ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গিয়েই বিপত্তি। এই কাজের ফলে নাকি আঘাত লেগেছে ধর্মীয় ভাবাবেগে। আর সেই অভিযোগেই একেবারে সমাজচ্যুত হতে হল এক মুসলমান পরিবারকে। দিতে হল জরিমানাও। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গ্রামের কঠোর নিয়ম, ঘোড়ায় চড়ে কিংবা শোভাযাত্রা করে বিয়ে করতে যাওয়া চলবে না। তা নাকি ধর্মের পরিপন্থী। মুসলিম অধ্যুষিত এই গ্রামের নিদান, বিয়ের সময় শোভাযাত্রায় নাচগান করা ইসলামবিরোধী কাজ। কিন্তু বিয়ের আনন্দে সেই কাজই করে বসেছেন এক যুবক। আর তার জেরেই ঘটেছে বিপত্তি। সমাজচ্যুত করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের গোটা পরিবারকেই। কয়েক মাস ধরেই কার্যত একঘরে হয়ে রয়েছেন পরিবারের ৬ সদস্য। এখানেই শেষ হয়নি শাস্তি। উলটে জরিমানাও দিতে হয়েছে তাঁদের। সব গ্রামবাসীর সামনে তাঁদের থেকে প্রতীকী জরিমানা হিসেবে নেওয়া হয় অচল হয়ে যাওয়া ২৫ পয়সার মুদ্রা। অর্থাৎ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও কার্যত অচল, সমাজে তাঁদের কোনও প্রয়োজন নেই।
আরও শুনুন: স্বামী অবসর নিতেই অদ্ভুত অসুখের শিকার মহিলা, কী বললেন চিকিৎসক?
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে বিয়ের পাত্রকে ঘোড়ার পিঠে চড়েই মণ্ডপে পৌঁছতে দেখা যায়। অবাঙালি হিন্দু পরিবারে এমনটাই দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। কিন্তু গুজরাটের এই গ্রামটিতে বাস করেন মূলত ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরাই। হিন্দু রীতিনীতি বলে পরিচিত লোকাচারগুলি কিছুটা এড়িয়েই চলতে চান তাঁদের অনেকে। শোনা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই বছর পাঁচেক আগে ঘাঞ্চি নামের এক মুসলিম সংগঠন গ্রামে রীতিমতো ফতোয়া জারি করে। বলা হয়, ঘোড়ায় চেপে বা বড়সড় শোভাযাত্রা সহকারে বিয়ে করতে যাওয়া তাঁদের সম্প্রদায়ের জন্য অশোভন। এমনকি রাস্তায় গান বাজিয়ে একসঙ্গে নাচ করাতেও ছিল তাঁদের ঘোর আপত্তি। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রাজকীয়ভাবে নিজের ভাইয়ের বিয়ে দেন ওই গ্রামের বাসিন্দা রজক মানসুরি। ঘোড়ায় চড়েই বিয়ের আসরে পৌঁছন তাঁর ভাই রফিক। আর তার জেরেই গ্রামবাসীদের কোপে পড়েছে পরিবারটি। তাঁদের বয়কটের ফলে যে কোনও সাধারণ কাজ করতেই সমস্যার মুখে পড়ছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। আগামী দিনেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন বলেই জানিয়েছে ওই পরিবার।