মন্দিরের অন্দরে মূর্তি থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। শিবমন্দির হলে, লিঙ্গ থাকতে পারে। কিছু মন্দির ছবিতে পুজোরও চল রয়েছে। ব্যতিক্রম এই মন্দির। এখানে না আছে কোনও মূর্তি, না কোনও ছবি। অথচ ভক্তদের দাবি এই মন্দিরে ঢুকলেই টের পাওয়া হনুমান অস্তিত্ব। কোন মন্দিরের কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা ভোটের আগে ঘটা করে প্রতিষ্ঠা হয়েছে রামমন্দির। তা নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না গেরুয়া শিবিরের। বিরোধীরা এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ টেনে নানা বিতর্ক গড়েছিলেন। তবে গর্ভগৃহে রামলালার মূর্তিটি কেমন হবে সেদিকে নজর ছিল সকলের। মূর্তির প্রথম ছবি প্রকাশ্যে আসতেই লাইক, শেয়ারের বন্যা বয়ে যায়। এর থেকে সহজেই বোঝা যায়, অন্দরে থাকা বিগ্রহই মন্দিরের মূল আকর্ষণ। অন্তত ভক্তির টানে যারা মন্দির হাজির হন, তাঁদের কাছে। কিন্তু এমনও মন্দির রয়েছে যেখানে কোনও বিগ্রহ বা মূর্তি নেই। তাও ভক্তরা ভিড় জমান মন্দিরে। সকলেই দাবি করেন এই মন্দিরে হনুমানের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।
:আরও শুনুন:
জুতো দিয়ে পুজো দিলেই সারবে হাঁটুর ব্যথা! কোথায় রয়েছে এমন মন্দির?
কথা বলছি যন্ত্রধারক হনুমান মন্দির সম্পর্কে। কর্নাটকের হাম্পিতে অবস্থিত এই মন্দির, পর্যটকদের কাছেও বেশ আকর্ষনীয়। সে রাজ্যে ঘুরতে গিয়ে অনেকেই এই মন্দির ঢুঁ মারেন। ভক্তির টানে তো বটেই, সেইসঙ্গে রয়েছে মন্দিরের অসাধারণ সৌন্দর্য। পাহাড়ের কোলে এই মন্দির থেকে গোটা শহর দেখা যায়। সে দৃশ্য ভাষায় ব্যক্ত করা কঠিন। একইসঙ্গে এই মন্দিরের আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এর গর্ভগৃহে নেই কোনও হনুমান মন্দির। এমনিতে এ দেশের অনেক হনুমান মন্দিরেই সংকটমোচনের মূর্তি থাকে না। প্রভু রামের মূর্তির সঙ্গেই দেখা যায় হনুমানকে। তাতেই পুজো হয়। কথিত আছে, রামের পুজো করলেই অধিক তুষ্ট হন হনুমান। কিন্তু হাম্পির এই মন্দিরে না আছে, রামের মূর্তি না আছে হনুমানের বিগ্রহ। তাহলে পুজো হয় কীসে?
:আরও শুনুন:
ভাঙাচোরা লোহা দিয়েই তৈরি হল ‘রামমন্দির’! হাত লাগালেন মুসলিম কারিগরেরাও
মন্দিরের অন্দরে রয়েছে একটি যন্ত্র। শাস্ত্রে সব দেবতারই নির্দিষ্ট যন্ত্রের উল্লেখ মেলে। হনুমানের সেই যন্ত্রই রাখা আছে হাম্পির মন্দির। একেবারে মধ্যিখানে ছোট্ট একটি হনুমান মূর্তি খোদাই করা আছে বটে। অবশ্য একেবারে কাছ থেকে না দেখলে তা বোঝা যাবে না। এই হনুমান যন্ত্রেই নিত্য পুজো হয় এই মন্দিরে। স্থনীয়দের দাবি, এই মন্দিরে বসে একমনে হনুমানের নাম জপ করলে পবননন্দনের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। পুরাণ মতে হনুমান চিরঞ্জীবী। তাই কেউ কেউ দাবি করেন, স্বয়ং হনুমান এই মন্দিরে এসে ভক্তকে আশীর্বাদ করে যান। মন্দির তৈরির নেপথ্যে পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। কথিত আছে, এখানেই প্রথমবার রামের সঙ্গে হনুমানের দেখা হয়েছিল। তাই এই স্থানে হনুমানের মাহাত্ম থাকাই স্বাভাবিক। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৫ শতকে। রাজা ব্যাসরাজ মন্দিরের অন্দরে এই যন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে এখানে নিত্য পূজিত হয়ে আসছেন হনুমান।