লাখ লাখ টাকা খরচ করে গাড়ি কিনেছেন। কিন্তু সেই একই পরিমাণ টাকা যদি নম্বর প্লেট কিনতেও খরচ করতে হয়? অনেকেই হয়তো তেমনটা করতে চাইবেন না। কিন্তু এমনও কিছু মানুষ রয়েছেন যারা লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন স্রেফ নম্বর প্লেটের জন্য। কেন জানেন? আসুন শুনে নিই।
গাড়ির যা দাম, নাম্বার প্লেটের দাম প্রায় তার সমান। কিংবা নম্বর প্লেটের জন্য যা খরচ হয়েছে সেই টাকায় অনায়াসে আরেকটা গাড়ি কেনা সম্ভব। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। প্রায় ৩৪ লক্ষ টাক খরচ করে স্রেফ গাড়ির নাম্বার প্লেট কেনার মতো ঘটনা ঘটেছে এই দেশেই। তালিকায় রয়েছে আরও অনেক লাখ টাকা দামের নম্বর প্লেট।
আরও শুনুন: ২৬ বছর বয়সেই ২২ সন্তানের মা, শতপুত্রের জননী হতে চান মহিলা
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এর কারণ কী?
এক কথায় বলতে গেলে, শখ মেটানো। গাড়ির নম্বর প্লেটের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করার আসল কারণ, নিজের পছন্দের নম্বর গাড়ির প্লেটে রাখা। কিছুক্ষেত্রে তা জনপ্রিয় সিনে চরিত্রের গাড়ির নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে হতে পারে, আবার কিছুক্ষেত্রে তা হতে পারে লাকি নম্বর। যেভাবেই হোক সেই নম্বরের বিন্যাস রাখতে হবে নিজের গাড়ির নম্বর প্লেটে। তার জন্য যতই খরচ হোক না কেন, তার পরোয়া নেই। আসলে গাড়ি কেনার পর দু-ভাবে তার নম্বর প্লেট পাওয়া যায়। এক, নির্দিষ্ট দপ্তর থেকে পাঠানো কয়েকটি নম্বরের মধ্যে থেকে একটি বেছে নেওয়া। এর জন্য আলাদা করে কোনও খরচ করতে হয় না। তবে আরও এক উপায়ে গাড়ির নম্বর প্লেট বাছাই করা যায়। সেক্ষেত্রে নিজের পছন্দসই নম্বরটাই নেওয়া যেতে পারে। তবে এখানে সমস্যা অন্য জায়গায়। ওই একই নম্বর আরও অনেকের পছন্দ হতে পারে। তাই সবার মধ্যে কার কপালে সেই নম্বর জুটবে, তা ঠিক হয় নিলামের মাধ্যমে। এর জন্য পছন্দের নম্বরটি বেছে কিছু টাকা দিয়ে আগেভাগে বুকিং সেরে নিতে হয়। তারপর নিলামে ওই প্লেটের দাম যা খুশি উঠতে পারে। কিন্তু তাই বলে একটা নম্বর প্লেটের দাম ৩৪ লাখ টাকা হবে! শুনতে অবাক লাগলেও, আহমেদাবাদের এক ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছিল। প্রিয় চরিত্র জেমস বন্ডের গাড়ির নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে তিনিও চেয়েছিলেন, ০০৭ এই নম্বরটা থাকুক তাঁর গাড়িতেও। কিন্তু ওই একই নাম্বার আরও অনেকের পছন্দ হওয়ায় প্লেটটি নিলামে ওঠে। আর সেখানে শেষ পর্যন্ত এর দাম ওঠে ৩৪ লক্ষ। আর তা কিনেও নেন ওই ব্যবসায়ী। একইভাবে ৩১ লক্ষ টাকা দিয়ে নিজের পছন্দের ০১ নম্বর ওয়ালা প্লেট কিনেছিলেন কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা কেএস বালগোপাল। পেশায় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক এই ব্যক্তি, এক কোটি টাকা খরচ করে নিজের জন্য একটি স্পোর্টস কার কেনেন। যার নম্বর প্লেটের জন্য তাঁকে খরচ করতে হয় ৩১ লক্ষ টাকা। একবার নয়, এর আগেও তিনি নিজের গাড়িতে পছন্দের ০১ নম্বরটি রাখার জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন।
আরও শুনুন: ঘুম থেকে দেরিতে ওঠার শাস্তি, ১২ জন পড়ুয়াকে গরম চামচের ছ্যাঁকা দিল স্কুল
তালিকা এখানেই শেষ নয়। চণ্ডীগড়ের টায়ার প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক জগজিৎ সিংহ চহালও এই একইভাবে খরচ করেছেন লাখ লাখ টাকা। সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাঁর গ্যারাজে যত গাড়ি, বাইক রয়েছে সবগুলোর ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট ০০১ নম্বরটি রেখেছেন তিনি। সেখানে ১৭ লক্ষ টাকা অবধি খরচ করেছেন তিনি। এছাড়া, ওই একই নাম্বার গাড়ির প্লেটে রাখার জন্য ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করেন রাহুল তানেজা। সেই সময় এই কাজের জন্য রীতিমতো চর্চায় উঠে এসেছিল তাঁর নাম। এমনকি এত টাকা দিয়ে নাম্বার প্লেট কেনার দলে রয়েছে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানিও। তিনিও পছন্দের নাম্বার প্লেট পেটে খরচ করেছেন ১২ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি শাহরুখ খানও নাম লিখিয়েছেন এই দলে। তাঁর ক্ষেত্রে অবশ্য লাখ টাকা খরচ হয়নি। ৭০ হাজার টাকা দিয়ে সাধের রোলস রয়েস গাড়িতে ৫৫৫ নম্বরের প্লেট লাগিয়েছেন বাদশাহ্। কিন্তু বলাই বাহুল্য, যে পরিমাণ টাকা খরচ করে এঁরা নাম্বার প্লেট কিনেছেন সেই টাকায় অনায়াসে আরও একটা গাড়ি হয়ে যায়। সাধারণ মানের হলে তো কয়েকটা গাড়ি হয়ে যেতে পারে ওই টাকায়। তাই এই অদ্ভুত শখ বেজায় অবাক করেছে অনেককেই।