হারিয়ে যাওয়া ছেলে ঘরে ফিরবে একদিন। ৪৫ বছর ধরে এই আশা বুকে নিয়ে দিন কাটিয়েছিলেন এক মা। অবশেষে তাঁর মৃত্যুর বছরেই আলো পড়ল সেই নিখোঁজ রহস্যে। কীভাবে? শুনে নিন সে কথা।
ঠিক যেন কোনও টানটান থ্রিলারের শেষ পাতা। ৪৫ বছর ধরে যে রহস্যের উত্তর খুঁজছিলেন অনেকে, অবশেষে হয়তো মিলল তার সমাধান। এতদিন পর হদিশ মিলল প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে হারিয়ে যাওয়া একটি গাড়ির। আর সেই গাড়ির মধ্যেই পাওয়া গেল কোনও এক মানুষের হাড়ও। কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এর পিছনে? গাড়ির সঙ্গে হারিয়ে গিয়েছিলেন যে মানুষটি, এ কি তবে তাঁরই দেহাবশেষ?
আরও শুনুন: ইংল্যান্ডের রাজমুকুটের মণি নাকি অভিশপ্ত! বহু দুর্ঘটনার সাক্ষী এই রত্ন
খুলেই বলা যাক, ঠিক কী রহস্যের খোঁজ চলছিল দীর্ঘ এত বছর ধরে।
১৯৭৬ সালের ২৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ছেড়ে অবার্ন ইউনিভার্সিটির দিকে পাড়ি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া কাইল ওয়েড ক্লিঙ্কস্কেলস। তাঁর বয়স তখন বছর ২২। জর্জিয়ার লাগ্রাঞ্জ শহরে বারটেন্ডারের চাকরি করতেন তিনি। সেই কাজ সেরেই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসছিলেন ওই পড়ুয়া। দু’জায়গার মধ্যে দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, আর কোনও দিনই ফিরে আসেননি ক্লিঙ্কস্কেলস। রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান তিনি। বহু তদন্তের পর পুলিশও রণে ভঙ্গ দেয়। অনুমান করে নেওয়া হয়েছিল যে ওই পড়ুয়া আর বেঁচে নেই। যদিও তাঁর মৃতদেহেরও কোনও হদিশ মেলেনি। শেষমেশ অমীমাংসিত কেস হিসেবেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্লিঙ্কস্কেলস নিখোঁজ তদন্ত।
আরও শুনুন: ৭০০ শিশুকে হিটলারের থাবা থেকে বাঁচিয়েছিলেন একাই, জানেন কে ইনি?
৪৫ বছর পেরিয়ে সেই কেস-ই আবার নতুন করে খুলতে বাধ্য করছে এই আবিষ্কার, মনে করছেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আমেরিকার বিপদসূচক নম্বর নাইন ওয়ান ওয়ান-এ ফোন করে এক বাসিন্দা জানান, আলাবামার একটি খাঁড়ির কাছে একটি ভাঙাচোরা গাড়ি তিনি দেখতে পেয়েছেন। খাঁড়ির গা ঘেঁষে একটি ব্রিজের নিচে পড়ে ছিল গাড়িটি। পিছনের দরজা হাট করে খোলা ছিল। গাড়িটি উদ্ধার করার পরেই চমকে যান পুলিশ অফিসারেরা। গাড়ির ভেতরে পাওয়া যায় কিছু মানুষের হাড়। তা ছাড়াও ক্লিঙ্কস্কেলসের ক্রেডিট কার্ড এবং শনাক্তকরণের আরও কিছু চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। হাড়গুলির বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করে তবেই বলা সম্ভব হবে যে ওই হাড় ক্লিঙ্কস্কেলসেরই কি না। তবে লাগ্রাঞ্জ শহর থেকে অবার্নে ফেরার যে রাস্তা, তার থেকে ওই খাঁড়িটি বেশি দূরে নয়। পাশাপাশি অন্যান্য তথ্যপ্রমাণও একইদিকে ইঙ্গিত করছে। পরীক্ষানিরীক্ষার পরে হয়তো এ কথা প্রমাণ করা যাবে যে ক্লিঙ্কস্কেলস খুন হয়েছিলেন। কিন্তু অপরাধীরা কি ধরা পড়বে আর? আশা দেখছে না পুলিশও।