ইনিও ফড়ণবিস। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে বর্তমান প্রজন্মের কেউ নন। প্রায় ২৫০ বছর আগে, এঁর দেখানো পথেই নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছিল মারাঠাভূম। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সালটা ২০১৯, এমনই ডিসেম্বর মাস। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথ নিয়েছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। ঘটনার মাত্র চারদিন পেরোতেই বাধ্য হলেন ইস্তফা দিতে। জীবনের সেই দিনটা ভোলেননি দেবেন্দ্র! কথা দিয়েছিলেন ফিরে আসার, এসেওছেন। পাঁচ বছর পর আবারও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদে সেই দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। তাঁর প্রত্যাবর্তনের কাহিনি সকলের মুখে মুখে। একইসঙ্গে চর্চায় ফিরেছেন আরও এক ফড়ণবিস, যিনি না থাকলে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে কয়েকটা অধ্যায় হয়তো লেখাই হত না।
কথা বলছি, নানা ফড়ণবিস সম্পর্কে। ২৫০ বছর আগে, এই ফড়ণবিশকে নিয়েও কম চর্চা হয়নি। স্রেফ মহারাষ্ট্র নয়, গোটা দেশেই তাঁকে একডাকে চিনত। বিশেষ করে ব্রিটিশ সরকার। পেশোয়াদের সাম্রাজ্যে নানা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অনেকের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন চাণক্য। এমনই বুদ্ধিমত্তা আর দূরদৃষ্টি ছিল তাঁর। যদিও তাঁকে ঘিরে বিতর্ক কম নেই। শোনা যায়, তাঁর কড়া শাসন সহ্য করতে না পেরে আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেউ কেউ। সমস্ত বিতর্ক ছাপিয়ে যায় দেশের তথা মহারাষ্ট্রের প্রতি তাঁর অবদানে। সেই আমলে ব্রিটিশদের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামা মুখের কথা ছিল না। তবে নানা সেই অসাধ্য সাধন করেছিলেন। স্রেফ ব্রিটিস নয়, মহারাষ্ট্রের উপর আসা সবরকম আক্রমণ রুখতেই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন নানা। তাঁর আমলে প্রভূত উন্নতি হয় মারাঠাভূমের। এমনকি শত্রুদেরও বুদ্ধিবলে নিজের দলে টেনেছিলেন নানা। তিনি বুঝিয়েছিলেন কীভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে। ১৭৬১ সালের পানিপথের যুদ্ধে হার, পরিস্থিতি অনেকটা বদলে দেয়। নানা পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশদের পক্ষে মারাঠাভূমে আক্রমণ আরও সহজ হয়। সেই নিয়ে ঐতিহাসিক মহলেও বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা পর্বে এই ফড়নবিশের অবদান যে কম নয় তা বলাই বাহুল্য।
২৫০ বছর পর আবারও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে অন্য ফড়ণবিস। ফলত নতুন করে চর্চায় ফিরেছেন নানা। এবার আর স্বাধীনতার প্রসঙ্গ নেই। প্রয়োজন নেই নতুন কোনও বিপ্লবের। তবে দক্ষ প্রশাসনে দেবেন্দ্র কতটা তাঁর পূর্বপুরুষের মান রাখতে পারবেন তা দেখবে গোটা দেশের মানুষ।