চাকরি পেতে গেলে পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। দিতে হবে না কোনও ইন্টারভিউ-ও। স্রেফ জন্মাতে হবে সঠিক সময়। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এই সংস্থা জন্মসময়, রাশিচক্র বিচার করেই নতুন কর্মী নিচ্ছে। নেপথ্যে কী কারণ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথায় আছে, লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে! অর্থাৎ যে যত ভালো করে পড়াশোনা করবে, তাঁর ভবিষ্যৎ তত সুন্দর হবে। এমনটাই মোটামুটি প্রচলিত সত্যি। ব্যতিক্রম চিনের এই সংস্থা। এখানে চাকরি পাওয়ার জন্য যোগ্যতা বা কর্মদক্ষতার প্রয়োজন নেই। ভাগ্য সহায় হলে এমনিই কপালে মোটা টাকা বেতনের চাকরি জুটবে।
:আরও শুনুন:
বর্শা মানেই জ্যাভলিন! যুধিষ্ঠিরের সঙ্গে নীরজের তুলনা নেটদুনিয়ার, সত্যিই কি তাই?
ভাগ্যে না থাকলে হবে না, এই বুলি অনেকেই আওড়ান। কেউ আবার ভাগ্যফলে বিশ্বাস করেন না। পরিশ্রমের জোরেই নিজেকে প্রমান করতে চান তাঁরা। একথা অস্বীকারের উপায় নেই, পরিশ্রমের বিকল্প হয় না। তাই বলে, ভাগ্য বলে সত্যিই কি কিছু নেই? তর্কের বিষয়। এ ব্যাপারে নানা মুনির নানা মত। কিন্তু চিনের এই সংস্থায় ভাগ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। এখানে ভাগ্য বিচার করেই দেওয়া হয় চাকরি। আবেদন জানাতে গেলে উল্লেখ করতে হবে রাশি। সংস্থার নিয়মে যদি সেই রাশির মান্যতা থাকে তবেই মিলবে চাকরির সুযোগ। হতেই পারে, প্রার্থী যোগ্য নয়। কিংবা তার কর্মদক্ষতাও তেমন নেই। সেইসব কিছু চাপা পড়ে যাবে প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট রাশির জাতক হন। শুধু তাই নয়, জন্ম তারিখও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সবকিছু মিলে গেলে তবেই মিলবে চাকরি।
:আরও শুনুন:
ঠিকানা আছে, প্রাপক কোথায়! চিঠি নিয়ে মৃত্যুপুরী ওয়ানড়ে ঘুরছেন ডাকহরকরা
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন নিয়মের নেপথ্যে কারণ কী?
এমন নিয়ম জারি করেছে চিনের সানশিং ট্রান্সপোর্টেশন। এর আগে কম বেতনে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল চিনের এই সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই অর্থে নিজেদের নিয়ম বদলায়নি সংস্থা। অন্যান্য সংস্থায় যে পরিমাণ কাজ করে ১ লক্ষ টাকা বেতন মেলে, এই সংস্থা সেখানে অর্ধেক বেতনও দেয় না। এর মধ্যেই সংস্থা সামনে আনল ভাগ্যের বিচারে চাকরি দেওয়ার নিয়ম। নেপথ্যে অবশ্য বিশেষ যুক্তিও দিয়েছেন সংস্থার কর্নধার। চিনে রাশিচক্রের যে নিয়ম মানা হয়, তাতে বছরের গুরুত্ব সর্বাধিক। অর্থাৎ কোন বছরে জন্ম হচ্ছে, সেই অনুযায়ী কারও স্বভাব, চরিত্র, ভাগ্য গণনা হয়। মোট ১২ টি রাশি রয়েছে। আর সেইসঙ্গে রয়েছে অ্যানিমাল সাইন। একদিকে উগ্র ড্রাগন, অন্যদিকে ভিতু র্যাবিট, এমনই বৈপরিত্য দেখা যায় চীনা গণনাচক্রে। সেই প্রসঙ্গেই সংস্থার দাবি, কারও অ্যানিম্যাল সাইন যদি ‘ডগ’ হয়, তাহলে এই সংস্থায় আবেদনই করা যাবে না। আবার কেউ যদি ড্রাগন গোত্রের হন তাহলে কিছু না করেই চাকরি পাবেন। আসলে, সংস্থার মালিক ড্রাগন গোত্রের। তাই কর্মীদেরও একই গোত্রের চেয়েছেন তিনি। নাহলে, কিছুতেই মতের মিল হবে না। এমনটাই মনে করেন সংস্থার কর্ণধার। আর সেই সমস্যা মেটাতেই, চাকরির দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশিচক্রের বিচারকেই মান্যতা দিয়েছেন তিনি। যদিও এভাবে অনেক অযোগ্য প্রার্থী চাকরি পাবেন। সে নিয়ে এতটুকু ভাবনা নেই মালিকের। মতের মিল হলে কাজ ঠিক হয়ে যাবে, তাই রাশি মিলিয়ে নিজের সমগোত্রের প্রার্থীদেরই চাকরি দিতে চেয়েছেন তিনি।