কথায় বলে যদি হও সুজন, তেঁতুল পাতায় ন-জন। তবে মানুষ যেমনই হোন না, গাদাগাদি করে থাকতে কারই বা ভাল লাগে বলুন। ছোট্ট দু-কামরার ফ্ল্যাটে জায়গা সংকুলান করতে হিমশিম খেতে হয় অনেককেই। তাই চাই আরও বড় আবাসন, আরও বড় বাড়ি। তার পিছনে পিছনেই আসে ইএমআই, ঋণের বোঝা আর যাবতীয় দুশ্চিন্তা। তবে যদি এমন হয়, গোটা দ্বীপখানাই আপনার ঘর। না, অন্য কোনও প্রতিবেশীর জায়গা নেই সেখানে। ভাবছেন তো এমন আবার হয় নাকি! তবে এমনই হয় জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ডে। আসুন, শুনে নিই সেই আশ্চর্য দ্বীপের কথা।
যেমন আশ্চর্য জায়গা, তেমনি আশ্চর্য তার নাম। জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ড। ভাবছেন নিশ্চয়ই, এমন নামের কোনও দ্বীপের অস্তিত্ব সত্যিই মানচিত্রে থাকতে পারে নাকি! কিন্তু অবাক করা হলেও সত্যিই রয়েছে এমন একটি দ্বীপ। যেখানে রয়েছে একটিই মাত্র বাড়ি।
আরও শুনুন: রাম সেতুর অস্তিত্ব কি সত্যি আছে? তথ্য আর যুক্তি কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে?
পৃথিবীর সব চেয়ে ছোট্ট বসতি এই দ্বীপ। আমেরিকার নিউ ইয়র্কের এই দ্বীপটিকে অনেকে হাব আইল্যান্ডও বলে থাকেন। নিউ ইয়র্কের থাউস্যান্ড আইল্যান্ডসের একটি দ্বীপ এটি। চারপাশে থইথই জল। তার মাঝখানে জেগে ওঠা একখণ্ড চর। তাতেই বাঁধা হয়েছে ছোট্ট একফালি ঘর। যার সামনে একটা ছোট্ট উঠোন। তা উঠোন বলুন আর ব্যাক্তিগত সৈকত। সবই ওই একটিই। পাশেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে একখানা ঢাউশ গাছ। সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজার বর্গ ফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে একটি ব্যক্তিগত ভূখণ্ড।
১৯৫০ সালে ওই দ্বীপটি কিনে নেন এক সুইস পরিবার। অবসর কাটাতে যাবেন একটি নির্জন দ্বীপে। থাকবে দারুণ সুন্দর একটি বাড়ি। এমন ইচ্ছা কার না হয়। সেই স্বপ্নপূরণ করতেই দ্বীপটি কিনে বসেছিলেন তাঁরা। পরে সেই স্বপ্নের দ্বীপেই গড়ে তোলেন নিজেদের স্বপ্নের বসতবাটিটি। দিব্যি সাজিয়েও নেন সেটিকে।
আরও শুনুন: এভারেস্ট-সহ ছুঁয়েছেন পাঁচ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে রেকর্ড প্রিয়ঙ্কার
তবে এ বাড়িতে বসবাসের জন্য কিন্তু সাঁতার জানাটা বাধ্যতামূলক। কারণ ভুল করে একটু এদিক-ওদিক পা ফেললেই আপনার সেন্ট লরেন্স নদীতে হাবুডুবু বাঁধা। কানাডা ও আমেরিকা সীমান্তের কাছে ওই দ্বীপ আলেকজান্দ্রিয়া উপসাগরের অংশ। ইদানীং ওই একঘর বিশিষ্ট দ্বীপটি দেখতেই হাজির হয় অসংখ্য পর্যটক। দ্বীপটি কেনার সময় যা কল্পনাও করতে পারেননি ওই সুইস পরিবারটি। অখন্ড নির্জন অবসর কাটাতে দ্বীপটি কিনেছিলেন বটে, এখন সেই জাস্ট রুম এনাফ আইল্যান্ডই হয়ে উঠেছে আমেরিকার অন্যতম পর্যটন স্থল।