সারদা মা বলেছিলেন, মায়ের কাছে কি ছেলের জাত থাকে? সে কথাই যেন নিজের জীবনে প্রমাণ করে চলেছেন এই কেরলীয় ভদ্রলোক। তাঁর বানানো মসজিদের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। আত্মজীবনীর নাম ‘দ্য কোরান আই স’। জাতিতে হিন্দু, বিয়ে করেছেন খ্রিস্টান মহিলাকে। সম্প্রীতির এক সহজ উদাহরণ এই মস্ক ম্যান।
সেই কবেই কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি গেয়েছিলেন, ‘খৃষ্ট আর কৃষ্টে কিছু ভিন্ন নাই রে ভাই।/ …আমার খোদা যে, হিন্দুর হরি সে’। সত্যিই তো, জলকে যে নামেই ডাকা যাক, তার তো স্বাদ বদলায় না। তেমনই, ঈশ্বরকে আমরা নিজেদের ইচ্ছেমতো এক এক নামে ডাকতেই পারি, কিন্তু তাঁরা পরস্পরের শত্রু হতে যাবেন কেন! এই সহজ কথাটা বুঝতে না পেরেই কত বিবাদ বিসংবাদ, এমনকি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ অব্দি ঘটে যায়। কিন্তু আমাদের চারপাশেই তো কোনও কোনও মানুষ থাকেন, যাঁরা এ কথা ভারী অনায়াসে মনে গেঁথে নিতে পারেন। তেমন একজন মানুষের কথাই বলছি আজ।
আরও শুনুন: ব্রিটিশদের তুষ্ট করতেই ‘জনগণমন’ লিখেছিলেন Rabindranath Tagore! সত্যিটা কী?
নাম তাঁর গোবিন্দন গোপালাকৃষ্ণন। কেরালার অধিবাসী, জাতিতে হিন্দু। কিন্তু লোকে তাঁকে চেনে অন্য নামে। আসল নামটা চাপাই পড়ে গেছে সেই পাওয়া নামের আড়ালে। কী নাম? ‘মস্ক ম্যান’। অর্থাৎ, ‘মসজিদ মানুষ’। ভাবছেন তো, একজন হিন্দু মানুষ হঠাৎ এমন উপাধি পেলেন কী করে? গল্পটা সেখানেই। এই মানুষটি আর্কিটেক্ট। না, প্রথাগত কোনও ডিগ্রি নেই তাঁর। নিজে নিজেই কাজ শিখেছেন। তাতেই আজ পর্যন্ত মোট ১১০টি মসজিদ, ৪টি গির্জা এবং একটি মন্দির বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। আপনি যদি দক্ষিণ কেরালার যে কোনও বড় শহরে যান, আর সেখান থেকে তাকান দিগন্তের দিকে, গোবিন্দন গোপালাকৃষ্ণনের তৈরি কোনও না কোনও মিনার বা গম্বুজ আপনার নজরে পড়বেই।
আরও শুনুন: অবনীন্দ্রনাথ আঁকলেন ‘বঙ্গমাতা’, স্বদেশিরা আপন করে নিলেন ‘ভারতমাতা’ রূপে
গোবিন্দন গোপালাকৃষ্ণনের বাবা কে.গোবিন্দন ছিলেন কন্ট্রাক্টর। বাবা যে সব ব্লু-প্রিন্টওয়ালা ট্রেসিং পেপার ফেলে দিতেন, সেগুলো দেখে দেখেই ছোটবেলায় এদিকে ঝোঁক হয় গোপালাকৃষ্ণনের। ছুটির দিনে চলে যেতেন বাবার সাইটে, সেখানে এক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ড্রাফটসম্যানের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিয়েছিলেন। এইভাবেই একটু একটু করে কাজ শেখা। জীবনটা বদলে গেল থিরুবনন্তপুরমে পালায়াম মসজিদ তৈরি করার সুযোগ আসার পর।
বাকি অংশ শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।