পরিবারে তাঁর পদোন্নতি হয়েছে। আর এই পদোন্নতির সঙ্গে পাওয়া বাড়তি দায়িত্ব সামলাতে আর অন্য কোথাও কোনও চাকরি করবেন না তিনি। মিস্টার যোশীর এহেন কাণ্ডে শোরগোল পড়েছে নেটপাড়ায়। এটা কী নেহাতই চাকরি না করার অজুহাত? আসুন শুনে নিই।
আইআইটি খড়গপুর থেকে পাশ করেছেন মিঃ যোশী। মাস কয়েক আগেই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন একটি সংস্থায়। কিন্তু পরিবারে তাঁর পদন্নোতি হয়েছে বলে ছেড়ে দিলেন সেই মোটা মাইনের চাকরি।
আরও শুনুন: ফিরলেন না ঐন্দ্রিলা, ফিরল অনাত্মীয়ের জন্য প্রার্থনা আর কান্নার দিন
আসল ব্যাপারটা হল বাবা হয়েছেন মিঃ যোশী। এতদিন তিনি শুধু কারও ছেলে, বা কারও স্বামী ছিলেন। আর এবার তাঁর পদোন্নতি হয়ে, বাবা হয়েছেন। বাবা হয়েছেন জেনে, অফিসের নিয়ম অনুযায়ী, মাত্র ১ সপ্তাহ ছুটি বা পেটারনিটি লিভ, দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু মিঃ যোশীর দাবী, বাবা হওয়ার সমস্ত দায়িত্ব কর্তব্য ১ সপ্তাহে সামলানো সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। আর তার অফিস তাঁকে এর বেশি ছুটি দিতেও পারবে না, তাও তিনি জানতেন। উপরন্তু তাঁর এই নতুন চাকরিতে তাঁকে প্রায়ই হিল্লি-দীল্লি করতে হবে। বাইরে বাইরেই যদি থাকবেন তাহলে তো মেয়ের বড় হওয়াটা চোখের সামনে দেখতেই পাবেন না। সেই ছোট্ট প্রাণের সাথে খেলা করা, তার হঠাৎ কান্না, হালকা হাসির মানে বুঝতে চাওয়া, তাকে ঘুমপাড়ানি গান শোনানো আর গানের মাঝে সেই খুদের তার দিকে অপলক চেয়ে থাকা দিয়েই ভরিয়ে রাখতে চান মুহুর্তগুলো।
আমরা সাধারণত মায়েদেরই এটা করতে দেখি। সন্তান জন্মাবার সময়টায় মায়েদের জন্য সবেতন ছুটির ব্যবস্থা থাকে। থাকে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের অপশানও। কিন্তু অনেক মা-ই সন্তান জন্মাবার পর তাঁকে ভালভাবে দেখভাল করার জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। বাবাদের ক্ষেত্রে সে বালাই নেই আমাদের সমাজে, মিঃ যোশির আক্ষেপ। সমাজ এক্ষেত্রে বাবাদের দায়িত্বগুলো কত কম করে দেয়। আর তাই অনেকেই মিঃ যোশীর এই সীদ্ধন্তে সহমত নন। মিঃ যোশীর গল্প নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই, অনেকে বাবাই তাঁর সীদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। অনেকেই আবার জানিয়েছেন, পরিবারের চাপে আর তেমন আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তাঁরা চেয়েও এমন সীদ্ধন্ত নিতে পারেননি। সমাজ বাবাদের এমন কঠোর হতেই কেন বলে সবসময়, ইত্যাদী। তবে মেয়ে জন্মাবার কয়েক দিনের মধ্যে মা আকাঙ্খা অফিসে প্রমোশন পেয়েছেন ম্যানেজারের পোষ্টে।
আরও শুনুন: অকূল সমুদ্রে একা টিকে থাকার লড়াই, ৪০০ দিন পেরিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন ‘জয়ী’ ব্যক্তি
হিমালয়ের কোলে স্পিতি ভ্যালির মত নৈশ্বর্গিক জায়গায় বেড়াতে গিয়ে যোশী দম্পতি ঠিক করেছিলেন তাঁদের ভবিষ্যৎ কন্যার নাম। সেই মতোই প্রকৃতির এক ক্ষুদ্র রূপ নিয়ে স্পিতি এসেছে তাঁদের কোল আলো করে। আর আমরা তো সবাই জানি যে, অফিসের রুটিন কাজ থেকে একটা টানা ছুটি না পেলে প্রকৃতিকে উপভোগ করাই সম্ভব নয়।
View this post on Instagram