বাতাসে মিশেছে বিষ। শ্বাস নেওয়া দায়। বাইরে বেরোলেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। ঠিক এমনই অবস্থা পাকিস্তানের লাহোর শহরের। ঠিক কোন পদ্ধতিতে স্বাভাবিক হতে পারে সেখানকার পরিস্থিতি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঘন অন্ধকারে ঢাকা চারদিক। বেলা গড়ালেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না সেইভাবে। আসলে, কালো ধোঁয়ার বেড়াজাল ঘিরে ফেলেছে গোটা শহর। তার জেরেই অন্ধকার। সম্প্রতি এমন চেহারা হয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহরের। জুটেছে বিশ্বের দূষিততম শহরের তকমা। একবার নয়, এই নিয়ে দুবার এমন স্বীকৃতি পেল এই শহর।
পরিবেশ দূষণ বিশ্বজনীন সমস্যা। পরিবেশবিদরা নিয়মিত দূষণ রোধে প্রচার চালান। তাতে লাভের লাভ হচ্ছে না বললেই চলে। কারণ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে দূষণ। বিশ্বউষ্ণায়নের মতো সমস্যাও বড় হচ্ছে ধীরে ধীরে। আরও অনেক কিছুই এই কারণে মাথা চাড়া দিচ্ছে যা আগামী পৃথিবীর জন্য মোটেও হিতকর নয়। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও যে স্বাভাবিক তা বলা যাচ্ছে না। অন্তত পাকিস্তানের দিকে তাকালে এমনটা মনে হতেই পারে। সে দেশের সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র লাহোরের বাতাসই সবথেকে দূষিত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। সেখানকার বাতাসের গুণগত মান বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ৬৯০। এমনিতে এই মাত্রা ৪৫০ ছাড়ালেই বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয়। সেখানে পাকিস্তান ৭০০-র দোরগোড়ায়। এমন তথ্য সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে সে দেশের প্রশাসন। ইতিমধ্যেই নাগরিকদের জন্য একাধিক নিয়ম জারি করা হয়েছে। বাইরে গিয়ে হাঁটাচলা করতেও মানা করা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সমস্যা আরও বাড়তে পারে শীতকালে। এশিয়ার দেশ হিসেবে পাকিস্তানেও ডিসেম্বর থেকেই ঠাণ্ডার প্রভাব বাড়তে শুরু করবে। তাতে বাতাস ভারী হবে আরও। এই সময় দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগে দূষণের প্রভাব কমাতে কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানো হয়েছিল লাহোরে। এবারেও তেমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, মনে করছেন কেউ কেউ। তবে প্রশাসন এখনও অবধি তেমন কিছু ঘোষণা করেনি। আপাতত জনগণকে সচেতন করার দিকেই নজর পাক প্রশাসনের। সাধারণ নাগরিকদের বোঝানো হচ্ছে বাইরে বেরোলে কী কী বিপদ হতে পারে। একইসঙ্গে কলকারাখানার ধোঁয়ায় নজরদারী চলছে। তৈরি করা হয়েছে ‘অ্যান্টি স্মগ স্কোয়াড’। দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে এই বাহিনী। অবিলম্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই হবে। এই লক্ষেই জোরকদমে শহর শুদ্ধ করার কাজে নেমেছে পাক প্রশাসন।