আর জি কাণ্ডের প্রতিবাদে ডিপি কালো করেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তার আগে আরও অনেকেই এমনটা করেছেন। তবে সোশাল দুনিয়ায় জনপ্রিয় এই প্রতিবাদ নতুন নয়। প্রতিবাদ জানাতে কালো রঙের ব্যবহার শুরু হয়েছিল বহু আগেই। নেপথ্যে কী কারণ ছিল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আর জি কাণ্ডে দোষীদের সঠিক বিচার চাই! এই দাবিতেই পথে নেমেছেন গোটা দেশের মানুষ। শিল্পী, খেলোয়াড়, গায়ক, শিক্ষক সকলের মুখে একটাই স্লোগান, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। এই নিয়ে উত্তাল নেটদুনিয়াও। সেখানে অবশ্য প্রোফাইল পিকচার কালো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সকলে।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিও। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। আর জি করে নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনিও। তবে দোষীরা এখনও অধরা। সিবিআই তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এলেও, প্রকৃত দোষী বা দোষীদের নাম সামনে আসেনি এখনও। তাই দেশজুড়ে আন্দোলনের ঝাঁঝ কিছুমাত্র কমেনি। বিশেষ করে কলকাতা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ ফুঁসছে, দোষীদের শাস্তির দাবিতে। পথে নেমে রাতের দখল নিচ্ছেন মেয়েরা। দিনরাত এক করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বলিউড-টলিউড, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল, সকলের মুখেই এক দাবি, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। একইসঙ্গে বিপ্লবের অংশ হয়ে উঠেছে সোশাল মিডিয়াও। সেখানেও সকলেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ নিজের প্রোফাইল পিকচার কালো করার দাবিও তুলেছেন। প্রতিবাদের এক ধরণ হিসেবেই এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই কাজ অনেকে করেছেন। এমনকি সৌরভ গাঙ্গুলির মতো কিংবদন্তিও আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদে নিজের প্রোফাইল ছবি কালো করেছেন। তবে সোশাল মিডিয়ার এই ট্রেন্ড নতুন নয়। ইতিহাস বলছে প্রতিবাদের রং হিসেবে কালো-র ব্যবহার শুরু হয়েছিল বহু আগেই। যার নেপথ্যে ছিল, ‘ব্ল্যাক লাইভ মুভমেন্ট’।
অনেকেই দাবি করছেন, বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আন্দোলনেই প্রথমবার এই ডিপি কালো করার রেওয়াজ চালু হয়েছিল। যদিও এই নিয়ে মতবিরোধও রয়েছে। যেহেতু সমাজ মাধ্যমের চলতি প্রতিবাদ, তাই সঠিকভাবে কে কোথায় কেন শুরু করেছিলেন, তা বলা কঠিন। তবে বেশিরভাগই মনে করেন কালো মানুষদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতেই সকলে নিজেদের প্রোফাইল ছবি কালো করতে শুরু করেন। আবার কেউ কেউ বলেন, প্রতিবাদ জানাতে কালো ব্যান্ড পরা বা কালো পতাকা দেখানোর যে রেওয়াজ, সেখান থেকে ডিপি কালো করার ধারণা জন্মেছে। ফুটবল মাঠে এই ধরনের বিপ্লব হামেশাই দেখা যায়। রাষ্ট্র বা সমাজের কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হতে কালো ব্যাজ করে মাঠে নামেন খেলোয়াড়রা। আবার মাথায় কালো ব্যান্ড পরেও প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটার রেওয়াজ রয়েছে। সেইসঙ্গে কালো পোশাক, কালো পতাকা এইসবও জুড়ে যায়। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে শুরু হওয়া ডিপি কালো করার রেওয়াজও এই প্রচলিত বিক্ষোভের ধারণা থেকেই উঠে এসেছে বলে মনে করা যেতেই পারে।