মহিলা কর্মী নিয়োগ করতে হলেই কেউ কেউ খানিক দ্বিধায় পড়েন, মাতৃত্বকালীন ছুটিকেও হিসেবে ধরতে হবে ভেবে। মহিলা অবিবাহিতা হলে যদিও তাঁরা খানিক নিশ্চিন্ত হন, তবে বিবাহিতা হলে ভ্রূ কুঁচকে যায় আরও। কিন্তু কথা হচ্ছে, কেবল বিবাহিতা মহিলারাই কি মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন? বিয়ে কি এই ছুটি পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত? এ বিষয়ে দেশের আইন কী জানাচ্ছে, শুনে নেওয়া যাক।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে সর্বত্র। সুস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য গর্ভবতী মহিলাদের বেশ কয়েক মাস সবেতন ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু এই একই নিয়ম কি অবিবাহিত মহিলাদের জন্যও প্রযোজ্য? আইনেই রয়েছে সেই ব্যাখ্যা।
আরও শুনুন: মেয়েদের অপমান করে কী প্রাপ্তি হয় নেতাদের? প্রশ্ন সোনা মহাপাত্রের অথবা দেশেরই
বেসরকারি সংস্থায় মহিলাদের চাকরি জোটানো কঠিন। এমন প্রশ্ন হামেশাই উঠে থাকে। অনেক মহিলাই দাবি করেন, চাকরি ক্ষেত্রে তাঁদের যথেষ্ট বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এমন দাবিও শোনা যায়, এই বৈষম্যের কারণ মহিলাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি। বিশেষ করে মহিলা যদি বিবাহিত হন তাহলে ধরেই নেওয়া হয় এই ছুটি তাঁদের দিতেই হবে। আর এই হিসেবে চাকরি দেওয়ার আগেই পিছিয়ে আসে সংস্থা। যেন বিয়ে আর মাতৃত্ব খানিক সমগোত্রীয় বিষয়! তবে দেশের আইন কিন্তু এমনটা বলছে না। অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন ছুটির সঙ্গে মহিলার বিবাহিত হওয়া না হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। নিয়ম হল, যে কোনও অবস্থাতেই সন্তানধারণ করলে ছুটি পাবেন সংস্থার মহিলা কর্মীরা। বিবাহিত হলেও যেমন পাবেন, আবার সিংগল মাদার হলেও পাবেন। দুই ক্ষেত্রেই ছুটির পরিমাণ এক। আগে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হত ১২ সপ্তাহের। বর্তমানে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৬ সপ্তাহ। যদিও এর জন্য আরও কিছু শর্ত রয়েছে। তবে শর্তের মধ্যে মহিলা বিবাহিত না অবিবাহিত সেসবের উল্লেখ নেই।
আরও শুনুন: মোদি-জমানা বোঝার চেষ্টা, ঢল নেমেছে নতুন বইয়ের, নতুন লেখকদেরও
নিয়ম বলছে, কোনও সংস্থায় যদি অন্তত ১০ জন কর্মী থাকে, তাহলেই সেখানকার যে কোনও মহিলা এই সুবিধা ভোগ করতে পারেন। এই সময় সংস্থার তরফে সম্পূর্ণ বেতন পাবেন নতুন মা। এমনকি সন্তান জন্মের পরও হিসাব করে কয়েক সপ্তাহ ছুটি নেওয়া যেতে পারে। কোনওভাবেই যেন সদ্যোজাতের সমস্যা না হয়, সেই ব্যবস্থা করতেই এই নিয়ম। এমনকি এই নিয়ম সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আইন অনুযায়ী প্রথম দুই সন্তানের জন্য ২৬ সপ্তাহের ছুটিই পেতে পারেন নতুন মা। তারপর তৃতীয় বা চতুর্থ সন্তান হলে ছুটি মিলবে ১২ সপ্তাহের। আর এই নিয়ম মানতে বাধ্য সরকারি, বেসরকারি সব সংস্থাই। বলাই বাহুল্য, নিয়ম অনুযায়ী এর সঙ্গে মহিলার বিবাহেরও কোনও যোগ নেই। স্রেফ সন্তানধারণ করলেই তাঁর সুবিধার্থে মিলবে এই ছুটি।