কাজের চাপে সারাদিন বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হয়নি। এদিকে বাড়ি ফিরে কিছুতেই ঘুম হচ্ছে না। ভাবছেন তো এমনটা অস্বাভাবিক ব্যাপার! তবে, জাপানের বাসিন্দাদের কাছে এটাই স্বাভাবিক। বাড়িতে নয়, সে দেশের অধিকাংশ মানুষ অফিসের ডেস্কে ঘুমোতে পছন্দ করেন। তবে স্রেফ জাপান নয়, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ঘুমানোর এমনই আজব সব নিয়ম। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঘুমোতে প্রায় সকলেই ভালোবাসেন! তাই বলে সুযোগ পেলেই যে ঘুমিয়ে পড়বেন, এমনটা সবাই পারেন না। কারণ ঘুমের জন্য দরকার উপযুক্ত পরিবেশ। এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা নিজের বাড়ির বিছানা ছাড়া ভালো করে ঘুমোতেই পারেন না। শুধু তাই নয়, ঘুমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হাজারও নিয়মকানুন। যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের।
আরও শুনুন: ভরপেট খেয়ে আয়েশে ঘুম! বিছানা পেতে খাদ্যরসিকদের জন্য অভিনব ব্যবস্থা রেস্তরাঁয়
প্রথমেই বলতে হয় স্পেনের কথা। ভাতঘুম যতই বাঙালির পছন্দের হোক, এমনটা নিয়ম মেনে করে থাকেন স্পেনের লোকজন। ভারী কিছু খাওয়ার পর ঘুমানো সে দেশের খুবই পছন্দের এক নিয়ম। স্পেনে এই ঘুমকে বলা হয় ‘সিয়েস্তা’। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়ম হল ফ্যান চালিয়ে ঘুমানো যাবে না। আসলে ঘুমোনোর সময় পাখা চললে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। সে দেশে এমন কাণ্ড ঘটেওছে বহুবার। তাই একবার নিয়ম করে ফ্যান চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঘুমের সময়। ফ্রান্সের ঘুমের নিয়ম আবার অন্যরকম। সেখানে সারাদিন না ঘুমিয়ে স্রেফ রাতে ঘুমানোর নিয়ম। এই নিয়মের বাইরে নয় খুদেরাও। এমনকি কয়েক মাস বয়স এমন শিশুদেরও এইভাবেই ঘুমানো অভ্যাস করা হয়। এরপরই বলতে হয় জাপানের কথা। সেখানকার অধিকাংশ লোকজন ঘুমোতে পছন্দ করে অফিসের ডেস্কে। আসলে সে দেশে কাজের চাপ এতটাই বেশি থাকে, যে ওইভাবে না ঘুমিয়ে উপায় নেই। আবার গুয়াতেমালায় ঘুমোনোর সময় হাতে তৈরি পুতুল পাশে রাখা হয়। মূলত শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বেশি কার্যকর। কারণ একটাই, পাশে থাকা ওই পুতুলের সঙ্গে নিলে সহজে ঘুমাতে পারবে খুদে। এদিকে সুইজারল্যান্ডে দোলনায় ঘুমোনোর চল রয়েছে। আবার বেলজিয়ামে লোকজন ঘড়ি ধরে সাড়ে ১০ টায় ঘুমাতে যান। প্রায় সকলেই চেষ্টা করেন সেই নিয়ম মানতে। সময় ধরে ঘুমানোর নিয়ম রয়েছে ব্রাজিলেও। আবার মিশরের লোকজন সম্পূর্ণ ঘুম একবারে সেরে ফেলেন না। কিছুটা রাতে কিছুটা দিনে। এভাবেই ঘুমানোর অভ্যেস সে দেশের বাসিন্দাদের। এদিকে আবহাওয়া যেমনই থাকুক, জার্মানির বাসিন্দারা সবসময় চাদর মুড়ি দিয়েই ঘুমোন। পাতলা হলেও একটা চাদর তাঁদের চাই-ই চাই। এদিকে আফ্রিকার এক দেশে এতটাই বেশি মশার উপদ্রব, যে মশারি না টাঙিয়ে কেউ ঘুমোন না।
আরও শুনুন: ভুলেও বিছানাতে নয়, মাটিতেই ঘুম এই গ্রামের বাসিন্দাদের, কিন্তু কেন?
তবে ঘুমের নিয়মে সবথেকে আলাদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের বাসিন্দারা। মার্কিন মুলুকে অধিকাংশ বাড়িতেই পোষ্য রয়েছে। ঘুমোনোর সময় সেই পোষ্যকেই সঙ্গী করেন তাঁরা। এদিকে, ব্রিটেনের লোকজন সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে ঘুমোতে পছন্দ করেন। সে দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ এই নিয়ম মেনে চলেন। এছাড়া আফগানিস্তান বা চিনে রয়েছে ঘুমোনোর সঙ্গে সম্পর্কিত অদ্ভুত কিছু নিয়ম। আফগানিস্তানে আলাদা করে কোনও শোওয়ার ঘর থাকে না। যে কোনও ঘরেই ঘুমানোর আগে বিছানা পেতে নেওয়া হয়। আবার চীনের বাসিন্দারা শোওয়ার ঘরে কোনও আয়না রাখেন না। এভাবেই বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নিয়ম মেনে ঘুমোনোর চল রয়েছে।