মুসলিম কবি। তবে রামের প্রতি ভক্তি অপার। সেই টানেই লিখলেন গজল। আর তাতেই জুটল ভূয়সী প্রশংসা। চিঠি পাঠালেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সঙ্গীত বোঝে না ধর্মের ভেদ! একথাও আগেও প্রমাণ করেছেন অনেকে। অনায়াসে বলা যায়, উস্তাদ জাকির হোসেন, আভেদ আখতারের মতো শিল্পীদের নাম। কৃষ্ণের ভজন হোক বা রামের গীত, এঁরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ গুণে অনন্য। তালিকায় নয় সংযোজন যোগীরাজ্যের এ মুসলিম কবি। রামের নামে গজল লিখে বিখ্যাত হয়েছেন ইনি। খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদিও প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
কথা বলছি, আঞ্জুম বারাবাঁকবি সম্পর্কে। ভোপালের বাসিন্দা। ধর্মে মুসলিম। কবিতা লেখাই নেশা এবং পেশা। সম্প্রতি একটি গজল লিখেছেন। যে গানের ধরন খানিকটা হলেও ইসলাম-প্রভাবিত। তবে আঞ্জুম যে গজল লিখেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে রামকে উদ্দেশ্য করে। রঘুপতি রাঘবের নামে এই গজলের ছত্রে ছত্রে অপার ভক্তি। পড়ে বোঝার উপায় নেই, যিনি লিখেছেন তিনি ধর্মে মুসলিম। আসলে এমনটাই হওয়াই তো স্বাভাবিক! অন্তত আঞ্জুমের মতো মানুষের ক্ষেত্রে। ছোট থেকেই ধর্মের অনুশাসন তাঁকে বেঁধে রাখতে পারেনি। রামের প্রতি তাঁর টান বরাবরের। আসলে, রামের জীবন সংগ্রাম, বীরত্ব, রাজ্যধর্ম পালন ইতাদ্যি বিভিন্ন অধ্যায় অঞ্জুমকে অবাক করে। তাই হিন্দু দেবতা হলেও রামকেই নিজের আদর্শ মনে করেছেন মুসলিম কবি। যে গজল লিখেছেন, তার প্রতি ছত্রে রামের প্রতি ভক্তি ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাই প্রশংসা যে পেতেন একথা বলা বাহুল্য। একেবারে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা লক্ষ করবেন তা খানিক অবাক করছে সকলকে।
ইতিমধ্যেই যোগীরাজ্যের এই মুসলিম কবিকে চিঠি পাঠিয়েছেন মোদি। সেখানে লিখেছেন, আঞ্জুমের মতো গুণী শিল্পিরাই দেশের গর্ব। চিঠিতে অমৃত কাল শব্দটিও ব্যবহার করেছেন মোদি। বলেছেন, আঞ্জুমের মতো মানুষজন যে কাজ করছেন তা দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। আসলে, দেশের ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে রক্ষার স্বার্থে যারাই এই ধরনের কাজ করেন, মোদি কমবেশী প্রশংসা করেন তাঁদের সকলেরই। সবসময় যে পরিচিত কারও বা খ্যাতনামা কারও নামই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছয় তা নয়, অনেক অখ্যাত শিল্পিকেও চিঠিতে কুর্নিশ জানান মোদি। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। যদিও এসব নিয়ে কোনও উচ্ছ্বাস নেই আঞ্জুমের। বরং এতকিছুর মধ্যেও তিনি খানিক নির্বিকার ভাবেই বিষয়টাকে দেখছেন। রামের প্রতি ভক্তি আর ভালোবাসা থেকেই এমনটা করেছেন বলে দাবি তাঁর। কিন্তু এর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি হতেই পারে। কারণ এর আগে একইভাবে মুসলিম শিল্পীর গাওয়া শিবের ভজন নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল রীতিমতো। সেখানে আঞ্জুমের সাফ যুক্তি, তিনি এতটুকু ভয় পান না। নিজের কাজের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি যা করছেন তা নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন এই শিল্পী।