প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেও গুনতে হবে ট্যাক্স! এমনই নিয়ম আনতে চলেছে হিমাচল প্রদেশের সরকার। প্রশাসনের নির্দেশ, বাড়িতে থাকা প্রতি টয়লেট পিছু নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা কর হিসেবে জমা দিতে হবে। কত টাকা জমা করতে হবে কর হিসেবে? নেপথ্যে কারণটাই বা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাইরে সুলভ শৌচালয় ব্যবহার করলে টাকা দিতে হয়। তা অবশ্য কর নয়। ব্যবহারের মাশুল মাত্র। এদিকে বাড়িতে শৌচালয় ব্যবহারের জন্য দিতে হচ্ছে কর। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিমাচল প্রদেশের সরকার। এর আগে পানীয় জলের জন্য কর চালু করেছিল সে রাজ্যের প্রশাসন। কিন্তু শৌচাগারের জন্য কর দেওয়ার নিয়ম, দেশের আর কোথাও নেই।
প্রকৃতির ডাক উপেক্ষা করা অসম্ভব। কিন্তু পকেটে টাকা না থাকলে এমনটা করতে হতেই পারে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। হিমাচল প্রদেশের সরকারি নিয়ম, এবার থেকে টয়লেট ব্যবহারের জন্য দিতে হবে কর। অঙ্কটা তেমন আহামরি নয়। বাড়ির প্রতি টয়লেট পিছু ২৫ টাকা মাত্র। কিন্তু এমনটা কেন দিতে হবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এই মুহূর্তে পাহাড়ি রাজ্যের শাসকদল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং নানা প্রসঙ্গে চর্চায় থাকেন। সম্প্রতি সে তালিকায় যোগ হয়েছে ‘টয়লেট ট্যাক্স’। বিরোধীরা তো বটেই, সেখানকার সাধারণ মানুষও সরকারের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন। কেন বাড়ির ভিতরে থাকা শৌচাগারের জন্য কর দিতে হবে, তা জানতে চাইছেন সকলেই। জানা গিয়েছে, করের হিসাব হবে প্রতি মাসে। অর্থাৎ পানীয় জলের ট্যাক্সের মতো শৌচাগারের জন্য কর দিতে হবে পাহাড়ের বাসিন্দাদের। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণও। প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছতা অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে বিঁধেছেন তিনি। বিতর্কে পালটা জবাব দিয়েছে কংগ্রেসও।
প্রথমেই সে রাজ্যের জল বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, এমন কোনও করের কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি। তবে বিষয়টা যে ভুয়ো, এমনটাও বলা হয়নি রাজ্যের তরফে। স্রেফ ব্যাখ্যা হিসেবে আলাদা যুক্তি খাড়া করেছে রাজ্য প্রশাসন। দাবি, অতিরিক্ত জলের খরচ কমাতেই এমনটা ভাবা হয়েছে। পানীয় জলে কর বসানোয় জলের অপচয় কমানো গিয়েছে। কিন্তু শৌচের জন্যও অনেকে অতিরিক্ত জল ব্যবহার করেন। এবার ট্যাক্স চালু হলে সেটাও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে বলেই দাবি হিমাচল সরকারের। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আর্থিক সংকট মেটাতেই এমন নয়া করের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিমাচলের কংগ্রেস সরকার। এই মুহূর্তে সে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। চেষ্টা করেও তা ঠিক করা যাচ্ছে না। তাই জনগণের উপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। পানীয় জলের সঙ্গে যদি শৌচের জন্য কর নেওয়া যায়, তাহলে আখেরে লাভ সরকারের। তবে সঠিক ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। তাই কটাক্ষ করলেও বিরোধীরা প্রতিবাদী পদক্ষেপ করেননি।