প্রত্যেকের শরীরেই রয়েছে কিছু খামতি। কেউ চোখে দেখতে পান না তো কেউ চলার শক্তি হারিয়েছেন। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। কিন্তু সেই ভিক্ষা করেই লক্ষাধিক টাকা জমিয়েছেন তাঁরা। শুনতে অবাক লাগলেও আমাদের দেশেই রয়েছেন এমন কিছু ভিক্ষুক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকজনের কথা।
কারও মাসিক রোজগার ৭৫ হাজার, আবার কারও ব্যাঙ্কে জমেছে দেড় কোটি। অথচ এঁরা কেউই প্রতিষ্ঠিত চাকুরিজীবী নন। কিংবা এঁদের কোনও বিশাল মাপের ব্যবসা নেই। উপার্জনের একমাত্র পথ ভিক্ষা করা। প্রতিদিন অন্য কারও সাহায্যের উপর নির্ভর করেই দিন কাটে এঁদের। অথচ ব্যাঙ্কে রয়েছে লাখ লাখ টাকা।
আরও শুনুন: প্রাতঃভ্রমণেই প্রেমের খোঁজ! ১৯ বছরের তরুণীর সঙ্গে ঘর বাঁধলেন পাকিস্তানের ৭০ বছরের বৃদ্ধ
সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া এই সমীক্ষায় প্রস্তুত হয়েছে এমনই কিছু ভিক্ষুকের তালিকা। যেখানে প্রথমেই রয়েছেন মুম্বাইয়ের ভরত জৈন। মূলত মুম্বাইয়ের পারল অঞ্চলে ভিক্ষা করে প্রতি মাসে ৭৫ হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি। এমনকি এই শহরেই তার নিজের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। এরপরই বলতে হয় কলকাতার লক্ষ্মী নামে এক প্রৌঢ়ার কথা। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে তিনি ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে দিনযাপন করে আসছেন। এত বছরে তার সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ নেহাত কম নয়। সমীক্ষা অনুযায়ী তার বর্তমান রোজগার দৈনিক এক হাজার টাকা। এবার বলতে হয় বুর্জু চন্দ আজাদের কথা। মুম্বাইয়ের এই ভিক্ষুকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নাকি প্রায় ৯ লক্ষ টাকা জমা ছিল। ২০১৯ সালের একটি ট্রেন আক্সিডেন্টে বুর্জু মারা যাওয়ার পর তার কাছে থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা ও তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখে এমন অদ্ভুত তথ্য জানতে পারে মুম্বাই পুলিশ। তবে সবথেকে অবাক করে পাপ্পু কুমারের সম্পত্তি। জনৈক ট্রেন দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছিলেন পাপ্পু। তারপর থেকে ভিক্ষা করেই দিন কাটে তাঁর। কিন্তু তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ নাকি দেড় কোটিরও বেশি। এছাড়াও রয়েছেন মাসসু নামে এক ভিক্ষুক। তাঁর ভিক্ষা করার পদ্ধতি বাকিদের থেকে কিছুটা আলাদা। যেখানে অভিজাত মানুষদের আনাগোনা বেশি মূলত সেখানেই ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পৌঁছে যান তিনি। ফলত বড়লোকেদের কাছ থেকে অনায়াসেই মোটা অঙ্কের ভিক্ষা আদায় করে ফেলেন। যা জমিয়ে ইতিমধ্যেই মুম্বাইয়ে একটি নিজস্ব ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছেন মাসসু।
আরও শুনুন: তরুণীর পেট থেকে উদ্ধার ৪ ফুট লম্বা সাপ! অপারেশনের সময় তাজ্জব চিকিৎসকরাও
তালিকা এখানেই শেষ নয়। সম্ভাজি, সরাবতী দেবী, কৃষ্ণ কুমার সহ বেশ কিছু ভিক্ষুক রয়েছেন যাদের দৈনিক রোজগার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত চাকুরিজীবীর থেকে বেশি। এমনকি এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের প্রফেশনাল ভিক্ষুক বলেও পরিচয় দেন। অন্যের সাহায্যের উপর ভর করে গড়ে তোলা ইমারতেই রোজ বিলাসবহুল জীবন কাটে এদের অনেকের। তবু যতই এমন বড়লোক ভিক্ষুকের উদাহরণ সামনে আসুক, সেটাই সামগ্রিক ছবি নয়। দেশের অনেক শিশুরই যে এখনও সঠিক পুষ্টি পর্যন্ত জোটে না, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।