জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে। প্রচলিত প্রবাদ। তবে অক্ষরে অক্ষরে সত্য। কে, কখন, কীভাবে মারা যাবে তা আগে থেকে বলে দিতে পারে না কেউ। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নাকি সে ক্ষমতা রয়েছে। সম্প্রতি এমনই এক ডেথ ক্লক নিয়ে বেজায় হইচই শুরু হয়েছে। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জানাতে হবে সামান্য কিছু তথ্য। ওজন, উচ্চতা, জন্মতারিখ, জীবনযাপনের ধরন এইসবই। আর তাতেই জানা যাবে মৃত্যুর তারিখ। এমনকি সম্ভাব্য কারনও। আর এই সবটাই করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সম্প্রতি এমনই এক AI ওয়েবসাইট, তথা ডেথ ক্লক নিয়ে রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়েছে।
ঠিক কীভাবে কাজ করে এই ডেথ ক্লক?
:আরও শুনুন:
স্বর্গ আদৌ আছে? ‘১১ মিনিটের মৃত্যু’ থেকে ফিরে মহিলা জানালেন, দিব্যি আছে
একেবারেই সাধারণ একটি ওয়েবসাইট। খুললেই দেখা মিলবে যমরাজের! থুড়ি যমের মতো দেখতে একটা কার্টুনের। পাশেই লেখা, ডেথ ক্লক। সেইসঙ্গে উল্লেখ করা, এখনও অবধি কতজনের মৃত্যু গণনা করা হয়েছে এখানে। সেই সংখ্যাটা অন্তত কয়েক কোটি। এর নীচেই পরপর কয়েকটি প্রশ্ন। তার সঙ্গে উত্তর দেওয়ার জায়গাও রয়েছে। সাধারণ, সহজ প্রশ্ন। এই যেমন জন্মতারিখ, ওজন, উচ্চতা, ধূমপানের অভ্যাস আছে কি না, মদ্যপান করা হলে মাসে কতবার এইসবই। কোন দেশের মানুষ, সেই তথ্যও জানতে চাইবে ডেথ ক্লক। এছাড়া, প্রশ্ন রয়েছে জীবনযাপনের ধরণ নিয়েও। ব্যায়ামের অভ্যাস আছে কি না, থাকলেও তা সপ্তাহে কতবার, ডায়েটে কী ধরনের খাবার থাকে, এইসবও জানতে চাইবে ওই ওয়েবসাইট। তবে কোনও নাম বা প্রমান দিতে হবে না। অর্থাৎ কেউ যদি ইচ্ছা করে ভুল তথ্য দেয়, তাহলেও অসুবিধার কিছু নেই। এইসব তথ্য লিখে নীচের দিকে থাকা সাবমিট অংশে ক্লিক করলেই, খুলে যাবে নতুন পেজ। সামনে ভেসে উঠবে একটি তারিখ। ডেথ ক্লকের দাবি, ওটিই আপনার মৃত্যুর দিন। কায়দা করে সমাধি ফলকে সেই তারিখ লেখা থাকবে। তার নিচে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণও দেওয়া থাকবে। কারও ক্ষেত্রে ক্যানসার, কারও আবার হার্টের সমস্যা মৃত্যুর কারণ। এমনটাই স্পষ্ট লেখা থাকবে ওই জায়গায়। এখানেই শেষ নয়, তারিখের পাশে কাউন্টডাউন হতে দেখা যাবে। এ হল মৃত্যুর সময় কতটা এগিয়ে আসছে সেই গণনা। এইসব দেখে একবার হলেও বুক দুরুদুরু হতে বাধ্য। তবে পরক্ষণেই ভয়টা কেটে যেতে পারে। কারণ, এই বিষয়টা যে সম্পূর্ণ মজার ছলে লেখা, সেও উল্লেখ করা আছে ওই ওয়েবসাইটেই।
:আরও শুনুন:
মৃত্যুর পরেও বেঁচে উঠবেন ফের! কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে দেহ সংরক্ষণের ভিড়, কী এই পদ্ধতি?
যদিও, বিষয়টা একেবারে ভুয়ো নয়। কারণ মৃত্যুর কারণ হিসেবে যা লেখা থাকবে, মোটের উপর তা অনুমেয়। এই যেমন, কেউ প্রতিদিন মদ্যপান করেন, নিয়মিত ধূমপানের অভ্যাস আছে, আবার ব্যায়াম করেন না, ডায়েটের ঠিক থাকে না, এমন ব্যক্তির মৃতুর কারণ হিসেবে ক্যানসারের কথা লিখবে ডেথ ক্লক। বেশ কয়েকজনের ক্ষেত্রে প্রায় একইরকম তথ্য দিয়ে পরীক্ষা করলেই এমনটা দেখা যাবে। আবার ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস নেই এমন কারও ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হিসাবে দেখানো হচ্ছে হার্টের সমস্যা। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, নিয়মিত সুরাপানে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সেই তথ্য ধরেই মৃত্যুর কারণ সহজে হিসাব করে ওই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওয়েবসাইট। তবে ওজন নিয়ে বিশেষ সতর্কতা দেখানোর ইঙ্গিত রয়েছে এই ডেথ ক্লকে। অর্থাৎ যারা ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের আয়ু যে খুব বেশি নয়, তা সাফ জানিয়ে দিচ্ছে ডেথ ক্লক। আদতে, এই ডেথ ক্লকের ভবিষ্যৎবাণী কতটা সত্যি হতে পারে, তা তর্কের বিষয়। তবে এর মাধ্যমে মৃত্যুর তারিখ দেখে অনেকেই যে জীবনযাপন নিয়ে সচেতন হবেন তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি এখানে লেখাই আছে, বিষয়টা মজার ছলে তৈরি। সুতরাং মৃত্যুর তারিখ জেনে সেটাকেই ধ্র্যবসত্য ভেবে নেওয়ার কিছু নেই। তাই নতুন এই ডেথ ক্লক নিয়ে রীতিমতো চর্চায় মেতেছে নেটদুনিয়া।