অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কথা অনেকেই জানি। বৃষ্টির তোড়ে প্রতি বছর বর্ষায়, এই ঘটনা আমাদের চেনা। কিন্তু প্রায় দুই শতাব্দী আগে লন্ডনে এক ভয়াবহ বন্যায় মারা গেছিলেন বেশ অনেক মানুষ। কিন্তু সেই বন্যা হয়েছিল জলের বদলে বিয়ারের। শুনতে উদ্ভট লাগলেও, এই ঘটনা সত্যি।
১৭ অক্টোবর, সাল ১৮১৪। শুনেই মালুম হয় আজ থেকে অন্তত দুই শতাব্দী আগের কথা। এই দিন এক ভয়ানক বিপর্যয় ঘটেছিল, লন্ডন শহরের বুকে সেন্ট গিলেসে। সেই বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন আটজন মানুষের।
কী হয়েছিল সেদিন! এককথায় বললে, বিয়ারের বন্যা। সেদিন টটেনহাম কোর্ট রোডে এক দুর্ঘটনায়, বিয়ারের স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল লন্ডন শহর। আহত হয়েছিলেন আরও অসংখ্য মানুষ। এছাড়াও ওই এলাকায় বহু ঘরবাড়ি ও অন্যান্য নানা জিনিসের চূড়ান্ত ক্ষতি হয়।
আরও শুনুন – ৪০০ বছরে এই গ্রামে জন্মায়নি কোনও শিশু, কেন জানেন?
লন্ডনের দুই রাস্তা, গ্রেট রাসেল স্ট্রিট এবং টটেনহ্যম কোর্ট। এই দুই রাস্তার সংযোগস্থলে ছিল, সেকালের বিখ্যাত বিয়ার প্রস্তুরকারক সংস্থা ‘হর্স সু ব্রিউয়ারি’। কারখানায় ছিল, প্রায় বাইশ ফুট উঁচু, কাঠের তৈরি ফার্মেন্টশন ট্যাঙ্ক। সেখানেই তৈরি হতো মদ। এই ব্রিউয়ারির মদ উৎপাদন এবং মজুত ক্ষমতা ছিল প্রশ্নাতীত। হিসেব শুনলে অবাক লাগবে, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ব্যারেল বিয়ার মজুত থাকত এখানে। ট্যাঙ্কটিকে ঠিক রাখতে, চারধার ঘিরে রাখা হতো বেশ মোটা-মোটা লোহার রিং দিয়ে।
আরও শুনুন – Egg Mountain: কীভাবে ডিম পাড়ে পাহাড়? শুনুন সেই গল্প
ঘটনার সূত্রপাত যেদিন, সেই সতেরো তারিখ বিকেলবেলা ট্যাঙ্ক ধরে রাখে এরকম একটি লোহার রিং চাপ সহ্য করতে না পেরে আচমকা খুলে যায়। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই বেরতে শুরু করে ট্যাঙ্কের মধ্যে মজুত বিয়ার। বিয়ারের স্রোতে তছনছ হয় আরও কয়েকটি ট্যাঙ্ক। অতঃপর বিয়ারের স্রোতে ব্রিউয়ারির দেওয়াল একেবারে ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়। সেই ধারা এমনই খরস্রোতা হয়ে ওঠে যে কারখানায় মজুত আরও কিছু ড্রাম, টিন তছনছ করে একেবারে রাস্তায় এসে পড়ে স্রোত। প্রায় তিন লক্ষ কুড়ি হাজার গ্যালন বিয়ার বেরিয়ে আসে কারখানা থেকে। আর সেই বিপুল পরিমাণ বিয়ারের স্রোতে এলাকা একেবারে ভেসে যাচ্ছিল। এই অঞ্চলের পাশেই ছিল খুব ঘনবসতিপূর্ণ একটি বস্তি।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।