স্রেফ ধরতে হবে একটা ইঁদুর। তাহলেই মিলবে ৪১ হাজার টাকা। মরা হোক বা জ্যান্ত, ইঁদুর ধরতে পারলেই কাজ শেষ। হাসি মুখে টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন। অন্তত হিসাব তো তেমনই বলছে। কিন্তু কোথায় গেলে মিলবে এই ইঁদুর ধরার কাজ? আসুন শুনে নিই।
কথায় আছে, মরা হাতির দাম লাখ টাকা। কিন্তু আকারে তার থেকে শতগুণ ছোট ইঁদুরও কিছু কম যায় না। মরা হোক বা জ্যান্ত, ইঁদুর ধরেও লাখ লাখ টাকা রোজগার করা সম্ভব। গল্প নয়, বাস্তবেই এমন সুযোগ করে দিচ্ছে লক্ষ্ণৌ-স্টেশন।
আরও শুনুন: চাঁদে না গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন না রাহুল! কংগ্রেস নেতাকে কটাক্ষ হিমন্ত বিশ্বশর্মার
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। একটা ইঁদুর ধরে দিলেই ৪১ হাজার টাকা পেতে পারেন যে কেউ। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এমনই অদ্ভুত কিছু তথ্য। যা দেখার পর চক্ষু চড়কগাছ নেটিজেনদের। ষ্টেশন পরিষ্কার রাখতে প্রতি বছর বেশ মোটা টাকা খরচ করে ভারতীয় রেল। সম্প্রতি সেই হিসাব জানতে চেয়েই আরটিআই করেছিলেন এক ব্যক্তি। যদিও দেশের সমস্ত রেল স্টেশন সম্পর্কে তিনি জানতে চাননি। স্রেফ উত্তর ভারতের বিখ্যাত কিছু ষ্টেশনে সাফাইয়ের খাতে কত খরচ হয় তা জানতেই পদক্ষেপ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর জিজ্ঞাসার তালিকায় ছিল, দিল্লি, আম্বালা, লক্ষ্ণৌ, ফিরোজপুর এবং মোরাদাবাদ স্টেশনের নাম। উত্তর ভারতে এই স্টেশনগুলোই সর্বাধিক জনপ্রিয়। তাই এগুলি পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয় রেলের তরফেও। শুধু পরিষ্কার রাখাই নয়, স্টেশন চত্বরে পোকামাকড় কিংবা ইঁদুরের উপদ্রব কমাতেও ভালো টাকাই খরচ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরিমাণ যে এতটা বেশি তা কেউই বোধহয় ভাবতে পারেননি। ওই ব্যক্তির আরটিআই-য়ের উত্তরে সেই তথ্যই জানা গিয়েছে। যদিও তালিকায় উল্লিখিত সমস্ত স্টেশনের তরফে খোলাখুলি উত্তর দেওয়া হয়নি। ব্যতিক্রম লক্ষ্ণৌ এবং আম্বালা। জানা গিয়েছে, এই দুই স্টেশনেই ইঁদুর ধরার কাজে খরচ হয়েছে লাখ লাখ টাকা। লক্ষ্ণৌ ষ্টেশনে এই কাজের দরুন দু বছরে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। তবে এতদিনে ধরা পড়েছে মাত্র ১৬৮ খানা ইঁদুর। হিসাব করলে দাঁড়াচ্ছে, একটা ইঁদুর ধরতে সরকারের খরচ হয়েছে ৪১ হাজার টাকা। যা রীতিমতো অবাক করেছে সকলকেই। এদিকে আম্বালা স্টেশনে ইঁদুর ধরার কাজে খরচ হয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ। সেখানে অবশ্য ঠিক কটা ইঁদুর ধরা পড়েছে তার উল্লেখ নেই।
আরও শুনুন: বাথরুমের গোপন অভ্যাসেই মিলবে ব্যক্তিত্বের পরিচয়, জানেন কীভাবে?
স্বাভাবিক ভাবেই এই তথ্য হইচই ফেলে দিয়েছে নেটদুনিয়ায়। সেইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে বাকি স্টেশনগুলোর পরিসংখ্যান ঠিক কী? কিন্তু রেলের তরফে উত্তর ভারতের অন্যান্য স্টেশনের সাফাই অভিযানের খরচ সরাসরি জানানো হয়নি। তাঁদের দাবি, ময়মা ফেলা কিংবা ইঁদুর ধরার কাজে যা খরচ হয়েছে স্রেফ সেই হিসাব রয়েছে। ঠিক কতটা পরিমানা ময়লা ফেলা হয়েছে, কিংবা কতগুলো ইঁদুর ধরা পড়েছে তার কোনও হিসাব নেই। যদিও টাকার অঙ্ক প্রকাশ করতেও নারাজ দিল্লি কিংবা ফিরোজপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে লক্ষ্ণৌ স্টেশনে এই ইঁদুর ধরার কাজ কে করেছে সেই তথ্যও জানতে চেয়েছিলেন অনেকেই। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই কাজের দায়িত্ব ছিল গোমতি নগরের এক সংস্থার। তারাই লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে ইঁদুর ধরেছেন। সবমিলিয়ে এই ঘটনার জেরে বেশ চর্চায় উঠে এসেছে উত্তর ভারতের জনপ্রিয় স্টেশনটি। অনেকেই মনে করছেন, দেশের এইসব স্টেশনে ইঁদুর খোঁজার কাজ পেলেই, জীবন বর্তে যাবে। তাই কে কেমন ইঁদুর ধরতে পারে, নেটদুনিয়ায় সেই নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন খোরাক।