সিভিল সার্ভিস কোচিং। এক্কেবারে বিনামূল্যে। তাও আবার কুম্ভমেলায়। অবাক হবেন না, কারণ চমক এখানেই শেষ নয়। ওই কোচিং-এর দায়িত্ব নিয়েছেন মেলায় আগত এক সাধু। তিনিই সকলকে শেখাচ্ছেন অঙ্ক-বিজ্ঞান-ইতিহাস। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
স্রেফ পুণ্য নয়, কুম্ভমেলায় মিলবে বিনামূল্যে সিভিল সার্ভিসের কোচিংও। দায়িত্বে গেরুয়াধারী এক সাধু। নাগা সাধুদের মতো তাঁকে ঘিরেও রয়েছেন অনেকেই। তবে এই ভিড়ে শুধু ভক্ত নয়, রয়েছেন পরীক্ষার্থীরাও। উদ্দেশ্য, সাধুর কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ নেওয়া, যা সিভিল সার্ভিসের মতো কঠিন পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হতে সাহায্য করবে।
দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা এই সিভিল সার্ভিস। একবারে উর্ত্তীর্ণ হওয়া মোটেও সহজ নয়। কেউ কেউ পারেন, তবে বেশিরভাগেরই সময় লাগে অন্তত কয়েক বছর। এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরী সঠিক গাইডেন্স। যার জন্য প্রয়োজন ভালো শিক্ষক, কোচিং সেন্টার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেই ব্যবস্থাও রয়েছে একাধিক। তবে বিনামূল্যে খুবই কম। অনেকেই মনে করেন বিনামূল্যের কোচিং-এ তেমন ভালো শিক্ষা মেলে না। ব্যতিক্রম ‘চা-ওয়ালা বাবা’। বর্তমান ঠিকানা কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণ। সেখানেই বিনামূল্যে সিভিল সার্ভিস কোচিং করাচ্ছেন ইনি। কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে এমনটা করেন, তা ঠিকমতো জানে না কেউ, তবে তাঁর পরামর্শ মেনে চলেন অনেকেই। কেউ কেউ ৫-৬ বছর ধরে ওই সাধুর কাছে কোচিং করছেন। ইনি মুখে কিছু বলেন না। সবসময় মৌন থাকেন। যা কিছু প্রয়োজন তা বোঝাতে হয় লিখে, সাধু উত্তরও দেন সেইভাবেই। খাতায় লিখে লিখে ছাত্রদের পড়া বোঝান। সেই উত্তর নোটস হিসেবে সবাই নিয়ে যায়। এমনকি সোশাল মিডিয়াতেও ইনি ভক্তদের নোটস দিয়ে থাকেন। এই বছর প্রথম নয়, প্রায় ৪০ বছর ধরে এমনটা করে চলেছেন ওই সাধু।
কিন্তু তাঁর নাম কেন চা-ওয়ালা?
নেপথ্যে রয়েছে অদ্ভুত এক ব্যাখ্যা। আপাততভাবে মনে হতে পারে ইনি কোনও এককালে চা বিক্রেতা ছিলেন। হালে সাধু হয়েছেন, একইসঙ্গে কোচিং করান। কিন্তু না, চা বিক্রির সঙ্গে এঁর যোগ নেই। বরং চা পানে ইনি বিশেষজ্ঞ। আসলে, সারাদিন স্রেফ চা পান করেই কাটিয়ে দেন এই সাধু। দিনে অন্তত ১০ কাপ। আর কিছু খান না বললেই চলে। তাও আবার কাপে করে সাহেবি কায়দায় নয়, বাটি করে চা খান ইনি। তাই ভক্তদের কাছে এঁর পরিচয় ‘চা-ওয়ালা বাবা’ হিসেবেই। কুম্ভমেলায় অন্য অনেকের মতো নজর কেড়েছেন এই সাধুও। তাই তাঁকে নিয়েও চলছে চর্চা।