বুথ আছে, আছেন বুথকর্মীরাও। ভোট দিতে ভোটারও হাজির হলেন বটে, তবে মাত্র একজন। কী কাণ্ড ঘটল গুজরাটে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোটের গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। জলে স্থলে জঙ্গলে যেখানেই হোক না কেন, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সারতেই হবে, এমনই নির্দেশ দেয় এ দেশের সংবিধান। সেই যেমন ‘নিউটন’ সিনেমায় ঘন জঙ্গলের মধ্যে ভোট করাতে হাজির হয়েছিলেন এক ভোটকর্মী। তেমনই, গুজরাটের এই ঘন জঙ্গলের মধ্যেও ভোট প্রক্রিয়া সারতে হাজির হয়েছিলেন ভোটকর্মীরা। এমনিতে ভোট মানেই তো সাজো সাজো রব। সাধারণত একটি আসনে ভোট দেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। তাঁদের ভোটদানের প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একাধিক কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে কমিশন। কিন্তু এই বুথের গল্পটা অন্যরকম। সেখানে ভোটগ্রহণের সবরকম ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছিল। হাজির হয়েছিলেন বুথকর্মীরাও। তবে ভোট দিতে হাজির হলেন মাত্র একজন। তাহলে কি বাতিল হয়ে গেল গোটা প্রক্রিয়াই? নাকি অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলেন ভোটকর্মীরা? তাহলে বরং খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন:
ভাইয়ের সমর্থনে বাবা, লোকসভায় একলা চলো নীতিতেই জিততে চান দাদা
ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। লোকসভার তৃতীয় দফায় সেখানে ভোটকেন্দ্র ছিল গির অরণ্যেও। সেই গির, যা সিংহ থাকার কারণেই বিখ্যাত। কিন্তু তার জন্য তো আর ভোট স্থগিত করা যায় না। বিশেষ করে সেখানে যখন ভোটারও রয়েছেন। তাই জঙ্গলের তরাইয়ে বনেজ এলাকায় বুথ তৈরি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, ভোট দিতে হাজির হয়েছেন মাত্র একজন ব্যক্তি। তবে তাঁর সেই একটিমাত্র ভোট পড়ার পরেই কমিশনের ঘোষণা, এখানে ভোটদানের হার ১০০ শতাংশ।
আরও শুনুন:
বাড়ির সামনে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকেন তাবড় তাবড় নেতারা, কে এমন থাকে এই বাড়িতে?
ব্যপারটা ঠিক কী? সারা দেশের এত বুথের কোথাওই যেখানে সম্পূর্ণ ১০০ শতাংশ ভোট পড়ে না, সেখানে এই বুথে মাত্র একজন ভোট দেওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এ ঘোষণা করল কমিশন? আসলে, এই বুথ যে বসানো হয়েছিল কেবল ওই একজন ভোটারের জন্যই। গির অরণ্যের মধ্যেই বাস মহান্ত হরিদাসজি উদাসীন-এর। তিনিই ওই এলাকার একমাত্র ভোটার। কিন্তু প্রতিটি একক মানুষের মতকে প্রাধান্য দেওয়াই তো গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত। তাই এই একক মানুষটির জন্যই প্রতি ভোটে এখানে ভোটদানের ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশন। যার ব্যতিক্রম নয় চলতি লোকসভা নির্বাচনও। আর একজন মানুষের ভোটও সযত্নে গ্রহণ করার মধ্যে দিয়েই গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি মনে করিয়ে দিল গুজরাটের এই বুথ।