এই দ্বীপ জুড়ে সুন্দরী নারীদের ভিড়। দ্বীপের যে কোনও জায়গায় ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে পারেন তাঁরা। ইচ্ছেমতো পোশাকে নিজেদের সাজিয়ে তুলতেও কোনও বাধা নেই। কিন্তু কোনও পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই এখানে। কেন জারি এমন নিয়ম? আসুন, শুনে নেওয়া যাক এই দ্বীপের কথা।
গোটা বিশ্ব জুড়েই মেয়েদের উপর যৌন অত্যাচারের হার যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে উপায় নেই। কিন্তু সেই তালিকায় বড়সড় ব্যতিক্রম এই দ্বীপ। এখানে কোনও ধর্ষণ কিংবা যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটে না কখনোই। কারণ এই দ্বীপে কোনও পুরুষের প্রবেশ করারই অনুমতি নেই। এখানে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে পারেন কেবল মেয়েরাই। হ্যাঁ, এমনই এক আশ্চর্য দ্বীপ এই ‘সুপার শি’।
আরও শুনুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, কাতারে থাকছেন না ‘বিশ্বকাপের হটেস্ট ফ্যান’
ফিনল্যান্ডের লাগোয়া বাল্টিক সাগরের মধ্যে সবুজে ঘেরা ছোট্ট দ্বীপ ‘সুপার শি’। আর এখানেই অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারেন যে কোনও মহিলা। সমুদ্রের উপকূলে দেখা যায় বিকিনি কিংবা মনোকিনি পরা সুন্দরী যুবতীদের ভিড়। স্বল্পবসনা নারীদের দেখা যায় সান-বেদিং করতে বা সমুদ্রের নীল জলে সাঁতার কাটতে। কিন্তু কোনও পুরুষের চাহনি সেইসব শরীর লেহন করবে, এমন অস্বস্তিতে কাউকেই পড়তে হয় না এখানে। নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা করতে হয় না। এই মেয়েদের পৃথিবীতে শিশু-যুবক-বৃদ্ধ সব বয়সের পুরুষেরই প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
এই দ্বীপে এহেন সব নিয়মকানুন জারি করেছেন দ্বীপের মালকিন, ক্রিস্টিনা রথ নামে এক মার্কিন মহিলা। কিন্তু কেন এমন একটি জায়গা গড়ে তোলার কথা ভেবেছিলেন তিনি? এর জবাবে ওই মহিলা জানিয়েছেন, একবার ছুটি কাটাতে তিনি আমেরিকার একটি রিসর্টে যান। সেখানে টুরিস্টদের দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, অধিকাংশ পুরুষেরই চোখ সারাক্ষণ মহিলাদের শরীরের উপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার অনেক মহিলাও যেভাবে পোশাকআশাক, সাজসজ্জায় নিজেদের মেলে ধরছেন, তাও যেন ওই পুরুষদের উদ্দেশ্য করেই। এইসব দেখেই ক্রিস্টিনা ঠিক করেছিলেন, কেবল মেয়েদের জন্যই একটি জায়গা গড়ে তুলবেন তিনি। প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর স্বদেশ ফিনল্যান্ডে বেড়াতে এসে এই দ্বীপটি মনে ধরে যায় ক্রিস্টিনার। আর প্রায় সাড়ে আট একরের এই দ্বীপটি কিনে এখানেই নিজের সেই স্বপ্নরাজ্য গড়ে তোলেন তিনি। ২০১৮ সালের ২৩ জুন থেকে ভ্রমণপিপাসু নারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই দ্বীপ।
আরও শুনুন: প্ল্যানচেটের অভ্যাস ছিল রবীন্দ্রনাথের, মৃত্যুর পর নাকি প্ল্যানচেটে সাড়া দিয়েছিলেন নিজেও
এই দ্বীপে রয়েছে কয়েকটি বিলাসবহুল কেবিন, হোটেল এবং ক্যাফে। এই দ্বীপে এক সপ্তাহ সময় কাটাতে খরচ হবে ৩৫০০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় লাখ তিনেক টাকা। কোনও মহিলা এখানে আসতে চাইলে তাঁকে প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তারপর সেই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে ক্রিস্টিনা নিজে ভিডিও কলে ইন্টারভিউ নিয়ে প্রার্থীদের নির্বাচন করেন। কয়েক হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে সব তথ্য যাচাই করে প্রতিবার মাত্র ১০ জন নারীকে বেছে নেন তিনি। কোনোরকম পুরুষবিদ্বেষ থেকে নয়, মেয়েদের একলা নিশ্চিন্ত জীবনের স্বাদ নিতেই এই দ্বীপ গড়ে তুলেছেন তিনি, এমনটাই জানিয়েছেন ক্রিস্টিনা রথ।