মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন জনৈক হিন্দু তরুণী। আর তাতেই রীতিমতো খাপ্পা তরুণীর পরিবার। কিন্তু ঘটনার প্রেক্ষিতে পরিবার যা করেছে তা একরকম নজিরবিহীন বলাই যায়। মেয়ের উদ্দেশ্যে কী করলেন তাঁরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লাভ জিহাদের অভিযোগে প্রায়ই উত্তাল হয় দেশ। অভিযোগ ওঠে মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর। হিন্দু মহিলাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে ধর্মান্তর ঘটানোই নাকি এই জিহাদিদের মূল উদ্দ্যেশ্য। আর সে অভিযোগে সরব হয় গেরুয়া শিবির। এর সঙ্গে সংখ্যালঘু বিরোধী রাজনীতিরও সরাসরি যোগ আছে বলে অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। কিন্তু এই রাজনৈতিক পরিসরের বাইরেও কি ভিন্ন ধর্মে বিয়ে আদৌ মেনে নিতে পারে হিন্দু পরিবার? সাম্প্রতিক এক ঘটনাই যেন তার উত্তর দিয়ে দিল। মুসলিম যুবককে বিয়ে করার দরুন মেয়েকে একরকম মৃত বলেই ধরে নিল হিন্দু পরিবার।
আরও শুনুন: আবাসনে রাখা যাবে না কোরবানির ছাগল, হনুমান চালিশা পড়ে বাড়ি শুদ্ধ করলেন বাসিন্দারা
ঘটনা মধ্যপ্রদেশের। প্রেমের সম্পর্কই রূপ নিয়েছে পরিণয়ে। এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে জীবনের বন্ধনে বাঁধা পড়েছেন জনৈক হিন্দু তরুণী। সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত হলেও, তা মোটেও ভাল ভাবে মেনে নেয়নি ওই পরিবারের বাকি সদস্যরা। লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলে তাঁরা সরব হননি বটে, কিংবা মুসলিম যুবকের উপর চড়াও হননি ঠিকই, তবে নিজেদের মেয়েকে তাঁরা মৃত বলে গণ্য করছেন। প্রতীক হিসাবে মেয়েকে একটি ‘কাফন’ দিয়েছেন তাঁরা। এই ‘কাফন’ আসলে একটি সাদা কাপড় যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের শেষকৃত্যের সময় মৃতদেহের উপর চাপানো হয়। অর্থাৎ মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে এবং সেই কারণেই সে মৃত, এমনটাই সাফ বুঝিয়ে দিয়েছে ওই হিন্দু পরিবার।
আরও শুনুন: বিবাহবিচ্ছেদ পালিত হয় উৎসবের আমেজে, কোন দেশে রয়েছে এই রেওয়াজ?
এদিকে পুরো ঘটনাটিই ঘটেছে থানায়। কেননা প্রায় বছরখানেক ধরে এই তরুণীকে খুঁজে পাচ্ছিল না তার পরিবার। পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়রি করা হয়। অতি সম্প্রতি তরুণী এসে থানায় জানান যে, তিনি এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন। তাঁর ধর্মও পরিবর্তিত হয়েছে। এরপর থানা থেকে ওই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা এসে তরুণীকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন, যাতে তিনি বিয়ে ভেঙে ঘরে ফিরে আসেন। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হন। এরপরই ক্ষিপ্ত পরিবারের লোকেরা তরুণীকে শেষকৃত্যের সাদা কাপড় বা কাফন তুলে দেন। পুরো ঘটনাটিই ঘটে নাহাড়গড় থানার মধ্যে। কোনও ভাবে সেই ভিডিও প্রকাশ্যে চলে আসে,যা নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়। এর পরই এক দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে গাফিলতির কারণে বরখাস্ত করা হয়।
তবে ভিনধর্মে বিয়ে বিষয়ে আজও গড় পরিবারের মনোভাব যে ঠিক কেমন, তা এই ঘটনা যেন স্পষ্টই বুঝিয়ে দিল।