বাড়ির চাবি কোথায়? ইলেকট্রিক বিল আদৌ জমা হয়েছে? হাজার চেষ্টাতেও মনে পড়ছে না! দীর্ঘদিন এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে, এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। হতে পারে এইসব, ‘ব্রেন রটের’ পূর্বাভাস! তবে চিন্তার কারণ নেই, সহজ কিছু অভ্যাস রপ্ত করতে পারলেই মিলবে সুরাহা। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঘুম চোখ খুলেই হাতে ফোন! এই অভ্যাস অনেকেরই। কেউ আবার ফোন হাতে নিয়েই বাথরুমে ঢুকে পড়েন। ব্রাশ করতেও করতেই ফোনের স্ক্রিন থেকে চোখ সরে না। এই অভ্যাস যে ভালো নয়, তাও অনেকেই জানেন। কিন্তু স্রেফ ফোন দেখা নয়, ঘুম চোখ খুলে আরও অনেক কিছুর অভ্যেস অবিলম্বে না বদলালে, হতে পারে মারাত্মক বিপদ।
এক্ষেত্রে বিপদ বলতে মস্তিষ্কের পচনের কথা বলা হচ্ছে। ডাক্তারির ভাষায়, ‘ব্রেন রট’। যা চুপিসাড়ে শরীরে বাসা বাঁধে। কেউ কিছু বোঝার আগেই বিপদের চরম ঘণ্টা বাজিয়ে দেয়। একবার ব্রেন রটের সমস্যা শুরু হলে, পিছু পিছু হাজির হবে আরও অনেক মানসিক রোগ। প্রাথমিকভাবে বলা যেতে পারে নেপথ্যে সাধের মোবাইল ফোনটিই রয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল যুগে মোবাইল ছাড়া থাকা সম্ভব না। তাই সমস্যার শিকড় কোথায় জেনেও সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। আসলে, জীবনের সব আবেগ, আনন্দ আজকাল এই মুঠোফোনে আটকা পড়েছে। তাতেই বাস্তব জ্ঞান হারিয়ে সম্পূর্ণ অবাস্তব এক দুনিয়ার বাসিন্দা হয়ে উঠছেন কেউ কেউ। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়, সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু লাভের লাভ হয় না। মাঝখান থেকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ‘ব্রেন রট’-এর মতো শব্দ। ২০২৪ সালের অক্সফোর্ড ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এই শব্দ। তারপর থেকেই এই শব্দের অর্থ খুঁজে বেড়াচ্ছে সবাই। অনেকে এর নাম অবধি জানতেন না, অথচ তাঁর মস্তিষ্কেই বাসা বেঁধেছে ব্রেন রটের মতো সমস্যা। বাঁচার উপায় কি একেবারেই নেই?
এমনটা অবশ্যই না। আজকের দিনে চিকিৎসা বিজ্ঞান যে পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে, তাতে এই ধরনের রোগ নিরাময় হতেই পারে। তবে ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ হবে না, বদলাতে হবে নিজেদের অভ্যাস। কিংবা দিনলিপিতে জুড়তে হবে নতুন কিছু। প্রথমেই ঘুমের কথা বলা যাক। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে, অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে, এমনটা চিকিৎসকরা হামেশাই বলে থাকেন। তবে সেই সমস্যার তালিকায় উপরের দিকে উঠে আসছে ব্রেন রট। ঠিকমতো ঘুম না হলে মস্তিষ্কের পচন তথা ব্রেন রট হতে বাধ্য। নিয়ম মেনে ঘুমের সময় নির্ধারণ করতে পারলেই বিষয়টা স্বাভাবিক হবে। একইসঙ্গে নিয়মিত ধ্যানের অভ্যেস তৈরি করতে হবে। একক জায়গায় চুপ করে বসে থাকতে হবে কিছুক্ষণ, সেখানে কোনওভাবেই মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইস যেন না থাকে। প্রয়োজন নিভৃতে বই পড়া যেতে পারে। কাজ হবে খেলাধুলা করলেও। অন্তত এক ঘণ্টা ব্যায়াম বা শরীর চর্চার জন্য দিলেও সমস্যার হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে। সারাদিন ঘরে বসে থাকা চলবে না। বাইরে বেরোতে হবে, সময় কাটাতে হবে অন্য লোকজনের সঙ্গে। সবুজ ঘাসে হাঁটা অনেক রোগ সারিয়ে দিতে পারে, এই দাবি করে থাকেন চিকিৎসকরাই। ব্রেন রটের আটকাতেও এই অভ্যাস কাজে দেবে। এছাড়া খেয়াল রাখতে হবে খাবারের দিকেও। জাঙ্কফুড যত কম খাওয়া যায় তত মঙ্গল। বাড়িতে বানানো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। তাতে যেমন সুস্থ থাকবে শরীর, তেমনই ভালো থাকবে মন। পাশাপাশি অঙ্ক বা ধাঁধাঁ সমাধানের অভ্যেসও মস্তিষ্কের জন্য বেজায় উপযোগী। তবে সব থেকে জরুরি মনের খেয়াল রাখা। হাসিখুশি থাকলে, অনেক রোগই নিরাময় হয়। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।