একই বাড়ির দুই প্রান্ত দুই ভিন্ন রাজ্যে। বাড়ির ঠিক মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে সীমান্তরেখা। যদিও তাতে কোনও সমস্যা নেই মালিকের। তিনি নিশ্চিন্তে দুই রাজ্যের নাগরিক হওয়ার সুবিধা ভোগ করেন। ভারতের কোন দুই রাজ্যে রয়েছে ওই বাড়ির দুই প্রান্ত? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাড়ির মাঝ বরাবর লম্বা চকের দাগ। আসলে তা সীমান্তরেখা। যা বুঝিয়ে দিচ্ছে, এই রেখার দু-দিকে দুটো আলাদা রাজ্য। একদিকে তেলেঙ্গানা, আর অন্যদিকে মহারাষ্ট্র। ঠিক তার মাঝখানে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে একখানা বাড়ি। অর্থাৎ একটা বাড়িরই অবস্থান দুই আলাদা রাজ্যে। অবাক করার মতো হলেও এ ঘটনা সত্যি।
আরও শুনুন: বাবা অকালে প্রয়াত, ২৫ বছর পর মায়ের ফের বিয়ে দিলেন তরুণী
আয়তনে বড় রাজ্যকে ভেঙে ছোট দুই প্রদেশে ভাগ করার ঘটনা আমাদের দেশে নতুন নয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে কিংবা প্রশাসনিক সুবিধার জন্য অনেক সময়ই তা করা হয়। সেক্ষেত্রে নতুন রাজ্যটির সীমানা করতে গেলে নানান সমস্যাতেও পড়তে হয় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। বিশেষত দুই রাজ্যে একই সরকার না হলে সীমান্ত নির্ধারণ করতে গিয়ে বেশ জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে অঞ্চল বরাবর সীমান্তরেখা এগোচ্ছে, সেখানে কারও বাড়ি বা জমি রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে বসবাসের জন্য যে কোনও একটি রাজ্যকেই বেছে নিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যতিক্রম। চন্দ্রপুরের মহারাজগড় গ্রামের বাসিন্দা উত্তম পাওয়ার-এর বাড়ি কোনও একটি রাজ্যে পড়ছে না। দুই রাজ্যের সীমানাই ছুঁয়ে আছে তাঁর বাড়ি। ১৯৬৯ সালে এক সমীক্ষার পর যখন তাঁদের এ কথা জানানো হয়, সকলেই অবাক হয়ে যান। যদিও এ নিয়ে তাঁদের কোনও দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। ফলত তাঁরা আপত্তিও জানাননি। দুই রাজ্যের মাঝখানে পড়েও তাঁরা দিব্যি আছেন।
আরও শুনুন: হিন্দু স্ত্রীর জন্য নিজেই ধর্মান্তরিত হলেন মুসলিম ব্যক্তি, নাম হল কৃষ্ণ সনাতনী
বাড়ির মালিক বলছেন, বাড়ির অবস্থান দুটি ভিন্ন রাজ্যে হওয়ার দরুন দু-রাজ্যেরই সুযোগসুবিধা ভোগ করতে পারবেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বাড়িতে ১২-১৪ জন থাকেন। আট কামরার বাড়ির চার কামরা মহারাষ্ট্রে, বাকি চার তেলেঙ্গানায়। এই নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মতবিরোধ থাকতে পারে, তবে এই বাড়ির বর্তমান বাসিন্দাদের কোনও সমস্যাই নেই। বরং বাড়িতে অতিথি এলে সদস্যরা মজা করে বলেন, তাঁদের বসার ঘর মহারাষ্ট্রে আর রান্নাঘর তেলেঙ্গানায়! যদিও এর জন্য দুই রাজ্যেকেই কর দিতে হয়। তবু এ বিষয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁদের। দুই রাজ্যে জুড়ে থাকা এক বাড়িতে যে তাঁরা ভালই আছেন, তা তাঁদের কথাতেই স্পষ্ট।