দিনের আলোয় তেমন দেখাই যায় না। কিন্তু রাত বাড়লেই সব বেরিয়ে পড়ে দলে দলে। উদ্দেশ্য, মানুষ খোঁজা। আর খুঁজে পেলেই তার রক্ত খেয়ে পেট ভরানো। ভাবছেন তো কোনও ড্রাকুলার সিনেমার গল্প শোনাচ্ছি! আসুন তাহলে খুলেই বলা যাক।
প্রিয় খাদ্য রক্ত। বলা ভালো সেই খেয়েই বেঁচে থাকে এরা। দিনের আলোয় এদের তেমন ক্ষমতা নেই বললেই চলে। কিন্তু রাত বাড়লে! এদের রোখে কার সাধ্যি। মানুষের রক্ত পেলে তো কথাই নেই। এর থেকেই প্রিয় জিনিস আর নেই তাদের খাদ্য তালিকায়। তবে অন্যান্য পশুর রক্ত হলেও, পেট ভরানোর কাজটুকু চলতেই পারে।
আরও শুনুন: গ্রেভির মধ্যে লড়তে হবে কুস্তি, কোথায় এমন প্রতিযোগিতা হয় জানেন?
ড্রাকুলার সিনেমা কিংবা গল্পে এমন দৃশ্য অনেকেই দেখেছেন। কিন্তু বাস্তবেও যে এমনটা হতে পারে তা হয়তো অনেকেরই কল্পনার বাইরে। বাস্তবেও রয়েছে এমন কিছু প্রাণী যাদের প্রিয় খাদ্য রক্ত। নিশ্চয়ই ভাবছেন মশার কথা বলছি। হ্যাঁ, এই তালিকাও মশাও রয়েছে। তবে মশা যে শুধুমাত্র রাতে কামড়ায় এমনটা নয়। আর ওতটুকু শরীরে মশা পানও করে খুব সামান্যই রক্ত। কথা বলছি, আরও কিছু প্রাণীর সম্পর্কে যাদের মশার মতো সবসময় আশেপাশে দেখা যায় না। কিন্তু এদের সকলেরই প্রিয় খাদ্য রক্ত। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে টিক পোকা। বিশেষ এই পোকাটি রাতের বেলায় আক্রমণ করে। আকারে খুবই ছোট, তাই কামড়ালে বিশেষ লাগেও না। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীর থেকে বেশ কিছুটা রক্ত শুষে নিতে পারে এই পোকা। যদিও এদের মাধ্যমে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এরপর অবশ্যই বলতে হয় জোঁকের কথা। এরা টিক পোকার তুলনায় আকারে কিছুটা বড়। কিন্তু রক্ত চোষার দৌড়ে কোনও অংশে কম নয়। নিঃশব্দ ঘাতকের মতো এরা শরীরের যে কোনও অংশে আটকে যেতে পারে। তারপর সুক্ষ্ম কোরক দিয়ে শুষতে থাকে রক্ত। তালিকায় রয়েছে কিছু পাখিও। যাদের প্রিয় খাদ্য রক্ত। এক্ষেত্রে সবথেকে ভয়ঙ্কর ভ্যাম্পায়ার ফিঞ্চ। গালাপাগোস অঞ্চলের এই পাখি মূলত অন্যান্য পাখিদের রক্ত শোষে। এছাড়া আফ্রিকা অঞ্চলের কিছু পাখিও এমনভাবে রক্ত খেতে ওস্তাদ। এমন কিছু মাছও রয়েছে তালিকায়। বিশেষত ক্যানডিরু ভ্যাম্পায়ার নামে এক রক্তখেকো মাছের নাকি হবহু মানুষের মতো দাঁতও রয়েছে। ঠিক মাছ না হলেও , ল্যাম্প্রে নামে এক সামুদ্রিক প্রাণীও রক্ত চুষে খায়। এদের দেখতেও ভারী অদ্ভুত।
আরও শুনুন: আকাশে নয়, পাহাড়ের গায়েই ফোটে রামধনু! কোথায় দেখা মেলে ‘রেনবো ওয়াটারফলে’র
তবে তালিকায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে বাদুড়। যাকে কেন্দ্র করে ভ্যাম্পায়ার চরিত্রটার জন্ম। বাস্তবেও কিন্তু বাদুড় রক্ত চুষে খেতে ওস্তাদ। এরাও মূলত রাতেই প্রকাশ্যে আসে। কারণ দিনের আলোয় এদের কিছু দেখার ক্ষমতা থাকে না। যদিও সরাসরি মানুষকে আক্রমণ করে তার রক্ত চুষে নেওয়া সাধারণ বাদুড়ের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে অন্যান্য প্রাণীর দেহ থেকে হামেশাই রক্ত চুষে খায় বাদুড়। জীব জগতের এই অদ্ভুত বৈশিষ্টের প্রাণীগুলিকে কেন্দ্র করেই নানা ধরনের ভয়ের উপন্যাস লেখা হয়েছে। দেহের সব রক্ত শুষে নিলে কারও পক্ষে বাঁচা সম্ভব নয়, তাই সেই ভয়কে সামনে রেখে লেখা এইসব উপন্যাস পড়ে অনেকেই রীতিমতো ভয় পান। তবে বাস্তবেও যে এমন প্রাণীর দেখা পাওয়া সম্ভব, তা বলাই বাহুল্য।