মাত্র একখানা ইমোজির ঠেলায় ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা গুনছেন এক ব্যক্তি। এখন, ইমোজি তা আমরা হরবখত পাঠিয়েই থাকি। তাহলে কোন ইমোজি পাঠিয়ে এমন বিপাকে পড়লেই ব্যক্তি? আসুন শুনে নেওয়া যাক সেই ঘটনা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমোজি পাঠানো কী আর এমন ব্যাপার! প্রতিদিন হাজারও কথাবার্তা চালাচালিতে এই কাজটি আমরা করে থাকি। কেউ কিছু পোস্ট করেছেন, উত্তরে একটা ইমোজি দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা কী ভাবছি। কিংবা মেসেঞ্জারে একটা ইমোজি পাঠিয়ে রিপ্লাই দেওয়া, তা-ও তো হামেশাই ঘটে থাকে। আর ঠিক সেই কাজটি করতে গিয়েই চরম বিপাকে পড়েছেন এক ব্যক্তি। চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে এখন ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তাঁকে।
আরও শুনুন: স্ত্রী ভালবাসেন অন্য পুরুষকে, নিজে দাঁড়িয়ে দুজনের বিয়ে দিলেন স্বামী
ঘটনায় ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ইমোজিটি তা হল ‘থাম্বস-আপ’। ছাপোষা এই ইমোজিই এখন মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই ব্যক্তির কাছে। ঘটনার সূত্রপাত বেশ কিছুদিন আগে। এক শস্য সরবরাহকারীর সঙ্গে তাঁর একটি একটি চুক্তি হয়েছিল। কথা ছিল যে, ওই ব্যক্তি নির্দিষ্ট পরিমাণ শস্য পাঠাবেন ওই ক্রেতাকে। সেইমতো ক্রেতা তাঁকে একটি চুক্তিপত্র পাঠান। জবাবে ‘থাম্বস-আপ’ ইমোজি পাঠিয়ে দেন ব্যক্তিটি। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বাস্তবে ঘটল অন্য ঘটনা। নির্দিষ্ট সময়ে শস্য সরবরাহ করতে পারেননি ওই ব্যক্তি। এর মধ্যে শস্যের দামও বেজায় বেড়ে গিয়েছে। ফলত চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে ক্রেতা দ্বারস্থ হন আদালতের।
এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির যুক্তি ছিল যে, তিনি যে চুক্তিতে সম্মত তা বলেননি। তাহলে কেন থাম্বস-আপ ইমোজি পাঠিয়েছিলেন? তাঁর উত্তর, আসলে তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে, তিনি চুক্তিপত্রটি পেয়েছেন। থাম্বস-আপ ইমোজি পাঠানো হয়েছিল প্রাপ্তিস্বীকারের খাতিরে। অন্যদিকে ক্রেতার দাবি, এই থাম্বস-ইমোজি তাঁর কাছে অন্য বার্তা বয়ে এনেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, চুক্তিতে সায় আছে ওই ব্যক্তির। এই দ্বন্দেই চলতে থাকে শুনানি। এবং শেষমেশ বিচারক জানান যে, থাম্বস-আপ ইমোজি চুক্তিতে সায়ের কথাই জানান দিচ্ছে। স্রেফ প্রাপ্তিস্বীকার নয়। ফলে, চুক্তিভঙ্গের অপরাধে মোটা অঙ্কের জরিমানা হয় ওই ব্যক্তির। অঙ্কটা নেহাত কম নয়, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
আরও শুনুন: ঈশ্বরের ধর্ম নেই! মুসলিম হয়েও মন্দিরে পুজো, নয়া প্রজন্মের হয়ে বার্তা দিচ্ছেন সারা?
ঘটনা কানাডার হলেও, ঘটনাটি যে বেশ উদ্বেগজনক তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেননা, না বুঝে হামেশাই আমরা এরকম ইমোজি পাঠিয়ে থাকি। ফলত এরকম পরিস্থিতি এলে তার জন্য ফল ভুগতে হতে পারে ব্যবহারকারীকেই। থাম্বস-আপ মানে ‘ওকে’ বা ঠিক আছে। অর্থাৎ কোনও চুক্তির ক্ষেত্রে তা পাঠানোর অর্থ উক্ত চুক্তিতে সায় আছে। চুক্তিতে সায় নেই বোঝাতে থাম্বস-ডাউন ব্যবহার করা হয়। এরকমই প্রত্যেক ইমোজির আলাদা অর্থ আছে। না বুঝে তা গুরুত্বপূর্ণ কাজে পাঠালে হিতে বিপরীত হতে পারে। অতএব ইমোজি পাঠাচ্ছেন পাঠান, তবে বুঝেশুনে। নইলে ইমোজির ঠেলায় পকেট ফাঁকা হওয়ার সম্ভাবনাও থাকতে পারে।