আস্ত একটা গ্রাম। তবে বাসিন্দা মাত্র একজন। না আছে পরিবারের কেউ, না আছে পাড়া প্রতিবেশী। অবশ্য এভাবেই দীর্ঘদিন কাটিয়ে দিলেন এই মহিলা। কার কথা বলছি? কোথায় রয়েছে এমন গ্রাম? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শহরের তুলনায় গ্রামের জনসংখ্যা কম। এমনটা অনেকেই মনে করেন। বাস্তব ছবিটাও হয়তো খুব একটা আলাদা হবে না। কারণ শহরের মতো এত কোলাহল, এত যানজট, ভিড় কিছুই গ্রামের মানুষকে সহ্য করতে হয় না। কিন্তু তাই বলে গোটা গ্রামে মাত্র একজন বাসিন্দা?
:আরও শুনুন:
রাজা সবারে দেন মান! কৃষকদের মাথায় ছাতা ধরলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী, ব্যাপারটা কী?
শুনতে অবেক লাগলেও সত্যি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা প্রদেশে রয়েছে এমনই এক গ্রাম যেখানে মাত্র একজন বাসিন্দা। গ্রামের নাম মোনোবি। চারিদিক সবুজে ঘেরা এই গ্রামে আকার খুব একটা ছোট নয়। চাইলেই এখানে কয়েকশো মানুষ থাকতে পারেন। কিন্তু না, এই গ্রামে থাকেন মাত্র ১ জন। আর এই ঘটনা নতুন নয়। কয়েক দশক ধরে গ্রামে বাস করছেন এলসি এলার। বছর ৮৬-র এই প্রোঢ়ার গ্রামের সব কাজ একাই করেন। গোটা গ্রামে না আছে কোনও বাজার-দোকান, না আছে কোনও হাসপাতাল! কিছু সমস্যা হলে অন্যত্র ছুটতে হয় এলসি-কে। গ্রামের প্রশাসনিক কাজও তাঁকেই সামলাতে হয়। বিদেশে এইসব ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি রয়েছে। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত চালানো, গ্রামের রাস্তা-ঘাট দেখভাল করা বা অন্যান্য সব কাজই করতে হয় একা বৃদ্ধাকে। তাতে অবশ্য তেমন সমস্যা নেই তাঁর। বিগত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গ্রামে একাই থাকেন তিনি। নিজের মতো করে সবটা গুছিয়ে নিয়েছেন। সরকারের তরফে অন্যান্য সাহায্য পান। তাতে দু-বেলা খাবার জোগাতে সময়স হয় না এলসি-র। এছাড়া অনেকেই গ্রামে ঘুরতে আসেন। তাঁদের সঙ্গে ঘুরেই সারাদিন কেটে যায় তাঁর।
:আরও শুনুন:
দড়ি টানাটানি থেকে গরুর গাড়ির রেস, সব কিছুই হাজির ভারতের নিজস্ব অলিম্পিকে
যদিও প্রথম থেকেই এই গ্রাম এমন, তা নয়। শোনা যায়, ১৯৩০ সালে এই গ্রামে ১২৩ জন বাসিন্দা ছিলেন। ধীরে ধীরে অন্যত্র চলে যেতে থাকেন গ্রামের বাসিন্দারা। এভাবেই ১০৮০ সালে সংখ্যাটা এসে দাঁড়ায় ১৮ জন-এ। ২০০০ সালে এই গ্রামে স্বামীর সঙ্গে আসেন এলসি। তখন থেকেই এই গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ২০০৪ সালে স্বামী মারা গেলে এলসি একা হয়ে যান। তবে অন্যদের মতো গ্রামে ছেড়ে চলে যাননি। বয়সজনিত সমস্যার তোয়াক্কা না করে নিশ্চিন্তে নিজের মতো দিন কাটান। কোনও সমস্যা হলেও তা একাই সামলে নেন। পর্যটকরাও এলসির এই দিন যাপন দেখতে নিয়মিত গ্রামে হাজির হন। তাতে এতটুকু বিরক্ত হন না এলসি। সবাইকে ঘুরিয়ে দেখান নিজের গ্রাম। আগামী দিনেও একইভাবে থাকতে চান এলসি। ইতিমধ্যেই তাঁর গ্রাম বিশ্বের সবথেকে ছোট গ্রামের তকমা পেয়েছে। আকারের দিক থেকে না হলেও, বিশ্বের আর কোনও গ্রামেই মাত্র ১ জন বাসিন্দা নেই। তাই এই গ্রামকে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।