হাঁটু মুড়ে বসে প্রেমিক। সামনে দাঁড়ানো প্রেমিকার গাল লজ্জায় লাল। এরপরেই ভেসে আসবে সেই তিনটি অমোঘ শব্দ। যা পুরনো হয়েও পুরনো হয় না কিছুতেই। হ্যাঁ, রুপোলি পরদার দৌলতে প্রেম প্রস্তাব দেওয়ার এই দৃশ্য আমাদের সকলেরই চেনা। কিন্তু অন্য কোনোরকম ভাবে প্রোপোজ করতে চান কি আপনার কাছের মানুষটিকে? তাহলে শুনে নিন বিশ্বজোড়া প্রেমনিবেদনের এই রীতিগুলি।
হাঁটু মুড়ে বসে প্রেম প্রস্তাব দেওয়ার রীতি এসেছে মূলত পাশ্চাত্য সংস্কৃতি থেকেই। ভিক্টোরিয়ান যুগের সমাজে মেনে চলতে হত সৌজন্য প্রকাশের হাজারও খুঁটিনাটি। আর তার মধ্যেই পড়ত হাঁটু মুড়ে বসে সম্মান জানানোর প্রথা। বিশেষ করে অভিজাত নারীদের সামনে এভাবেই শিভ্যালরি প্রকাশ করত মধ্যযুগের যোদ্ধারা। সুতরাং প্রেম কিংবা বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার সময় সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ছিল এই ভঙ্গিটিই। আর সেই রীতিই এখন সারা বিশ্বে প্রোপোজ করার রীতি হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিন্তু এই চেনা ভঙ্গি ছাড়াও যে প্রেমনিবেদনের আরও হাজারও রীতি ছড়িয়ে আছে বিশ্ব জুড়ে, জানেন কি সে কথা?
আরও শুনুন: অভিনব উদ্যোগ… ঋতুস্রাবের ট্যাবু কাটাতে ভারতের ৭ রাজ্যে আয়োজন উৎসবের
যেমন ধরুন চিনের কথাই। এখানে যদি কেউ তার প্রিয়জনকে বিয়ে করতে চায়, তাহলে একটা অদ্ভুত কাজ করতে হয় তাদের। একটি মুরগিকে কেটে তার যকৃৎ পরীক্ষা করতে হয়। যদি সেটি ভালো থাকে, তবেই নাকি পাকা করা যায় বিয়ের তারিখ।
ঘানাতে আবার কেবল প্রেমিকাকে প্রোপোজ করা চলে না। সোজা তার বাড়ির দরজায় গিয়ে কড়া নাড়তে হয়। তারপর রীতিমতো ঘোষণা করতে হয় প্রেমপ্রস্তাবটি।
আরও শুনুন: পূরণ হয়নি মনস্কামনা, মন্দিরে ঢুকে ভগবানকেই গুঁড়িয়ে দিয়ে এলেন ভক্ত
বড়াইয়ের হাত দিয়ে পান পাঠিয়ে নাকি রাধাকে প্রেম নিবেদন করেছিলেন কৃষ্ণ। আর কেনিয়ার একটি উপজাতির পুরুষেরা বিয়ের প্রস্তাব দিতে চাইলে একগুচ্ছ পুঁতি পাঠায় মেয়েটির কাছে। সেই পুঁতি গ্রহণ করা মানে প্রস্তাবে সম্মতি জানাল মেয়েটি।
ফিজি দ্বীপেও রয়েছে প্রোপোজ করার সময় উপহার দেওয়ার চল। তবে তা আংটিও নয়, পুঁতিও নয়, এমনকি সুন্দর ফুল পর্যন্ত নয়। প্রেমিকাকে নয়, তার বাবাকে তিমির দাঁত পাঠিয়ে বিয়ের সম্মতি চাওয়াটাই এই অঞ্চলের প্রাচীন রীতি।
প্রেমনিবেদনের একাধিক গল্প তো শুনলেন। শেষ করা যাক একেবারেই অন্যরকম প্রোপোজ করার আরেক গল্প দিয়ে। রীতি মেনে প্রোপোজ করার বিষয়টি তো একেবারেই পুরুষদের জন্য বরাদ্দ। মেয়েদের ভূমিকা কেবল শ্রোতার। কিন্তু আয়ারল্যান্ডে প্রচলিত রয়েছে এক অন্যরকম প্রেমনিবেদনের রীতি, যা লিপইয়ার প্রোপোজাল রীতি বলেই পরিচিত। পুরুষের প্রেমনিবেদনের ভরসায় মেয়েদের অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করে থাকতে দেখে পঞ্চম শতকে সন্ত ব্রিজেট রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েন। তখন দীর্ঘ আলোচনার পর সন্ত প্যাট্রিক ঘোষণা করেন, এবার থেকে মেয়েরাও প্রোপোজ করতে পারবে। তবে সেটা কেবল লিপইয়ারেই। আর পুরুষটি যদি প্রস্তাব নাকচ করে? তাহলে দিতে হবে জরিমানা- একটি চুম্বন, কিংবা একজোড়া গ্লাভস।