কামড়ায় না। আঁচড়ও কাটে না। অথচ গোরুর আক্রমণে প্রাণ হারান অনেকেই। হিসাব বলছে, বছরে অন্তত ৪০০০ বার আক্রমণ করে গোরুর দল। তবে ভারতীয় গোরুর এমন স্বভাব নয়। তাহলে? কোন দেশের গোরু এমন হিংস্র? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সাধ করে বাছুর পুষেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আদূরে পোষ্যের নাম রেখেছেন দীপজ্যোতি। সোশাল মিডিয়ায় তার ছবিও প্রকাশ করেছেন মোদি। শান্ত স্বভাবের নিরীহ প্রাণীটির ছবি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে নেটদুনিয়ায়। তবে গোরু মানেই যে শান্ত-নিরীহ হবে, এমন কোনও কথা নেই। অন্তত আমেরিকার গোরু হলে তো মোটেও নিরীহ শব্দটি যায় না।
ভারতে গোরুকে মাতৃরূপেই দেখা হয়। অনেকেই গোমাতা হিসেবে পুজো করেন। গোমূত্র-গোবর এইসব অতি পবিত্র মনে করেন তাঁরা। তবে অন্যান্য জায়গায় গোরুকে মোটেও এতটা শ্রদ্ধার জায়গায় রাখা হয় না। মুসলিম প্রধান দেশে গোমাংস খাওয়ার চল রয়েছে। শিকাগোর মতো মার্কিন শহরেও এ জিনিস বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া গোরুর দুধ বা সেই দুধ দিয়ে তৈরি জিনিসের রীতিমতো চাহিদা রয়েছে। তবে বাইরের গোরুর থেকে দুধ আদায় করা মোটেও সহজ কাজ নয়। কারণ সেখানকার গোরু মোটেও শান্ত বা নিরীহ নয়। বিশেষ করে ব্রিটেনে। জানা গিয়েছে, প্রতি বছর সে দেশে গোরুর আক্রমনে আহত হন হাজার হাজার মানুষ। তার মধ্যেও মারাও যান অনেকে। এইসব কারণে ব্রিটেনে গোরুকে সবথেকে হিংস্র জন্তুর তকমা দেওয়া হয়েছে। হিসাব বলছে, ২০১৮ থেকে ২২ সালের মধ্যে, সে দেশে গোরুর আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩০ জন। কোনও একটি গোরু নয়, আক্রমনের দায় একদল গোরুর। এরা দলবদ্ধ ভাবে আক্রমণ করে বলেই অভিযোগ ব্রিটেনবাসীর। কখনও শিং-এর গুঁতো, কখনও আবার মাড়িয়ে চলে যাওয়া, কিছুই বাদ দেয় না গোরুর দল। সবমিলিয়ে সে দেশের মানুষের কাছে গোরু এক বিভীষিকার সমান।
তবে সব গোরু নয়। ব্রিটেনে এক বিশেষ প্রজাতির গোরুই এমনটা করে থাকে বলে অভিযোগ। স্থানীয় ভাষায় এদের ‘কিলার কাউ’ বলা হয়। ভারতীয় গোরুর তুলনায় এদের দেখতেও বেশ অন্যরকম। গায়ে লোম বেশি। সেই তুলনায় শিং নেই। কিন্তু চেহারায় বেশ বড়সর। দেখলেই বোঝা যায়, এই গোরু একবার কারও গায়ে চাপলে রক্ষা নেই। যদি একপাল গোরু হয়, তাহলে তো কথাই নেই। এমনিতে গোরু শান্ত প্রাণী হিসেবেই পরিচিত। তবে কোনও কারণে চটে গেলে আক্রমণ করতে ভোলে না। এই স্বভাবই ব্রিটেনের গোরুর মধ্যে প্রবল। কারণে অকারনে কাউকে গুঁতিয়ে দিতে এদের জুড়ি মেলা ভার। সামনে থাকা ব্যক্তি যদি শীর্ণকায় হন তাহলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হতে পারে। অন্তত শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা হাড় ভাঙতে বাধ্য। গোরু আক্রমনের এই বহর দেখে সে দেশের সরকারও নতুন আইন আনার কথা ভেবেছে। কীভাবে গোরুকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সেই ভাবনাতেই রাতে ঘুম উড়েছে সে দেশের প্রশাসনের।