দেশের জাতীয় পশু যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আর জাতীয় ফুল হল পদ্ম, সে কথা তো সকলেই জানি। কিন্তু রাজ্যের ক্ষেত্রেও যে এমন নির্দিষ্ট পশু, পাখি ও ফুল রয়েছে, তা জানেন কি? আসুন, তাহলে শুনেই নেওয়া যাক।
যতই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান নিয়ে গলা ফাটান, কিংবা সৌরভের দাদাগিরিতে বুঁদ হয়ে থাকুন, ফুটবল বা ক্রিকেট কোনোটিই কিন্তু আদৌ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য খেলা নয়। সেই রাজ্য খেলার তকমাটি পাবে তুলনায় কম জনপ্রিয় একটি খেলা, খো-খো। আজ্ঞে হ্যাঁ, এ কথা আমি আপনি বলছি না। এ কথা বলছে খোদ সরকার। আসলে দেশের ক্ষেত্রে যেমন জাতীয় পশু, জাতীয় পাখি, জাতীয় খেলা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই রাজ্যের ক্ষেত্রেও রয়েছে রাজ্য পশু, রাজ্য পাখি, রাজ্য খেলা ইত্যাদি। তাহলে বিস্তারিত ভাবেই বলা যাক, কোন কোন পশু, পাখি বা ফুলের ভাগ্যে এমন শিরোপা জুটেছে।
আরও শুনুন: তোলা হয় না জাতীয় পতাকা, থাকে না ছুটিও , কোন কোন দেশে নেই স্বাধীনতা দিবস?
দেশের জাতীয় পশু হল বাঘ, আর রাজ্যের পশু হল বাঘের মাসি। না না, তামাশা নয়। সত্যিই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পশু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ফিশিং ক্যাট বা মেছো বিড়াল। গায়ে বাঘের মতো ছোপ দেখা যায় বলে স্থানীয় ভাষায় একে বাঘরোল বলে। মাঝারি মাপের এই বিড়াল মূলত দক্ষিণ এশিয়ার জলাজমির কাছাকাছি এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়। কারণ একটাই, এখানে মাছ বেশি পাওয়া যায়। মাছ শিকারে এরা ভীষণ পটু। এদিকে বাংলার পুকুর, নদী ও মোহনার মিষ্টি জলে বেশি হয় বলেই হয়তো পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় মাছ রুই। এই মাছ মূলত শাকাহারী। রুই মাছ নিরামিষ, এমন একটি শ্লোক এককালে প্রচলিত হয়েছিল বটে। কিন্তু রুই মাছ যে নিজে নিরামিষ খায়, সে কথা কে জানত! তবে আমিষ খেতে পছন্দ করেন যাঁরা, তাঁদের খাবারের তালিকায় কিন্তু রুই মাছ নিয়মিতই হাজির হয়। ৬ মাস বয়স থেকেই এই মাছ বাজারে বিক্রি করা যেতে পারে, এমনটাই নিয়ম।
মাছ পছন্দ করে বাংলার রাজ্য পাখিও। তারও নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘মাছ’ কথাটা। মাছরাঙা। তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পাখি একটি বিশেষ প্রজাতির মাছরাঙা। এদের গলার কাছটা সাদা আর গা খয়েরি রঙের, তাই স্থানীয় ভাষায় একে ধলাগলা মাছরাঙা বলা হয়ে থাকে।
আরও শুনুন: যৌনাঙ্গে লঙ্কাবাটা ঢুকিয়ে দেয় ব্রিটিশ পুলিশ, তবুও হার মানেননি প্রথম মহিলা রাজবন্দি ননীবালা
এরপর আসি রাজ্যের ফুল প্রসঙ্গে। শরতের শুভ্র রং আর বাঙালির প্রিয় উৎসবের গন্ধ নিয়ে হাজির হয় এই শিউলি ফুল। সেই শিউলিই হল আমাদের রাজ্য ফুল। শিউলি বোঁটার রঙে শাড়ি ছোপানো হয়। শিউলির আরেক নাম পারিজাত। পুরাণে এই পারিজাতের উল্লেখ পাওয়া যায়। পারিজাত স্বর্গের শোভা। আর ফলের জায়গা তো আম ছাড়া আর কাউকে দেওয়াই চলে না। দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেরও নিজস্ব ফল তাই, আম। তবে রাজ্য গাছের তকমা পেয়েছে ছাতিম। ভেজা মাটিতে এই গাছ ভাল হয়। তার সঙ্গে সুগন্ধেও মাতিয়ে রাখে এই গাছের ফুল।