বার্বি ডল আর তার পুরুষ সঙ্গী কেন ডল-এর জুটিকে চেনে সারা পৃথিবী। কিন্তু কেবল পুতুলের দুনিয়াতেই নয়, বাস্তবেও রয়েছে এই কেন পুতুলরা। যাঁরা আসলে মানুষ, কিন্তু কেন ডলের আদলেই নিজেকে চেহারাকে অদলবদল করে ফেলেছেন তাঁরা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক সেইসব হিউম্যান কেন ডলের কথা।
বিশ্বজোড়া খুদেরা যেমন বার্বি ডলকে চেনে, তেমনই তার প্রেমিক কেন ডল-ও পুতুলপ্রেমীদের কাছে অপরিচিত নয়। কেবল ছোটরাই নয়, বড় হয়েও তাদের প্রতি ভালবাসা কমেনি অনেকেরই। কিন্তু এই ভালবাসা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে যে কী হতে পারে, তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ হিউম্যান কেন ডল। একজন নয়, তিন-তিনজন ব্যক্তির খোঁজ মেলে, যাঁরা কেন ডলের চেহারার এতটাই ভক্ত যে সেই আদলেই নিজেদের চেহারাকে বদলে ফেলেছেন। তাঁদের দেখলে ভুল করেও মানুষ বলে ভুল হবে না কারোরই। একের পর এক প্লাস্টিক সার্জারি এবং আরও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার করে নিজেদের পুতুলের রূপ দিয়েছেন এই ব্যক্তিরা।
আরও শুনুন: জন্ম ব্রাজিলে, তবু মেসির জন্যই নগ্ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এই মডেল
যেমন ধরা যাক রডরিগো অ্যালভেস-এর কথাই। নিজের শরীরটা পালটে ফেলতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০টি প্লাস্টিক সার্জারি এবং ১০৩টির বেশি কসমেটিক পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এই মডেল। এমনকি সরু কোমর পাওয়ার জন্য পাঁজরের চারটি হাড় পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে বাদ দিয়েছেন তিনি। উপরন্তু ২০২০ সালে নিজেকে রূপান্তরকামী বলে ঘোষণা করেন রডরিগো। জানান, কেন ডল নয়, বার্বি ডল হতে চান তিনি। আর সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই প্রায় ১৫ লক্ষ ডলার ব্যয় করে পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন রডরিগো। নতুন নাম নিয়েছেন জেসিকা।
একইভাবে নিজের চেহারা বদলেছেন জাস্টিন জেডলিকা। ১৮ বছর বয়সে নিজের নাকের আকৃতি ঠিক করার জন্য তিনি প্রথমবার প্লাস্টিক সার্জারির দ্বারস্থ হন। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৯০ বার নিজের শরীরে অস্ত্রোপচার চালিয়েছেন তিনি। তিনি বিয়েও করেছিলেন পিক্সি ফক্সকে, যে মহিলাকে হিউম্যান বার্বি ডল বলা হয়। কিন্তু বাস্তব জীবনের এই বার্বি আর কেনের জুটি চিরস্থায়ী হয়নি। পিক্সি প্লাস্টিক সার্জারির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত, এই অভিযোগ তুলে সম্পর্কে ইতি টানেন জাস্টিন।
আরও শুনুন: রোল পেতে চাইলে করতে হবে ‘ফোন সেক্স’! রাধিকা আপ্তে-কে নির্দেশ পরিচালকের
সেলসো সানটেবেন্স-কে ছোটবেলায় সকলে বলতেন, তাঁকে দেখতে নাকি পুতুলের মতো। আর সেখান থেকেই মেলে অনুপ্রেরণা। ১৬ বছর বয়সে মডেলিং প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার পর থেকেই তিনি প্লাস্টিক সার্জারির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। কেন ডলের আদলে নিজেকে পালটে ফেলেছিলেন তিনি। একইরকম টানা ভ্রূ, নীল চোখ, গোলাপি ঠোঁট, এমনকি চুলের কায়দাও ছিল কেন ডলের মতোই। কিন্তু ক্যান্সারের আক্রমণে মাত্র ২০ বছর বয়সেই মারা যান এই হিউম্যান কেন ডল।
দেখা যায়, এই হিউম্যান কেন ডলেরা প্রত্যেকেই বডি ডিসমরফিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। অর্থাৎ নিজেদের শরীরে অজস্র খুঁত আছে বলেই সবসময় মনে করতেন তাঁরা। আর সেখানে কেন ডলের মধ্যেই তাঁরা পুরুষের আদর্শ চেহারা খুঁজে পেয়েছিলেন। সেই কারণেই নিজেদের শরীরকে পুতুলের মতো করে গড়ে তুলেছেন এই ব্যক্তিরা।