মহাভারতের হরেক নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিভিন্ন মন্দির থেকে শুরু করে স্থাপত্য, যা প্রমাণের চেষ্টা করে কাহিনির সত্যতা। কিন্তু এত বছর আগে জ্বালিয়ে রাখা আগুন এখনও টিকে থাকা সম্ভব? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথায় আছে, ‘যা আছে ভারতে, তা আছে মহাভারতে।’ অর্থাৎ, মহাভারতে যা নেই, তা গোটা ভারত জুড়ে খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে গেলেও পাবার জো নেই। আবার উল্টোটাও সত্যি। মহাভারতে যা আছে, তা ভারতের কোথাও না কোথাও ঠিক-ই আছে। শুধু একটু খুঁজে নেওয়ার অপেক্ষা। ভাবছেন তো, হঠাৎ মহাভারতের কথা তোলা হচ্ছে কেন? আর তার কারণ এবার ভারতে খোঁজ মিলেছে পাণ্ডবদের ব্যবহার করা মশালের।
আরও শুনুন:
কী রান্না হবে? রোজ মাথা ঘামাতে আপত্তি, ১৫ বছর ধরে একই খাবারে পেট ভরাচ্ছেন ব্যক্তি
আসলে যে জিনিস নিয়ে আজকের আলোচনা, তা আদতে একটি উদ্ভিদ। কথিত আছে, অজ্ঞাতবাসের সময়ে পাণ্ডবরা এই গাছের মধ্যে তেল দিয়ে তা মশালের মতো ব্যবহার করতেন। কিন্তু এর অসাধারণত্ব লুকিয়ে আছে অন্য জায়গায়। এই গাছের পাতায় সামান্য তেলের স্পর্শ ঠেকানো মাত্রই সেখানে জ্বলে ওঠে আলো। উদ্ভিদটি প্রধানত তামিলনাড়ুর আয়নার মন্দির এবং ভৈরাভারা মন্দিরের মতো দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরগুলিতে দেখা যায়।
তবে শুধু গাছের পাতা নয়, এ-গাছের ফুল-ফলও বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে ভীষণ উপকারী। এই গাছের ফল স্বাদে কিছুটা কষা। তবে এখানেই শেষ নয়, এ-গাছের ফল জেলি তৈরিতে, এমনকী মদ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। আরও আছে। মাথাব্যথা কমানো, চামড়ার অসুখ-বিসুখ, জ্বর-জ্বালাতেও মহৌষধি হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ গাছটি যে উপকারী এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
আরও শুনুন:
কথায় কথায় মিথ্যা বলেন সহকর্মী! বুঝবেন কোন লক্ষণ দেখে?
এতক্ষণে, নিশ্চয়ই আপনাদের কৌতূহল হচ্ছে, যে, কী সেই গাছ, যে গাছ কি-না এমন সর্বরোগহর হতে পারে! এই গাছের নাম ‘পাণ্ডবরা বাট্টি’। যার অর্থ মশাল বা পাণ্ডবদের মশাল। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। সেই যে অজ্ঞাতবাসকালে এ-গাছ পাণ্ডবরা ব্যবহার করেছিলেন, সেই থেকেই এর এমন নামকরণ। তবে গাছের এমন নামকরণের পিছনে যে আর কোনও ইতিহাস নেই বা থাকতে পারে না, তা নিশ্চিত করে বলা চলে না। তবে সে যাই হোক আধুনিক ভারতে, মহাভারতের যোগসূত্র যে প্রকৃতিতে নানাভাবে ছড়িয়ে আছে, এই গাছ সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে।