হিরে, মানিক, রত্ন ইত্যাদি মহামূল্যবান জিনিস চুরির কথা তো আমরা শুনেছি। এমনকী অন্যরকম অর্থ বোঝালেও, পুকুরচুরি শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত। সুকুমার রায়ের সৌজন্যে হেড আপিসের বড়বাবুর গোঁফচুরিও যে হয়েছিল, তাও আমাদের জানা। কিন্তু ডাইনোসরের থাবা চুরি হয়েছে এমন ঘটনা আগে কখনও শোনা গিয়েছে কি-না সন্দেহ! অবাক সেই কাণ্ডেই এখন হইচই বিশ্বে।
কথা বলে, চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা! আর ধরা যখন পড়েই যায়, তখন ঘটনা দেখে আর বিস্ময়ের শেষ থাকে না। হলিউড থেকে বলিউড- এই ধরনের সিনেমাগুলোর কথাই ভাবুন না! চুরির কৌশল দেখে দর্শকের চোখ ছানাবড়া! তবু অতিবিড় চিত্রনাট্যকারও যা ভাবতে পারেননি, তাই করে ফেলল আক চোর। হিরে, রত্ন, মানিক কোন ছার, আস্ত ডায়নোসরের থাবা চুরি করে বিশ্বে একেবারে শোরগোল ফেলে দিয়েছে এক হাই প্রোফাইল চোর।
আরও শুনুন – রাজস্থানে মিলল ডায়নোসরের পায়ের ছাপ, নতুন কী কী তথ্য জানা গেল?
তা এই ডায়নোসরের থাবা বস্তুটি কী? আসলে এটি একটি ফসিল। যা এতদিন ছিল এরিজোনার এরিক মিলার নামে জনৈক ভদ্রলোকের জিম্মায়। চলতি বছরে তিনি এই ধরনের ফসিলের বিক্রির ব্যবস্থা করেন। সেইমতো একটি প্রদর্শনীও হয়। সেখান থেকেই হাওয়া হয়ে যায় এই ডায়নোসরের থাবা। বৃহদাকায় নখর বলা যায় সেটিকে। পুলিশের কাছে খবর যায় যে, চুরি হয়ে গিয়েছে ডায়নোসরের থাবা। এই ঘটনা গত জানুয়ারির। পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি আর একটি কাজও করেন মিলার। সমস্ত স্থানীয় ডিলারদেরো তিনি বিষয়টিকে জানিয়ে রাখেন। তাঁর অনুমান ছিল, যেই-ই চুরি করুক না কেন, সে এটিকে কোনও না কোনও ডিলারের কাছেই বিক্রি করবে। তাতে এই ধরনের জিনিসের চোরাচালান আটকানো যাবে।
আরও শুনুন – পৃথিবী থেকে যে যে কারণে হারিয়ে গেল ডায়নোসর…
বেশিদিন অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়নি মিলারকে। ফেব্রুয়ারিতে আর একটি খবর আসে যে, এক ব্যক্তি একটি ফসিল বিক্রি করতে চাইছে। এরপর ঘটে এক নাটকীয় ঘটনা। যে ভেন্ডরের কাছে ব্যক্তিটি বিক্রির জন্য গিয়েছিল, তিনি জিনিসটি দেখে বুঝতে পারেন, এটি চুরি করে আনা হয়েছে। মিলারের সঙ্গে ভালোই যোগাযোগ আছে তাঁদের। অতএব গোপনে তিনি খবরটি দিয়ে দেন তাঁকে। এদিকে চোরকে জানানো হয় যে, এটির জন্য মোটা দাম পাবে সে। তবে যিনি কিনতে চাইছেন, তিনি জিনিসটি একবার দেখে নিতে চান। আর সরাসরি বিক্রেতার সঙ্গে কথাও বলে নিতে চান। টাকার অঙ্ক দেখে দোনামোনা করেও রাজি হয়ে যায় বিক্রেতা। দিনক্ষণ স্থির হলে এবার বিক্রেতার সামনে হাজির হন সেই ক্রেতা। তিনি আর কেউই নন, এরিক মিলার, অর্থাৎ ফসিলটির মালিক যিনি, তিনিই। বিপদ বুঝে পালানোর চেষ্টা করে ক্রিস্টোফার থমাস নামে ওই অভিযুক্ত, কিন্তু ততক্ষণে ভেন্ডরদের পাতা জালে জড়িয়ে পড়েছে সে। অতএব আর পালানোর উপায় নেই। আবার খবর যায় পুলিশে এবং শেষমেশ গ্রেপ্তার হয় এই অভিযুক্ত।
বাকি অংশ শুনে নিন।