চুরি করা হয়েছে মেয়েকে। তাকে উদ্ধার করতে নিজেই মাঠে নামলেন বাবা। একেবারে হলিউড সিনেমার কায়দায় মেয়েকে উদ্ধার করে এনেছেন পেশায় দিনমজুর ওই ব্যক্তি। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মেয়েকে অপহরণ করেছে এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। পুলিশের সাহায্যের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই মেয়েকে উদ্ধার করতে ছুটলেন বাবা। অসম্ভব সাহসের পরিচয় দিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেও আনলেন তিনি। কিন্তু যে উপায়ে মেয়েকে ফিরিয়ে আনলেন তিনি, তা দেখলে যে কারও মনে হবে যেন বাস্তবে নয়, কোনও হলিউডি সিনেমাতেই ঘটতে পারে এমন কাণ্ড।
আরও শুনুন: ধর্মের বাধা সরাল বিপর্যয়, বন্যাবিধ্বস্ত পাকিস্তানে মুসলিম পরিবারগুলিকে আশ্রয় দিচ্ছে মন্দির
ঘটনার কেন্দ্রস্থল মুম্বাইয়ের বান্দ্রা শহর। সম্প্রতি শহরতলি থেকে এক ১২ বছরের কিশোরীকে অপহরণ করে এক যুবক। একই এলাকায় থাকার দরুন দীর্ঘ দিন ধরেই মেয়েটিকে চিনত ওই যুবক। একদিন নিজে থেকেই মেয়েটিকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় সে। মেয়েটিও সেই প্রস্তাবে সায় দেয়। কার্যত বাড়িতে মিথ্যে কথা বলেই সেদিন ওই যুবকের সঙ্গে বেরিয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু নির্ধারিত গন্তব্যে না গিয়ে মেয়েটিকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে পাড়ি দেয় ওই যুবক। কুরলা অঞ্চলে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে প্রথমে বাসে করে সুরাট, তার পর ট্রেনে করে তারা রওনা দেয় রাজধানী দিল্লিতে। এদিকে মেয়ে বাড়িতে ফিরে না আসায় পুলিশের দ্বারস্থ হন তার বাবা-মা। কিন্তু কেবল অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেই হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেনি তার বাবা। আর্থিক বা সামাজিক কোনও জোরই ছিল না তাঁর, তবুও মেয়েকে উদ্ধার করার জন্য নিজেই মাঠে নেমে পড়েন ওই ব্যক্তি। আর সেই কাজ করতে গিয়েই তিনি যে কাণ্ড ঘটালেন তা রীতিমতো অবাক করেছে নেটিজেনদের।
নেটিজেনদের দাবি, হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা ‘টেকেন’-এও এরকমই এক অপহরণের গল্প দেখানো হয়েছিল। ওই ব্যক্তির কার্যকলাপে যেন বাস্তবে উঠে এসেছে লিয়াম নিশনের এই সিনেমাই। পাড়াপ্রতিবেশী এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে ওই যুবকের খোঁজ পান তিনি। বছর ২৪ বয়সের ওই যুবকের নাম শাহিদ খান। মুম্বইয়ের এক স্থানীয় কাপড়ের দোকানে কাজ করত সে। কোনও ক্লু না থাকা সত্ত্বেও তিনি খোঁজখবর চালিয়ে ওই যুবকের আদি বাড়ির ঠিকানাও আবিষ্কার করে ফেলেন। জানা যায় আলিগড়ের কাছাকাছি আতরোলি গ্রামেই ছেলেটির বাড়ি। বাড়ির খোঁজ পেয়ে মেয়ের জন্য সরাসরি যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। আর অবশেষে স্থানীয় পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সাহায্যে মেয়েকে উদ্ধারও করেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: ব্রেক আপ পার্টি! বিবাহবিচ্ছেদের পর একসঙ্গে উদযাপনে শামিল ১৮ জন ব্যক্তি
যদিও মেয়েটির অভিযোগ, সুরাটগামী বাসেই তাকে ধর্ষণও করেছে ওই যুবক। সেই মর্মে শিশু সুরক্ষা মন্ত্রকের কাছে এফআইআর-ও দায়ের করেছেন তার বাবা। তবে পাচার হয়ে যাওয়া মেয়েকে যে তিনি শেষমেশ ঘরে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন, এই ঘটনাকেই অকুণ্ঠ সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।