চার বছর আগে মৃত্যু হয়েছে। অথচ এখনও একইরকম রয়েছে সন্ন্যাসিনীর দেহ। এতদিন কবরে থাকা সত্ত্বেও এতটুকু পচন ধরেনি মৃতদেহে। ঘটনার জেরে অবাক সকলেই। দলে দলে মৃতদেহ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। কোথায় রয়েছে সেই সন্ন্যাসিনীর দেহ? আসুন শুনে নিই।
সৎকারের দীর্ঘ চার বছর পরও একইরকম রয়েছে এক সন্ন্যাসিনীর মৃতদেহ। কবর থেকে সেই দেহ তোলার পর রীতিমতো অবাক সকলেই। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এর নেপথ্যে অবশ্যই কোনও অলৌকিক শক্তি রয়েছে। তাই সন্ন্যাসিনীর মৃতদেহ দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।
আরও শুনুন: ভূতের সঙ্গে দেখা করার নেশা, অদ্ভুত খেলা খেলতে গিয়ে বিপাকে ১১ পড়ুয়া
ধর্মীয় বিশ্বাস ভেদে মৃতদেহ সৎকারের পদ্ধতি আলাদা হয়। কোথাও আগুনে পোড়ানোর নিয়ম, তো কোথাও মাটির নীচে কবর দেওয়ার। তবে সবক্ষেত্রেই উদ্দেশ্য এক, দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হবে। এই বিশ্বাসেই প্রিয়জনের মৃতদেহের অন্তিম সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। বিজ্ঞানের নিয়মে নির্দিষ্ট সময়ের পর তা সত্যিই প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়। আগুনে পুড়লে অল্পসময়ের মধ্যেই, আর কবর দেওয়া হলে কয়েকমাস পর। কিন্তু সৎকারের পরও একইরকম অবস্থায় মৃতদেহ থাকা ‘প্রায়’ অসম্ভব। এই ‘প্রায়’ শব্দটা ব্যবহারে কারণ সাম্প্রতিক এক ঘটনা। বিজ্ঞানের যাবতীয় যুক্তিকে ভুল প্রমাণ করেছে এই ‘মির্যাকল’।
আরও শুনুন: বোন মুসলিম ভাই হিন্দু, মায়ের শেষকৃত্যের রীতি নিয়েই বাধল জোর বিবাদ
ঘটনাটি মার্কিন মুলুকের। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি শহরে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এই অদ্ভুত কাণ্ড। সেখানকার এক জনপ্রিয় মঠে ঘটেছে এই অদ্ভুত কাণ্ড। বছর চারেক আগে সেই মঠের প্রধান সন্ন্যাসিনীর মৃত্যু হয়। সেই সময় মঠের অবস্থা তেমন উন্নত ছিল না। তাই সাধারণ ভাবেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়। চার্চ লাগোয়া কবরস্থানেই এতদিন চিরঘুমে শায়িত ছিলেন সেই সন্ন্যাসিনী। কিছুদিন আগে ঠিক হয়, কবর থেকে ওই পুণ্যাত্মার মৃতদেহ তুলে এনে চার্চের চ্যাপেলের নিচে রাখা হবে। মঠ কর্তৃপক্ষ মনে করেছিল, সামান্য কিছু হাড়ের টুকরোই হয়তো পাওয়া সম্ভব হবে। কারণ এতদিন আগে কবর দেওয়া দেহে এর থেকে বেশি কিছু থাকা প্রায় অসম্ভব বললেই চলে। কিন্তু সেই মৃতদেহ কবর থেকে বের করতেই সকলের চোখ চড়কগাছ। দেখা যায় একেবারেই বিকৃত হয়নি সন্ন্যাসিনীর মৃতদেহ। মুখ চোখ কোথাও এতটুকু পচনের চিহ্নমাত্র নেই। অথচ যখন এই সন্ন্যাসিনীকে কবর দেওয়া হয়, তখন নাকি কোনও প্রিজারভেটিভ ব্যবহার হয়নি। তাই সেইসময় যারা ঘটনার সাক্ষী ছিলেন তাঁরা রীতিমতো চমকে ওঠেন। ঠিক যেভাবে দেহটি কবর দেওয়া হয়েছিল এখনও তেমনই রয়েছে। এমনকি মারা যাওয়ার সময় সন্ন্যাসিনীর দু-পায়ে মোজা ছিল। কবর দেওয়ার সময় যা খোলা হয়নি। এতদিন পর সেই পা এবং মোজা একইরকম রয়েছে। এই আশ্চর্য ঘটনার কথা কিছুক্ষণের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে মির্যাকল দেখতে মঠে ভিড় জমাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। মঠের অন্যান্য সন্ন্যাসিনীদের দাবি, এর নেপথ্যে অবশ্যই অলৌকিক শক্তি রয়েছে। এবং তা কোনও অশুভ শক্তি নয়। বরং অত্যন্ত শুভ শক্তি। যা এতদিনেও পুণ্যাত্মা-র শরীরে পচন ধরতে দেয়নি। ইতিমধ্যেই ওই দেহ যত্ন করে কবর থেকে তোলা হয়েছে। প্রতিদিনই সেই দেহ দেখতে দলে দলে সাধারণ মানুষ হাজির হচ্ছেন, তাই নির্দিষ্ট ঘেরাটোপের মধ্যেই দেহটিকে সংরক্ষিত করেছে মঠ কর্তৃপক্ষ। যারা একসময় ওই সন্ন্যাসিনীর সঙ্গে দিন কাটিয়েছেন, তাঁরা পুরনো দিনের গল্প শোনাচ্ছেন অন্যদের। কীভাবে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ওই সন্ন্যাসিনী মঠে এসেছিলেন সেই গল্প, কিংবা তাঁর জীবদ্দশায় আরও কী অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে সেই সবকিছুই। তবে এই মৃতদেহ একইরকম থাকা সত্যিই বিরল। এর নেপথ্যে আদৌ কোনও বিজ্ঞানের যুক্তি আছে কি না তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু ভক্তের বিশ্বাসে তিনি অলৌকিক দেবীর সমান। তাই অনেকেই নিজের যুক্তিবাদী মনের জিজ্ঞাসা সরিয়ে রেখে এই সন্ন্যাসিনীর মৃতদেহ দেখতে মঠে হাজির হচ্ছেন।