এ যেন মাছি মারতে কামান দাগা। আমচুরি বাঁচাতে অভাবনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে ফেললেন এক দম্পতি। তা আম কার না পছন্দের! পাখি থেকে হনুমান, আমের ওপরে নজর সকলেরই। তার উপর ওঁৎ পেতে বসে থাকে পাড়ার ছেলে-ছোকরারাও। সুযোগ পেলেই আমচুরির ফন্দি। তবে সেই আম বাঁচাতে এই দম্পতি যা করেছেন তা কার্যত নজিরবিহীন। কী করেছেন তাঁরা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ফলের রাজা আম। আর সেই আম যদি হয় বিরল মিয়াজাকি প্রজাতির, তবে তো আর কথাই নেই। সুদূর জাপানের এই প্রকরণটি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে দামী আমগুলির মধ্যে অন্যতম। তা এ হেন আম বাঁচাতে বজ্র আঁটুনির ব্যবস্থা না করলে কি হয়!
আর সেই কাজটাই করে ফেলেছেন কর্নাটকের এই দম্পতি। বিরল প্রজাতির ওই আম বাঁচাতে নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তা ফলনের মরসুমে গাছের ফল বাঁচাতে অনেকেই নানা কিছু করে থাকেন। কেউ বসান পাহারা, তো কেউ গোটা গাছটাকেই ঢেকে ফেলেন জাল দিয়ে। এই দম্পতি অবশ্য হেঁটেছেন পাহারার পথেই। কিন্তু সেই জেড প্লাস নিরাপত্তার কথা শুনলে হোঁচট খাবেন আপনিও।
আরও শুনুন: নেই কেনার লোক, পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম বিলাসবহুল জাহাজ
সব মিলিয়ে মিয়াজাকি আমের গাছ মাত্র দুটো। আর সেই দুটো গাছের জন্যে চার জন রক্ষী এবং ছটি পাহারাদার কুকুর মোতায়েন করেছেন মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা সঙ্কল্প পরিহার ও তাঁর স্ত্রী রানি। দীর্ঘদিন ধরেই আমচাষের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা। তাঁদের জমিজাত আম সাধারণত খোলা বাজারে নয়, যায় সরাসরি কারখানায়। যেখান থেকে উৎপাদিত হয় বিভিন্ন আমজাত পণ্য। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এ ব্যবসা যথেষ্টই লাভজনক পরিহার পরিবারের জন্য।
বেশ কয়েক বছর আগে মিয়াজাকি গোত্রের এই আমগাছ দু’টো নিজেদের বাগানে এনে বসান পরিহার দম্পতি। কয়েক বছরের মাথায় বড় হয়ে ওঠে সেই গাছ। ধরে ফলও। আর সেই ফলের রূপ দেখে তো চোখ কপালে ওঠার জোগাড় দম্পতির। না, একেবারেই সাধারণ আমের মতো দেখতে নয় এই বিশেষ প্রজাতির আমটি। রুবি রঙের এই আমকে অনেকে ‘সূর্যের ডিম’ বলেও আখ্যা দেন। আর এই আমের দাম শুনলে তো ভিরমি খাবেনই। সত্যি বলতে, সোনার চেয়ে কোনও অংশে সস্তা নয় মিয়াজাকি প্রজাতির এই আম। গত বছর কিলো প্রতি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এই আম। তাহলেই ভাবুন একবার!
আরও শুনুন: বিয়ের খরচ ২৩ লাখ টাকা উপহার দিন নিমন্ত্রিতরাই! অদ্ভুত আবদার নবদম্পতির
তা এ হেন মহামূল্যবান আম হাতাতে যে সকলেই হাত বাড়িয়ে থাকবে তাতে আর আশ্চর্য কী! বছর দু’য়েক আগে তাঁদের আমবাগানে ঢুকে আম চুরির চেষ্টা করেছিল বেশ কয়েকজন। তা এবছর ফলনের মরসুমে তাই আর ঝুঁকি নিতে চাননি পরিহার দম্পতি। গোড়া থেকেই কোমর বেঁধেছেন নিরাপত্তা নিয়ে। সব মিলিয়ে এক জোড়া আমগাছে এ বছর ফলেছে মোট সাতটি মিয়াজাকি আম। আর সেই আম পাহারা দিতেই এমন আঁটোসাঁটো প্রহরার বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন মধ্যপ্রদেশের এই দম্পতি।