সদ্য বিক্রি করেছেন ৪ বিঘা জমি। মোটা টাকা আমদানিও হয়েছে। কিন্তু টাকা পেয়েই কার্যত নিখোঁজ বৃদ্ধ। বাড়ির লোক তো চিন্তায় অস্থির। থানায় ডায়েরি পর্যন্ত করা হল। অবশেষে বৃদ্ধের খোঁজ মিলল এমন জায়গায়, যা কেউ কল্পনাও করেননি। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
প্রেম জীবনে বারবার আসতে পারে। কিন্তু কিছু প্রেম এমন হয়, যা সারাজীবনেও ভোলা যায় না। এখানেও ঘটেছে ঠিক তেমনটাই। তাই ৬২ বছর বয়সে সেই প্রেমিকার খোঁজেই ঘর ছাড়লেন বৃদ্ধ। এদিকে বাড়িতে সে ব্যপারে প্রায় কিছুই বলেননি। তাই বৃদ্ধের আচমকা অন্তর্ধানে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যান সকলেই।
আরও শুনুন: শিবাজির হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার ছিল বাঘনখ, অবশেষে ভারতে ফিরছে সেই অস্ত্র
ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের। সেখানকার কাশগঞ্জ জেলার মুবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্র সিং, সম্প্রতি ঘটিয়েছেন এমনই অদ্ভুত কাণ্ড। বছর ৬২-র এই বৃদ্ধের পরিবার বলতে দুই ভাই ও স্ত্রী। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই বয়সে পৌঁছেও নিজের হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকাকে ভুলতে পারেননি মহেন্দ্র। প্রায় ২০ বছর আগে গ্রামেরই এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। সম্পর্কের আয়ু ছিল মাত্র কয়েকমাস। তারপরই নিজের স্বামীকে নিয়ে সুরাটে চলে যান ওই মহিলা। এদিকে কার্যত একলা হয়ে যান মহেন্দ্র। এরপর কালের নিয়মে তাঁর বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে, সেই সন্তানেরও বিয়ে হয়েছে। কিন্তু তাঁর মনে রয়ে গিয়েছেন সেই মহিলা। সম্প্রতি, মহেন্দ্র জানতে পারেন, সেই মহিলার বিচ্ছেদ হয়েছে। এখনও সুরাটেই থাকেন তিনি। তবে স্বামীর সঙ্গে নয়, ভাইয়ের সঙ্গে। এই তথ্য জানার পরই মহেন্দ্র ঠিক করেন ফিরে যাবেন সেই হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকার কাছে। কিন্তু খালি হাতে গেলে কি আর চলে! তাই নিজের ৪ বিঘা জমি বিক্রি করে দেন। বদলে পান ২১.৪২ লক্ষ টাকা। সেই টাকা নিয়েই বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সুরাটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
আরও শুনুন: দেখতে হুবহু পশু কিংবা পাখির মতো! এইসব ‘বহুরূপী’ গাছকে চেনেন কি?
এদিকে মহেন্দ্র বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন বেজায় চিন্তায় পড়ে যান। উপায় না বুঝে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। গ্রামের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে এই খবর। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমেই যে ব্যক্তিকে মহেন্দ্র জমি বিক্রি করেছিলেন, তাঁকে খুঁজে বার করে পুলিশ। আর সেই ব্যক্তিকে জেরা করতেই সামনে আসে সব তথ্য। জানা যায়, তিনি ওই টাকা নিয়ে সুরাটে চলে গিয়েছেন। সেইমতো সুরাটে গিয়েই মহেন্দ্র হাতে নাতে পাকড়াও করে পুলিশ। তারপর অবশ্য মহেন্দ্র নিজেই সবকথা স্বীকার করেন। তাঁর দাবি, এতে কোনও অন্যায় নেই। এই মুহূর্তে তাঁর ‘প্রেমিকা’-র তাঁকে প্রয়োজন। তাই তিনি এসেছেন বলে দাবি করেন ওই বৃদ্ধ। সেইসঙ্গে তাঁর আরও দাবি, ওই টাকা দুই ভাগে ভাগ করবেন। তারপর নিজের পরিবারের ও সুরাটের প্রেমিকাকে সমানভাবে সেই টাকা দেবেন। যদিও শেষপর্যন্ত এই পরিকল্পনা সফল হয়নি। পুলিশ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা দাঁড়িয়ে থেকে মহেন্দ্রকে তাঁর পরিবারের হাতেই তুলে দিয়েছেন।