নীল স্বচ্ছ জলের হ্রদ তো হামেশাই দেখা যায়। গোলাপি হ্রদের কথাও শুনেছি। তবে এখানকার হ্রদে বহু রঙের মেলা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি! সময়ে সময়ে পালটে যায় এ হ্রদের জলের রং। ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট কিলিমুটুর এই হ্রদ যেন আশ্চর্য। কোন ম্যাজিকে হয় এমনটা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লাল নীল সবুজেরই মেলা বসেছে। ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট কিলিমুটুর কাছে ফ্লোরস দ্বীপের এই তিনটি হ্রদকে দেখলে এ গানের কথা মনে পড়বেই। সব মিলিয়ে মোট তিনখানা হ্রদ। তিনটি হ্রদের জলের রং তিন রকম। সব চেয়ে বড় কথা সময়ে সময়ে রং বদলায় এ হ্রদের জল।
আরও শুনুন: ঘটকালি করল শহরের যানজট, ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়েই মনের মানুষকে খুঁজে পেলেন ব্যক্তি
ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট কিলিমুটুর কাছে রয়েছে এই আশ্চর্য দ্বীপপুঞ্জ। প্রায় সাড়ে সাত হাজার বছর আগে জেগে উঠেছিল মাউন্ট মাজামা আগ্নেয়গিরি। সেই অগ্নুৎপাতের জ্বালামুখে বৃষ্টি ও বরফে ভর্তি হয়ে তৈরি হয়েছিল গভীর দ্বীপগুলি।
স্থানীয়দের বিশ্বাস এই তিনটি হ্রদে বিশ্বাস করছেন তাঁদের পূর্বপুরুষেরা। সবচেয়ে পশ্চিমের যে হ্রদটি, তার নাম তিয়ু আটা মপু অর্থাৎ বৃদ্ধ মানুষদের হ্রদ। এই হ্রদের রং ঘন নীল। এর পরেই রয়েছে লেক তিয়ু নুয়া মুরি কু ফাই। এই হ্রদ যুবক-যুবতীদের। তরুণ মনের মতোই এ হ্রদের জল চিরসবুজ। সব শেষে রয়েছে তিয়ু আটা পোলো। এই হ্রদটিকে মন্ত্রঃপুত মনে করা হয়। এর রং লাল।
তবে এই রং আদি অনন্ত নয় মোটেও। সময়ে সময়ে রং বদলাতে থাকে হ্রদগুলি। এমনকী কালো রং ধারণ করতেও দেখা গিয়েছে এই হ্রদকে। বেশ কয়েক বছর আগে, এই তিনটি হ্রদের রং কিন্তু ছিল অন্যরকম। কালো, ফিরোজা এবং খয়েরি রং ছিল হ্রদগুলির। সেটা ২০০৯ সালের কথা। ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে রং পাল্টাতে শুরু করে হ্রদগুলি। সে সময়ে হ্রদের রঙে সবুজের প্রভাব ছিল বেশি।
আরও শুনুন: হিন্দু রীতিতে পরালেন সিঁদুর, বেনারসের মন্দিরে বিয়ে সারলেন মুসলিম যুগল
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রংবদলের পিছনে দায়ী বিশেষ ধরনের ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি। কেউ কেউ আবার মনে করেন, ওই হ্রদের জলে থাকা বিশেষ ধরনের খনিজ পদার্থের সঙ্গে অগ্নুৎপাতজাত গ্যাসের বিক্রিয়ার কারণেই রং বদলায় হ্রদগুলি। তবে সত্যি কথা বলতে, ঠিক কোন কারণে কোন রং হয় বা ভবিষ্যতে হবে, তা নিশ্চিত করে বলা কিন্তু কঠিন। এক কথায় পৃথিবীর আশ্চর্য ছাড়া একে আর কী-ই বা বলা যেতে পারে।