রামমন্দির তৈরি না হলে বিয়েই করবেন না। এমনই প্রতীজ্ঞা করেছিলেন যুবক। তারপর কেটেছে দীর্ঘ ২৮ বছর। এতদিনে স্বপ্নপূরণ হচ্ছে তাঁর। তবু বিয়ে না করার প্রতীজ্ঞা তাঁর পক্ষে আর ভাঙ্গা সম্ভব নয়। নেপথ্যে ঠিক কী কারণ রয়েছে? আসুন শুনে নিই।
নতুন বছরের শুরুতেই রামমন্দিরের উদ্বোধন। রাজকীয় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ব্যস্ত অযোধ্যাবাসী। এই আবহে গেরুয়া শিবির হামেশাই দাবি তুলছে, এতদিনে স্বপ্নপূরণ হল। তবে স্রেফ দেশের গেরুয়া শিবির নয়, রাম মন্দির তৈরির স্বপ্ন দেখছিলেন আরও অনেকে। আর সেই তালিকায় ছিলেন ভোপালের এক যুবক। যিনি প্রতীজ্ঞা করেছিলেন রাম মন্দির না হলে বিয়েই করবেন না।
আরও শুনুন: ৫০০০ হিরে দিয়ে গড়া হল রামমন্দির, রামলালাকেই উপহার দিতে চান ব্যক্তি
কথা বলছি, ভোপালের রবীন্দ্র গুপ্তা সম্পর্কে। যদিও এই নামে এখন তাঁকে কেউই চেনেন না। সকলের কাছে তাঁর নতুন পরিচয় ভোজপালি বাবা। ঠিক ধরেছেন, যুবক রবীন্দ্র সংসারের মায়া কাটিয়ে এই নতুন অবতার ধারণ করেছেন। বাড়ি ছেড়ছেন বহুদিন। মধ্যপ্রদেশের বিটাল (betul) অঞ্চলের এক গ্রাম এখন তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। যদিও বছরের বেশিরভাগ সময় তীর্থ করেই কাটান ভোজপালি বাবা। ভক্তের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। খুব অল্প বয়সেই বিভিন্ন সনাতনী মঠের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেইসময় একবার অযোধ্যা ভ্রমণে গিয়ে রামমন্দির আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারেন। আর তখনই প্রতীজ্ঞা করেন রামমন্দির তৈরি না হলে বিয়েই করবেন না। বাড়িতে ফিরেও নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরিবরার লোকজন অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি।
আরও শুনুন: প্রতিভাবান হয়েও আইপিএল-এ দাম পেলেন না যাঁরা, বঞ্চিত থেকে গেল বাংলাও
এরপর জীবন নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে। কেটেছে দীর্ঘ ২৮ বছর। এই কদিনে রামমন্দির তৈরির আন্দোলনও কাঙ্খিত ফল পেয়েছে। বিতর্কিত জমিতেই মন্দির তৈরির অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অনুমতি পাওয়া মাত্র শুরু হয় মন্দির তৈরির পরিকল্পনা। অবশেষে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদির হাতে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় রামমন্দির তৈরির কাজ। বর্তমানে যা প্রায় শেষের মুখে। সব ঠিক থাকলে লোকসভা ভোটের আগেই রামমন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হবেন রামলালা। সুতরাং এতদিনে যুবক রবীন্দ্ররও স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। তবে বিয়ে না করার প্রতীজ্ঞা তাঁর পক্ষে আর ভাঙ্গা সম্ভব নয়। কারণ একটাই, তিনি আর নতুন করে সংসারের মায়ায় জড়াতে পারবেন না। বাকী জীবনটা রামের আরাধনা করেই কাটিয়ে দিতে চান তিনি। তবে রামমন্দির তৈরি নিয়ে তাঁর উচ্ছ্বাসের কমতি নেই এতটুকু। মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনও বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করেছিলেন ভোজপালি বাবা। এদিকে তাঁর বাড়ির লোকজনও এখন সবটা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছে। বরং তাঁরাও রামমন্দির তৈরি নিয়ে বেশ খুশি। বলাই বাহুল্য, গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রামভক্তরা এখন স্রেফ অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। তবে সেই তালিকায় ভোজপালি বাবা বেশ উপরের দিকেই থাকবেন তাঁর এই কঠিন প্রতীজ্ঞার জেরে।