মোনালিসা ছবিটি চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। কিন্তু জানেন কি ছবিতে থাকা মহিলার ভ্রূ নেই? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এর সঙ্গে জড়িয়ে একাধিক মিথ। সত্যিই কি শিল্পী ভ্রূজোড়া আঁকতে ভুলে গিয়েছিলেন? নাকি ইচ্ছা করেই এমনটা করা হয়েছিল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিশ্ববিখ্যাত ছবির তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে মোনালিসার নাম! এই ছবি যেমনই সুন্দর তেমনই রহস্যময়। প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত এই ছবি দেখার জন্য প্রতদিন ভিড় জমান দেশ বিদেশের মানুষ। কিন্তু ছবির মধ্যে লুকিয়ে থাকা রহস্য সেইভাবে উদঘাটন হয়নি এখনও। স্রেফ কিছু ধারণা করে নেওয়া হয়েছে ছবির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মিথগুলির ব্যাখ্যা হিসেবে।
আরও শুনুন: দুধ থেকে মাংস, দেশে নিষিদ্ধ একাধিক খাবার! কেন জানেন?
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা এই ছবি সে যুগে রীতিমতো সাড়া ফেলেছিল। যা এখনও অটূট রয়েছে বলা যায়। ছবিটির এমনই এক মায়া জড়িয়ে, যা ভাষায় ব্যক্ত করা কঠিন। নেটদুনিয়ার দৌলতে এ ছবি এখন সকলেরই চেনা। কিন্তু এতদিন তা ছিল না। তাই প্যারিসে গিয়ে এই ছবি দেখে আসতেন মানুষজন। ছবিটির মূল বৈশিষ্ট্য মোনালিসার চোখ আর হাসি। বলা হয়, যেদিক থেকেই মোনালিসার চোখের দিকে তাকানো হোক, মনে হবে যেন দর্শকের দিকে তাকিয়ে আছে মোনালিসা। হাসিটিও ভারি অদ্ভুত। অপ্রাকৃত নয়, অথচ সাধারন কারও পক্ষে ওমন স্মিত হাসি প্রায় অসম্ভব। সেই সঙ্গে ছবিটিতে রঙের ব্যবহার, চেহারার গঠন সবকিছুই এমন অনন্য, যে একবার দেখলে চোখ ফেরাতে ইচ্ছা করে না। বিশ্ববিখ্যাত এই ছবি চুরির চেষ্টাও হয়েছে। শোনা যায়, একবার মিউজিয়াম থেকে এই ছবি চুরিও যায়। পরে অবশ্য উদ্ধারও করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ছবির প্রতিলিপি ছড়িয়েছে চারিদিকে। কিন্তু ছবির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য ম্লান হয়নি এতটুকু।
আরও শুনুন: সংসদে গরহাজির থাকলেই বাতিল হতে পারে পদ! আর কোন নিয়ম মানতে হয় সাংসদদের?
শোনা যায়, এই ছবির মহিলার বাস্তব অস্তিত্বও ছিল। তাঁকে দেখেই ছবি আঁকেন ভিঞ্চি। কিন্তু সেই মহিলা আসলে কে তা সঠিকভাবে বলতে পারে না কেউই। এদিকে মোনালিসার ছবিটি ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, মহিলার ভ্রূজোড়া নেই। বাস্তবে এমন মানুষ দেখতে পাওয়া কঠিন। বলা হয়, ভ্রূ সম্পূর্ণ মুছে ফেলা কিছু কিছু দেশে আইনত অপরাধ। তাহলে কি ভিঞ্চি ভ্রূ আঁকতে ভুলে গিয়েছিলেন? সে যুক্তিও খাটে না, কারণ ছবিটি এমনই যত্ন ভিঞ্চি করেছিলেন যে, এমন ছোট ভুল থাকা অস্বাভাবিক। তাহলে ধরা নেওয়া যেতে পারে শিল্পী ইচ্ছা করেই ভ্রূ আঁকেননি। সেক্ষেত্রে অবশ্য বিশেষ যুক্তি আছে। শোনা যায়, ছবিটি তৈরির সময় অর্থাৎ প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে যখন শিল্পের নবজাগরণ চলছে তখন মহিলাদের মধ্যে অদ্ভুত কিছু ফ্যাশনের চল ছিল। যার অন্যতম, ভ্রূ না রাখা। ইচ্ছা করেই সে যুকের বহু মহিলা ভ্রূ চেঁচে ফেলতেন বলে শোনা যায়। এমনই কোনও মহিলাকে ভিঞ্চি মোনালিসার ছবি এঁকেছিলেন। তাই তারও ভ্রূ নেই, এমনটাও মনে করেন অনেকে। তবে এমনটাও শোনা যায়, প্রথমে ভিঞ্চি মোনালিসার ভ্রূ এঁকেছিলেন পরে মুছে দেন। কেন মুছেছিলেন সেই ব্যাখ্যা কারও কাছেই নেই। আবার কেউ বলেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছবিটি থেকে ভ্রূ মুছে গিয়েছে। সেখানেও অবশ্য অনেকে প্রশ্ন তোলেন, স্রেফ ভ্রূজোড়া কীভাবে মুছল! সবমিলিয়ে এই রহস্য যে সহজে সমাধান হওয়ার নয় তা বলাই বাহুল্য। এই কদিনে এইসব ব্যাখ্যাই সামনে এসেছে, ভবিষ্যতে আরও ব্যাখ্যা আসতেই পারে। তাতে রহস্যের সমাধান হোক না হোক, মোনালিসার খ্যাতি এতটুকু কমবে না।