‘এমন সৌন্দর্য্যের রহস্য কী?’ বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে নয়, এই প্রশ্ন করা হচ্ছে কুম্ভমেলায়। তাও আবার এক সাধ্বীকে! এবারের কুম্ভে ইনিই অন্যতম আকর্ষণ। গেরুয়াধারী সাধু হলেও এঁর রূপের জাদুতে কাবু সকলেই। যদিও ইনি একা নন, কুম্ভের ভিড়ে নজর কাড়ছেন আরও অনেকেই। কেমন সেই সাধুদের সাতকাহন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কুম্ভমেলা যেন সাধুদের মিউজিয়াম! হরেক রঙের, হরেক ঢঙের, সাধুর ছড়াছড়ি। কারও মাথায় আস্ত বাগান, কেউ পরেছেন ৪৫ কেজি রুদ্রাক্ষ মালা, কেউ আবার আইআইটি পাস আউট! সাধুদের সাতকাহনে জমজমাট কুম্ভ। ভাইরাল কনটেন্টের কমতি নেই! তবে সেরার সেরা হয়ে নজর কাড়ছেন বিশেষ কয়েকজন।
প্রথমেই এক সাধ্বীর কথা বলতে হয়। রূপের ঝলক এমনই যে লজ্জা পাবেন মডেল-অভিনেত্রীরাও। তবে ইনি মেলায় এসেছেন সাধ্বী হয়েই। পরনে গেরুয়া, গয়ায় রুদ্রাক্ষ, কপালে ত্রিপুণ্ডক। সবমিলিয়ে পুরোদস্তুর সাধ্বীর বেশ। কথাবার্তাও তেমন মার্জিত। কুম্ভের শুরুতেই এই সাধ্বীর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। অবশ্য তিনি নিজে সেই ভিডিও করেননি, জনৈক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছেন। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর পরিচয় ছড়িয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, ইনি হর্ষা রিচারিয়া। উত্তরাখণ্ডের মেয়ে। আচার্য মহামণ্ডলেশ্বরের শিষ্যা। একসময় সত্যি সত্যি অভিনেত্রী-মডেল ছিলেন, তবে সেই জীবন ফেলে এসেছেন পিছনে। এখন তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য সাধনার পথে এগিয়ে চলা। কেউ জোর করেনি, তাঁর দাবি এই পথ তিনি নিজেই বেছে নিয়েছেন। কারণ, এই জীবনে আত্মার যে শুদ্ধি মেলে, তা আর কোথাও নেই। তবে সেসব জানায় এতটুকু আগ্রহ নেই ভক্তদের। লক্ষ জোড়া চোখ স্রেফ তাঁকে দেখতে চায়, একবার সামনে থেকে দেখা মিললেই যেন মোক্ষলাভ!
তবে চমকের এখানেই শেষ নয়, রয়েছেন ‘আনাজওয়ালি বাবা’। নিজের মাথাতেই ইনি চাষ করেন। জটায় বানিয়েছেন এস্ত বাগান। প্রায় ১৪ বছর ধরে মাথায় বাগান নিয়ে ঘুরছেন এই সাধু। সেখানে ছোলা, গম অনেক কিছুই ফলে। এরপর রুদ্রাক্ষ বাবা। শরীরে প্রায় ৪৫ কেজি ওজনের রুদ্রাক্ষ মালা নিয়ে ঘুরছেন ইনি। তার সিংহভাগ জটাতেই। প্রায় ১১০০০ রুদ্রাক্ষ রয়েছে এই সাধুর শরীরে। আসলে, শিবের ভক্ত হিসেবে সাধুরা রুদ্রাক্ষ ধারণ করেই থাকেন। তবে সংখ্যায় এতগুলো কেউ হয়তো পরেন না। আর তাই নজর কেড়েছেন এই সাধু। এরপর ‘বালক-বাবা’। এঁর বিশেষত্ব বয়স। মাত্র ১০ বছর বয়সের এই সাধুও কুম্ভে হাজির। সন্ন্যাসী হয়েছেন বছর খানেক আগে। এই বয়সেই জীবনের যাবতীয় সব ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে সাধনার পথে হেঁটেছেন ইনি। রয়েছেন, চাবি বাবাও। এঁর কাছে গোছা গোছা চাবি মিলবে। সবমিলিয়ে প্রায় ২০ কেজি হবে! এই সাধুর দাবি, কারও মনের বন্ধ দরজা খুলে দিতে পারে তাঁর এইসব চাবি। কীভাবে, তা জানা নেই। তবে চাবি নিয়েই মেলায় ঘুরছেন ইনি। রয়েছেন, রাবড়ি বাবা। মেলায় আগত ভক্তদের বিলি করছেন সুস্বাদু মিষ্টি। নিজেই বানাচ্ছেন, নিজেই বিলি করছেন। এখানেই শেষ নয়। মেলায় রয়েছেন, আইআইটি পাসআউট এক সাধুও। তাও আবার মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা তাঁর। সাধারণত এই ধরনের পড়াশোনা করে কেউ এই পথে এসেছেন তা শোনা যায় না। তবে ইনি এমনটাই করেছেন। সম্প্রতি এক ভিডিওতে তাঁর দেওয়া উত্তর শুনে চমকেছে নেটদুনিয়া।