পোষ্য অনেকেরই থাকে। আর তাদের প্রতি মালিকের ভালবাসারও শেষ থাকে না। কিন্তু শুয়োরকে কেউ বাড়িতে পুষেছেন- এমনটা সচরাচর শোনা যায় না। আরও অবাক হওয়ার বিষয় যে, সেই পোষ্যকে বাড়িতে রেখে দিতে আইনের দ্বারস্থ হতেও পিছপা নন এক ব্যক্তি। হ্যাঁ, পোষ্যের জন্য যে সবকিছু করা যায়, এ যেন তারই নমুনা। আসুন গল্পখানা শুনে নিই।
বাড়িতে যখন পোষ্যটিকে এনেছিলেন, তখন সে ছোট্টটি। খুদে একটা প্রাণী। আদর যত্নেই বড় করেছেন তাকে। পোষ্যও তার মালিককে চিনেছে বেশ ভালো করেই। অনেক মনখারাপের দিনে মালিককে সঙ্গ দিয়েছে যে। পোষ্যের সঙ্গে মালিকের যেরকম ‘ইমোশোনাল বন্ড’ তৈরি হয়, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে একটাই টুইস্ট আছে এইখানে। এই পোষ্য খুব যে অনেকেই পোষেন, তা কিন্তু নয়। কেননা সেটি হল একটি শূকর বা শুয়োর।
আরও শুনুন: গড় আয়ু ১০০ বছর, তবুও অটুট যৌনজীবন! বিস্ময় দ্বীপে বাস করলে সেরে যায় অসুখও!
ভদ্রলোক নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা। নাম উইভার্ন ফ্লাট। আর তিনি তাঁর পোষ্যের নাম দিয়েছেন এলি। তা এলিকে নিয়ে দিব্যি কাটছিল তাঁর। যতবার বাড়ি পালটেছেন, বা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গিয়েছেন, সঙ্গে থেকেছে এলি। অনেকগুলো দিন পেরিয়ে এলি বেশ বড়সড়ও হয়েছে। একরকম পরিবারের সদস্যই যেন হয়ে গিয়েছে সে। পোষ্য শুয়োর হলেও, তা নিয়ে এতদিন কোনও রকম মাথাব্যথা ছিল না ওই ব্যক্তির। কিন্তু সম্প্রতি ঝামেলা বাধল আইনের গেরোয়। এখন তিনি বাস করেন ক্যানাজোহারি নামে এক গ্রামে। সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন বলছে, একটি শূকরকে বাড়িতে এভাবে রাখা কোনওভাবেই আইনস্মমত কাজ নয়। বিশেষ কিছু নিয়মাকানুন আছে ওই এলাকার, যার গেরোয় আটকে যাচ্ছে এলির থাকা।
আরও শুনুন: ঝুলিতে রয়েছে ২০টি ডিগ্রি, ভারতের সবচেয়ে ‘শিক্ষিত’ ব্যক্তিকে চেনেন?
শুনে তো মাথায় হাত ওই ব্যক্তির। বছর চারেক ধরে পোষ্যটি তাঁর সঙ্গেই আছে। তার উপর একরকম মায়াই পড়ে গিয়েছে বলা যায়। তাঁর আরও পোষ্য আছে, সেগুলি কুকুর। কিন্তু ওই ব্যক্তির দাবি, কুকুরগুলির থেকেও বুদ্ধিমান এলি। আর তার খারাপ সময়ে এলি তাকে অনেক সাহায্য করেছে। এমনকী তিনি যখন মানসিক ভাবে চাপে থাকেন, উদ্বেগ তাঁকে গ্রাস করে, তখন এলির সাহচর্য তাকে আনন্দ দেয়। ওই ব্যক্তির আইনজীবী আবার দাবি করেছেন, এলি কাছে থাকলে অনেক সময় অ্যাংজাইটি কমানোর ওষুধ খেতে হয় না উইভার্নকে। অর্থাৎ সম্পর্ক যে বেশ গভীর তা বোঝাই যাচ্ছে। তবুও নারাজ প্রশাসন। প্রশাসনের তরফের আইনজীবীর দাবি, এই কাজের জন্যই যদি এলি উপযুক্ত হয়, তবে যথাবিহিত আইনের পথ দিয়েই সে কথা বোঝাতে হবে তার মালিককে। সে সব না করে এমনি এমনি এলিকে বাড়িতে রাখা মানে, আইন লংঘন করছেন ওই ব্যক্তি। বেগতিক বুঝে প্রতিবেশীর থেকে এলির জন্য শংসাপত্রও আদায় করেছেন উইভার্ন। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন যে, এলির থাকা নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।
আইনের জল কোনদিকে গড়াবে তা এখনও কেউ জানে না। তবে পোষ্য যেরকমই হোক না কেন, তাকে কাছে রাখতে মালিক যে সবরকম চেষ্টা করতে পারেন, এ ঘটনা যেন সে কথাই বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে।