একেই বোধহয় বলে তিল থেকে তাল। একটি ছোট্ট মশার কামড়ের জেরেই কোমায় যেতে হল এই ব্যক্তিকে। হল ৩০টি অস্ত্রোপচারও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রথমে কোমা। তারপর গুনে গুনে ৩০টি অস্ত্রোপচার। এমনকি ত্বক প্রতিস্থাপন পর্যন্ত করতে হয়েছে এই ব্যক্তিকে। আর এই সব কিছুর নেপথ্যে নাকি একটি সামান্য মশা। ছোট্ট একটি মশার কামড়ের জেরেই এত কাণ্ড। ২৭ বছরের ওই যুবককে প্রায় মৃত্যুর মুখে পৌঁছে দিয়েছিল একটি মশার কামড়ই।
আরও শুনুন: ঠোঁটে ঠোঁট রেখে রেকর্ড, ৫৮ ঘণ্টার দীর্ঘতম চুম্বনে গিনেস বুকে নাম দম্পতির
ঠিক কী ঘটেছে? তাহলে খুলেই বলা যাক।
এমনিতে যতই ছোটখাটো দেখতে হোক না কেন, মশাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার কিন্তু কারণ নেই। ইতিহাস বলে, ভারতে ইংরেজ শাসনের প্রথম দিকে ম্যালেরিয়ার ভয়ে বিদেশিদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপও যে কেমন ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, উপমহাদেশের বাসিন্দাদের কাছে তা অজানা নয়। কিন্তু অবাক কাণ্ড হল, এই ঘটনাটি উপমহাদেশের কোনও অঞ্চলে ঘটেনি। তা ঘটেছে জার্মানিতে। ঠান্ডা দেশে এমনিতে মশার উপদ্রব হওয়ারই কথা নয়। কিন্তু ওই যুবকের দাবি, তিনি সাম্প্রতিক কালে বিদেশে কোথাও যাননি। সুতরাং অন্য কোনও জায়গা থেকে আক্রান্ত হওয়ার প্রশ্নই নেই।
আরও শুনুন: রঙিন ফুলে ঢাকা, অথচ সায়ানাইডের থেকে ৬০০০ গুণ বিষাক্ত পদার্থ মেলে এই গাছে
সেবাস্টিয়ান রট্শকে নামের ওই যুবক জানান, প্রথমে সাধারণ ফ্লু-এর মতো উপসর্গই দেখা দিয়েছিল তাঁর শরীরে। জ্বরের তাড়নায় প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। খেতেও পারতেন না। এই সময়েই, প্রায় আকস্মিকভাবে একদিন তিনি লক্ষ করেন, তাঁর পোশাকটি বাম ঊরুর কাছে ভিজে গিয়েছে। দেখা যায়, সেখানে অনেকখানি জায়গা জুড়ে পুঁজ জমে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখেন, সেরাটিয়া মার্সেসেন্স নামের এক ব্যাকটেরিয়ার ওই কীর্তি। যা ততদিনে ঊরুর ভেতর থেকে প্রায় অর্ধেক অংশ উদরসাৎ করে ফেলেছে। চিকিৎসকেরা জানান, এশিয়ান টাইগার মশার কামড়েই এমনটা হওয়া সম্ভব। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন ওই যুবক। কিডনি, ফুসফুস, এমনকি হৃৎপিণ্ডের মতো দেহের একাধিক জরুরি অঙ্গও বিকল হয়ে পড়েছিল তাঁর। চার সপ্তাহ আইসিইউ-তে কাটাতে হয় তাঁকে। এদিকে একে একে ৩০টি অস্ত্রোপচার চলে তাঁর শরীরে। অস্ত্রোপচার করে পায়ের দুটি আঙুল আংশিকভাবে বাদ দেওয়া হয়। ঊরুর ওই অংশে ত্বক প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে শেষমেশ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন ওই যুবক। মশার মতো একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী যে প্রায় তাঁর প্রাণটাই কেড়ে নিয়েছিল, সে বিস্ময় অবশ্য যাওয়ার নয়।