মানুষ যত বেশি পড়বে তত বেশি জানবে। এই উদ্দেশ্যেই এবার রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘বইয়ের গ্রাম’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিল মহারাষ্ট্র সরকার। যা বাস্তবায়িত করার জন্য ইতিমধ্যেই মোটা টাকা ধার্য করা হয়েছে। কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এই পরিকল্পনা? আসুন, শুনে নিই।
গ্রামের প্রায় সর্বত্রই দেখা যাবে বই। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে তৈরি হবে ছোট ছোট গ্রন্থাগার। এখানে গেলেই যখন ইচ্ছা যত ইচ্ছা বই পড়ার সুযোগ পাবেন যে কেউ। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। তাঁদের লক্ষ্য রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই একটি করে ‘বইয়ের গ্রাম’ বানানোর। যার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে মহারাষ্ট্রের রাজ্য সরকার।
আরও শুনুন: মাছির উপদ্রবে বাপের বাড়ি চলে যান এই গ্রামের বউরা, চিন্তায় অবিবাহিত যুবকরাও
কিন্তু হঠাৎ এমন ভাবনা এল কোথা থেকে?
এ ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের এক মন্ত্রীর দাবি, এমন ভাবনার উৎস ব্রিটেনের এক শহর। ‘হায়-অন-ওয়ে’ (Hay-on-wye) নামে এই শহরটি সারা পৃথিবীতে বইয়ের শহর নামে বিখ্যাত। সেখানকার প্রতিটি রাস্তার মোড়েই একটি করে গ্রন্থাগার রয়েছে। একইসঙ্গে শহরের আনাচেকানাচে রয়েছে একাধিক বইয়ের দোকান। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এই অদ্ভুত শহর দেখতে আসেন। সেই শহরের আদলেই রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে বইয়ের গ্রাম বানাতে চায় মহারাষ্ট্র সরকার। তাঁদের মনে হয়েছে, বিশ্বের দরবারে মারাঠি ভাষার প্রচার হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি রাজ্যের মানুষদের মধ্যে পড়ার অভ্যেস তৈরি করাও একান্তভাবে জরুরি। তাই এমন অভিনব উদ্যোগের কথা ভাবা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে সরকারের তরফে। প্রাথমিক স্তরের কাজও শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আপাতত মহারাষ্ট্রের ৬টি জেলায় এই কাজ শুরুর কথা ভাবা হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে রাজ্যের সবকটি জেলাতেই এই কাজ করা হবে। নির্দিষ্ট করা হয়েছে জেলাগুলির একটি করে গ্রামও। জানা গিয়েছে এই গ্রামগুলিতে তৈরি হবে একাদিক গ্রন্থাগার। একইসঙ্গে প্রায় ১০টি জায়গায় রাখা থাকবে বুকশেলফ। যেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারবেন। তবে গ্রাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি দিকের কথা মাথায় রেখেছে রাজ্য সরকার। মূলত যে গ্রামগুলি পরিচ্ছন্নতা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে পুরষ্কার পেয়েছে সেগুলিকেও রাখা হয়েছে তালিকায়। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের যে গ্রামগুলিতে কোনও তীর্থস্থান রয়েছে বা কোনওভাবে সেখানে পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে সেই গ্রামগুলিতেও গ্রন্থাগার বানানোর কথা ভেবেছে রাজ্য সরকার।
আরও শুনুন: জনমানবহীন, শূন্য কবরও, ‘মৃতদের গ্রাম’ থেকে রাতারাতি উধাও হয়েছিল সবকিছু
প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে সাহায্য চাওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদেরও। তাঁরা যাতে সবরকমভাবে এই মহান উদ্যোগে শামিল হন, সেই অনুরোধই করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারের তরফেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এই কাজে কোনও গাফিলতি করা হবে না। যাবতীয় নির্মাণের জন্য গ্রামগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আপাতত এই উদ্যোগ কতটা সফল হয় তা দেখার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দেশের অন্যান্য রাজ্যও।