গীতা ছেড়ে ফুটবল খেলার কথা বলেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। নিজে অবশ্য সব খেলাতেই সমান পারদর্শী ছিলেন। একসময় কলকাতার ক্লাবে চুটিয়ে খেলেছেন ক্রিকেটও। কিন্তু তারকা পেসার মহম্মদ শামি কীভাবে তাঁর সতীর্থ হতে পারেন? ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
স্বামী বিবেকানন্দ আর মহম্মদ শামি সতীর্থ! এমনটা শুনলে অবাক হতেই হয়। সময়ের হিসাবে দুজনের একসঙ্গে থাকাই অসম্ভব। সেখানে ক্রিকেট খেলার প্রশ্নই ওঠে না। তাও দুজনের মধ্যে অদ্ভুত এক ক্রিকেটযোগ রয়েছে। আর সেই সূত্রেই মহম্মদ শামিকে স্বামীজির সতীর্থ বলা যেতেই পারে।
আরও শুনুন: জয় শ্রীরাম বলতে আপত্তি কীসের! ‘সাজদা’ প্রসঙ্গ টেনে সাফ দাবি মহম্মদ শামির
এ দেশে ক্রিকেটের আগমন ব্রিটিশদের হাত ধরে। একসময় কলকাতার সমস্ত ক্লাবেই নিয়মিত ক্রিকেট প্রাকটিস করতেন সাহেবরা। প্রথমদিকে কোনও ভারতীয়র এই খেলায় অংশ নেওয়ার অধিকার ছিল না। ধীরে ধীরে এই খেলা ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয়দের মধ্যে। সেইসময় এমন অনেক ম্যাচ হত, যেখানে সাহেবদের প্রতিপক্ষ হিসেবে লড়তেন ভারতীয়রা। বিভিন্ন সিনেমাতেও সেই গল্প দেখা গিয়েছে। তখন আর ক্রিকেট স্রেফ খেলা নয়, হয়ে উঠেছে জীবন মরণের লড়াই। এমন একটা সময় স্বামী বিবেকানন্দ বছর ১৮-র যুবক। কথায় কথায় বিতর্কে জড়িয়ে পড়া, অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করা ছিল তাঁর সহজাত অভ্যাস। তীক্ষ্ণ বুদ্ধি আর মেধার জোরে সকলের থেকে আলাদা হয়ে উঠতেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। পাশাপাশি ক্রিকেট খেলার প্রতি তাঁর অদ্ভুত টান ছিল। নিয়মিত খেলতেন কলকাতার নামকরা টাউন ক্লাবে। তাঁর আগুনে বোলিং-এর সামনে দাঁড়াতে ভয় পেতেন তাবড় ক্রিকেটাররা। শোনা যায়, কোনও এক ম্যাচে তিনি একাই সাত উইকেট ঝুলিতে ভরেছিলেন। স্বামীজির এক গুণ অনেকেরই অজানা। আর এই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে মহম্মদ শামির নাম জড়িয়ে।
আরও শুনুন: ‘গোঁড়া মতবাদ সব গোল্লায় যাউক’, সংকীর্ণতা পেরিয়ে সর্বজনীন ধর্মের স্বপ্ন দেখেছিলেন বিবেকানন্দ
আসলে, মহম্মদ শামিও কলকাতাতেই ক্রিকেট জীবনের প্রথম অধ্যায় কাটিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় এসে শামিও যোগ দিয়েছিলেন টাউন ক্লাবেই। সেখানেই খেলেছেন দীর্ঘদিন। তারপর বাংলার হয়ে রনজিতে দুরন্ত পারফরম্যান্স পাকা করেছিল ভারতীয় টিমে তাঁর জায়গা। পরের ঘটনা সকলেরই জানা। দেশের জার্সি গায়ে একাধিক সাফল্য পেয়েছেন শামি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বসেরা ভারত। একবার নয়, স্বাধীনতার পর থেকে চার চারটি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারতীয় দল। এছাড়া টেস্ট, ওয়ান ডে সহ বিভিন্ন সিরিজ জয় রয়েছেই। সেখানে শামির অবদানও নেহাতই কম নয়। কিন্তু একসময় স্বামী বিবেকান্দও যে এই খেলায় সমান পারদর্শী ছিলেন, তা ভাবলে অবাক হতেই হয়।