মন্দিরে বিয়ে কোনও নতুন ব্যাপার নয়। বাড়ির অমতে পালিয়ে বিয়ে করলে তো কথাই নেই। কিন্তু এই মন্দিরে বাড়ির অনুমতিতেই বিয়ে সারতে আসেন শয়ে শয়ে যুগল। কথিত আছে, এখানে বিয়ে হলেই নাকি সারাজীবন অটুট থাকবে সম্পর্ক। কোন মন্দিরের কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
এদেশে হনুমান মন্দিরের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। রাম মন্দির উদ্বোধনের পর সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে বইকি। তবু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এমন কিছু হনুমান মন্দির যা বেশ প্রাচীন এবং বিভিন্ন অদ্ভুত কারণে প্রসিদ্ধ। তেমনই এক হনুমান মন্দির রয়েছে আহমেদাবাদে। যা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য বিখ্যাত।
আরও শুনুন: কালো কাপড়ে ঢাকা চোখ, বাইকে তেলেঙ্গানা থেকে অযোধ্যা যাত্রা দুই জাদুকরের
ভাবছেন তো এমনটা কীভাবে সম্ভব?
তাহলে খুলেই বলি। মন্দিরে বিয়ে হচ্ছে কল্পনা করলেই, সবার আগে মাথায় আসে কোনও দেবীর মন্দিরের কথা। কারণ বিয়ে মানেই সেখানে সিঁদুর আবশ্যক। আর সেটা কোনও দেবীর মন্দির হলেই সুবিধা। তবে আহমেদাবাদে সেই ছবি খানিকটা আলাদা। এখানকার যুগলরা বিয়ের জন্য আদর্শ হিসেবে মনে করেন মেঘানি নগরের এক হনুমান মন্দিরকে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এখানে রামভক্ত হনুমানকে সাক্ষী রেখেই নতুন জীবনের জন্য অঙ্গীকার বদ্ধ হন যুবক-যুবতীরা। বলা ভালো, এমনটাই প্রচলিত রয়েছে যে এই মন্দিরে বিয়ে করলে চিরকাল অটুট থাকবে সম্পর্ক। তাই প্রতিদিন মন্দিরে ভিড় জমান শয়ে শয়ে যুগল। সঠিক হিসাব না মিললেও অনেকেই বলেন এখনও অবধি এই মন্দিরে ১৫ হাজারেরও বেশি বিয়ে হয়েছে। আর আশ্চর্যের বিষয় সেই সমস্ত দম্পতিই সুখে শান্তিতে সংসার করেছেন। স্থানীয়দের কাছে মন্দিরটির নামই হয়ে গিয়েছে, ‘লগনিয়ে হনুমান মন্দির’। যা আদতে বিয়ের কথা বলে।
আরও শুনুন: উর্দুতে রামায়ণ! রামের মহিমা প্রচার হয়েছে এই ভাষাতেও, এখনও হয় থিয়েটার
আসলে, এই মন্দির ঘিরে এমন জনশ্রুতি তৈরি বিশেষ এক কারণ রয়েছে। মন্দির থেকে কয়েক পা হেঁটেই আদালত। সেখানে প্রায় রোজই বিয়ে সারতে আসেন যুগলরা। কিন্তু হিন্দুধর্মে আদালতের রেজিস্ট্রি ম্যারেজের পরও একাধিক নিয়ম কানুন থাকে। সেক্ষেত্রে মন্দিরের মতো ভালো জায়গা আর হয় না। কাছাকাছি মন্দির বলতে এই হনুমান মন্দিরই। তাই এখানে এসে শাস্ত্রমতে বিয়ে সারতেন দম্পতিরা। তাঁদের মধ্যেই অনেকে নিজেদের সুখী সংসারের কারণ হিসেবে মনে করতেন এই হনুমান মন্দিরের আশীর্বাদ। সেখান থেকেই কথা ছড়ায়। যার ফলে, বর্তমানে এই মন্দিরে বিয়ের জন্য সময় পাওয়া ভার। শুধু স্থানীয়রা নন, বাইরের রাজ্য থেকেও অনেকেই এই মন্দিরে বিয়ে সারতে আসেন। এমনকি হিন্দু-মুসলিম বিয়েতেও কোনও বাধা নেই। তাই প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েই হোক, কিংবা বাড়ির অনুমতি থাকুক, বিয়ের জন্য সেরা ঠিকানা হিসেবে অনেকেই বেছে নেন আহমেদাবাদের এই হনুমান মন্দিরটিকে।