানের এক অধ্যাপক। ঘটনায় সরব নেটিজেনরাও। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ইঞ্জিনিয়ারিং-এর স্নাতক স্তরের এক ক্লাসে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা নিতে গিয়ে উলটে বিপাকে পড়লেন এক অধ্যাপক। একটি অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে তার ভিত্তিতে পড়ুয়াদের নিজস্ব মতামত জানাতে বলেছিলেন তিনি। এদিকে ওই অনুচ্ছেদটিতে দুজন নারী পুরুষের যৌনতার কথা বলা হয়েছিল। সম্পর্কে যারা দুই ভাই বোন। আর এই বিষয়টি নিয়েই কর্তৃপক্ষের কোপে পড়েছেন ওই অধ্যাপক। সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত হয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ফের নেটিজেনদের একাংশের তোপের মুখে পড়লেন ওই অধ্যাপক।
আরও শুনুন: বাঁচিয়েছিলেন ভূমিকম্প থেকে, উদ্ধারকারীকে ছাড়তে নারাজ ‘কৃতজ্ঞ’ বিড়াল
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
জানা গিয়েছে, ওই অধ্যাপক ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক। সম্প্রতি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর স্নাতক স্তরে ইংরেজি বোধ পরীক্ষণের একটি ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি। বোধ পরীক্ষণে যেমন কোনও একটি অনুচ্ছেদ তুলে সেখান থেকে প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের ভাষাজ্ঞান ও সেই ভাষায় নিজস্ব মত প্রকাশের ক্ষমতা যাচাই করে নেওয়া হয়, তেমনটাই করেছিলেন ওই অধ্যাপক। ফ্রান্সের দুই ভাইবোনের কাহিনি নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ প্রশ্নপত্রে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, গরমের ছুটি কাটাতে সমুদ্রসৈকতে গিয়েছিল ওই দুই ভাইবোন। এক রাতে সেখানেই একটি কেবিনের মধ্যে থাকতে হয় তাদের। আর সেদিন অ্যাডভেঞ্চারের লোভেই যৌনতায় লিপ্ত হয়েছিল দুজনে। সেই অভিজ্ঞতা ভাল লাগলেও তারা সিদ্ধান্ত নেয়, আর কখনোই এমনটা করবে না। এরপরে ওই অধ্যাপক প্রশ্ন করেছিলেন, এমন কাজ করে কি তারা ঠিক করেছে? এ বিষয়ে পড়ুয়াদের কী মতামত, তা জানিয়ে ৩০০ শব্দে একটি নিবন্ধ লেখার নির্দেশ দেন তিনি।
কিন্তু ওই প্রশ্নের জেরেই বিপত্তি ঘনিয়ে ওঠে। পাকিস্তান এমনিতেই যথেষ্ট রক্ষণশীল দেশ। সেখানে যৌনতার এমন একটি দিক নিয়ে আলোচনা করতে চাওয়াকে ভাল চোখে দেখেননি কর্তৃপক্ষ। আর তার জেরেই ওই অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর কোনও দিনই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনোভাবে ঢুকতে পারবেন না তিনি, এমনটাই নির্দেশ কর্তৃপক্ষের। তবে তাতেও ঘটনার রেশ কাটেনি। এই ইস্যুতে সে দেশের খোদ শিক্ষামন্ত্রক থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে। সম্প্রতি কোনও সূত্র থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রকাশ পায় ওই প্রশ্নপত্রটি। আর সেখানে শুধু ওই অধ্যাপককে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়কেও একহাত নিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ।
আরও শুনুন: মৃত ছেলের স্বপ্ন পূরণে গ্রামের স্কুলে ১ লক্ষ টাকা দান, নজির দিনমজুরের
যদিও প্রশ্নে এই বিষয়টিকে ঠিক কিংবা ভুল বলে কোনও মতামত চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। বরং পড়ুয়াদের মতামত জানতেই চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই মত প্রকাশের বদলে এই ইস্যুতে যেভাবে জলঘোলা হল, তা আরও একবার পাকিস্তানের রক্ষণশীল চেহারাকে সামনে এনে দিল বলেই মনে করছেন কেউ কেউ।