জীবনে সাফল্য আসে কোন পথে? এ প্রশ্নের উত্তর যেমন কঠিন, তেমন সহজও। যাঁরা সফল, তাঁরা খুব সহজেই চিনিয়ে দিতে পারেন সেই সূত্রগুলিকে। যেমন চিনিয়ে দিলেন প্রখ্যাত শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা। এক খুদের মাছ ধরার ভিডিও দেখিয়েই তিনি বলে দিলেন, জীবনে সফল হতে গেলে ঠিক কী কী প্রয়োজন। আসুন শুনে নিই সে-কথা।
সাফল্য – মাত্র তিন অক্ষরের শব্দ। কিন্তু কে না জানে, তাকে আয়ত্ত করা ঠিক কতখানি কঠিন! বহু কোর্স, সেমিনার, বক্তব্যের স্রোত বয়ে যায় শুধু এই একটি বিষয়কেই কেন্দ্র করে। অথচ খেয়াল করলে দেখা যাবে, সাফল্যের সূত্রগুলি যে খুব জটিল, তা কিন্তু নয়। আর তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বইয়ের পাতায় শুধু নয়, আমাদের চোখের সামনেই। প্রতিনিয়ত বহু মানুষের প্রাত্যহিক যাপনের ভিতরই লুকিয়ে আছে সাফল্যের মন্ত্র। দরকার শুধু, অবহেলা করে সেইসব জিনিসগুলোকে সরিয়ে না রেখে, দৃষ্টিভঙ্গি পালটে তা মন দিয়ে দেখা।
আরও শুনুন: বিক্রি করতে চান নিজের ‘আত্মা’, যুবকের সিদ্ধান্তে হতবাক নেটদুনিয়া
ঠিক এই কথাটিই ধরিয়ে দিলেন প্রখ্যাত শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রা। একটি সাধারণ ভিডিও-র মধ্যে যে কত অসাধারণ বার্তা লুকিয়ে থাকতে পারে, সে কথাই বোঝালেন তিনি। কী ছিল ওই ভিডিওতে? এক খুদে চলেছে মাছ ধরতে। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে সে প্রথাগত ছিপকে বদলে নিয়েছে একটি যন্ত্রে। পুলির যে বিশেষ যান্ত্রিক সুবিধা, তাই-ই সে কাজে লাগিয়েছে। অর্থাৎ তার ছিপটি হয়ে গিয়েছে একটি পুলি। এবার সে লম্বা ডোরের মাথায় আটকে দিয়েছে একাধিক বঁড়শি। প্রত্যেকটাতে একটি করে টোপ। পুলিটিকে বা তার বিশেষ ছিপটিকে সে নদীর নরম মাটিতে বেশ শক্ত করে গেঁথে নেয় প্রথমে। তারপর টোপসহ ডোরকে ছুড়ে দেয় নদীর মাঝখানে। প্রত্যাশিত ভাবেই খাবারের লোভে এসে টোপ গেলে বড় বড় মাছেরা। তখনই পুলি উলটোদিকে ঘুরতে থাকে। খুদে ছুটে এসে পুলিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়, আর বড় মাছ সমেত ডোর এগিয়ে আসতে থাকে তার দিকে। এক তো, এই ব্যবস্থায় সে একসঙ্গে একাধিক মাছ ধরতে পারছে যা হয়তো ছিপের সাহায্যে ধরা সম্ভব হত না। দ্বিতীয়ত, একটি ছিপ এত বড় মাছের ভার বহন করতে পারত না। আর খুদের শক্তিতেও তা কুলোত না। বড় বড় কয়েকটা মাছকে ছিপের সাহায্যে টেনে তোলা চাট্টিখানি কথা নাকি! কিন্তু ব্যবস্থার সামান্য বদলেই সে এই কাজটি হাসিল করেছে অতি সহজে।
আরও শুনুন: সময় গণনায় সূর্য সহায়, এখনও নির্ভুল সময় জানায় কোনারকের গোপন সূর্যঘড়ি
এই ভিডিও দেখিয়েই আনন্দ মাহিন্দ্রা বলছেন, এর মধ্যে তিনটি শেখার জিনিস আছে। প্রথমটি হল, ডিটারমিনেশন বা সংকল্প। অর্থাৎ, যে কাজটি করতে চলেছি তা করতেই হবে, এই জেদ এবং সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা। দ্বিতীয় শিক্ষণীয় বিষয় হল, ইনজেনুইটি অর্থাৎ উদ্ভাবন কৌশল। অর্থাৎ যে কাজটি করতে হবে তা কীভাবে সহজে করা যায়, সেই পদ্ধতি খুঁজে বের করা। আর তৃতীয় হল, পেসেন্স বা ধৈর্য। অর্থাৎ ফলের জন্য তাড়াহুড়ো না করে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা। এই তিনের যোগফলে কী আসে? আসে সাফল্য। যা পেয়েছে ওই খুদেটি। প্রবীণ শিল্পপতির তাই বক্তব্য, এই ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠা পৃথিবীতে এই ভিডিওটি যেন একখানা ছোটগল্পের মতোই। যা অল্প কথায় আমাদের বুঝিয়ে দেয় অনেককিছুই। এমনকী শিখিয়ে দেয়, জীবনে সাফল্যের মন্ত্রকেও।