প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বাজেটে উপকৃত হবেন সমাজের সব শ্রেণির মানুষ। কিন্তু মধ্যবিত্ত বলছে, তেমন কোনও সুরাহা মিলল না। তবে বাজেটে লাভ না মিলুক, মধ্যবিত্তের হাতে আছে মিম। ঢাল তলোয়ার না থাক, মিমের খোঁচাতেই অর্থমন্ত্রী-সহ কেন্দ্র সরকারকে বিঁধছে মধ্যবিত্ত। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রী যতই সারা দেশের কল্যাণের কথা বলুন, কিংবা অর্থমন্ত্রী যতই বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে বাজেট ঘোষণা করুন না কেন, এবারের বাজেটে বিশেষ আশা দেখছে না মধ্যবিত্ত। এমনিতেই বাজারদরের গ্রাফ যেভাবে লাগাতার চড়ছে, তাতে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে টান। যদিও বাজেট পেশের আগেই আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে নির্মলা সীতারমণের দাবি ছিল, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণেই। এ পরিস্থিতিতে বাজেট ঘোষণার পরেও অবস্থার ইতরবিশেষ দেখছে না মধ্যবিত্ত শ্রেণি। বরং স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভে কর বাড়ার ঘোষণায় সঞ্চয়ের হাল নিয়েও সে রীতিমতো চাপে। আর এই অবস্থাতেই সোশাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে বাজেট সংক্রান্ত মিমের ভিড়ে। বাজেটে আর্থিক লাভ নাই বা জুটল, মধ্যবিত্তের ঝুলিতে আপাতত মিমের কমতি নেই। সেই যে কাক্কেশ্বর কুচকুচে বলেছিল, হাতে থাকল পেনসিল, মিমে খুশি মধ্যবিত্তের হালও এখন অনেকটা সেইরকমই। নিধিরাম সর্দারের মতো তার ঢাল তলোয়ার না থাক, মিমের খোঁচাতেই অর্থমন্ত্রী-সহ কেন্দ্র সরকারকে বিঁধছে মধ্যবিত্ত।
-: আরও শুনুন :-
বাজেটের জনক বলা হয় এক বাঙালিকেই! কে তিনি, জানেন?
নির্মলার বাজেট বক্তৃতার আগে থেকেই সোশাল মিডিয়ায় ঘা দিচ্ছিল মিমের ঢেউ। দেখা যায়, কেউ রুপোলি পর্দার রামায়ণের দৃশ্য তুলে এনেছেন। সেখানে রাজা জনক বলছেন, ‘আজ মেরে দুঃখ, মেরি নিরাশা কি কোই সীমা নেহি হ্যায়’। অর্থাৎ নির্মলার বাজেট যে অসীম দুঃখ-হতাশাই বয়ে আনবে, তারই পূর্বাভাস। কেউ আবার বাহুবলীর রাজমাতা শিবগামী ঘোষণার সামনে দুঃস্থ প্রজাদের ছবি তুলে এনেছেন। খসে পড়া তারার কাছে কিছু চাইলে ইচ্ছেপূরণ হয়, এ কথা মনে রেখে এক সাধারণ নিরীহ চেহারার কার্টুনের প্রার্থনা যেন বাজেটে তার লাভ হয়। ওদিকে প্রার্থনা শুনেই ফিরে চলে যাচ্ছে সেই তারা- এমন মিমও দেখা গিয়েছে। আর বাজেট পেশ করার পরে মিমের বন্যায় ছেয়ে গিয়েছে নেটদুনিয়া। কখনও ‘চুপ চুপ কে’ থেকে রাজপাল যাদবকে টেনে ধরে রাখার দৃশ্য, কখনও ধূপ ধুনো দিয়ে পুজো করার দৃশ্য পোস্ট করে মধ্যবিত্তদের অবস্থা নিয়ে হাহুতাশ করেছেন নেটিজেনরা। বাদ যায়নি পঞ্চায়েতের দৃশ্যও, যেখানে বলা হয়েছে সরকার বাজেট পেশ করে এবং চাকরিজীবীদের থেকে খালি টাকা চায়। বলিউড থেকে হলিউড, সিনেমা আর সিরিজের নানা দৃশ্য তুলে এনেই বাজেট বৃত্তান্তে মধ্যবিত্তের বেহাল পরিস্থিতি বুঝিয়েছেন নেটিজেনরা।
-: আরও শুনুন :-
বাজেট বক্তৃতায় কংগ্রেসের ইস্তেহার পড়লেন মোদির মন্ত্রী? কটাক্ষ চিদাম্বরমের
এমনিতে রাজনৈতিক কি সামাজিক পরিসরে ব্যঙ্গ-তামাশার জায়গা বরাবরই ছিল। বলা হয়, যে দুর্বলের পালটা আঘাত ফিরিয়ে দেওয়ার জোর নেই, রসিকতাই তার জোর। আর সেই প্রবণতাই হাল আমলে নেমে এসেছে মিমের চেহারায়। বছর কয়েক আগেও মিম-কে জরুরি হিসাবে দেখার রেওয়াজ সেভাবে শুরু হয়নি। তবে, ভোটের বাজারে মিমের যা দাপট দেখা গিয়েছে, তাতে বলাই যায় যে, মিম আর হেলাফেলার বস্তু নয়। এবার বাজেটের পরেও মধ্যবিত্তের হতাশা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াল সেই রসিকতাই।